নেট—তরুণ
ডা.সুরাইয়া হেলেন
‘ব্রোথেল হোমগুলো ঢাকার কোথায় জানো কি তুমি?’
ছোটবেলায় পুরনো ঢাকার টিপু সুলতান রোডের
কাছের কোন এক গলিতে ঢুকে পড়েই
অস্বাভাবিকতা ধরা পড়েছিল একটি ছেলের চোখে !
সে দৃশ্য আজো ভাসে—
দরজায় দরজায় লাল ঠোঁট আর গাল-পালিশ লাগানো
লাশের মতো সাদা পাউডার মাখা মৃতদেহগুলো
ভূত-পেত্নীর মতো দন্তবিকশিত করে হিঁহিঁহিঁ হাসছিলো,
ভয় পেয়ে ছেলেটি দৌড় দিয়েছিলো—
ছেলেটি এখন বারিধারায় ।পুরনো ঢাকা অরনক দূর !
গুলশান বনানীতে খোঁজ করছে হন্যে হয়ে,
এক বন্ধু জানালো,ডি.ও.এইচ.এস-এর এক
সম্ভ্রান্ত বাড়িতে ঐ রকম এক হোম বানিয়েছে
মস্ত নামী-দামী এক সমাজ সেবিকা !
মফস্বলের মেয়েদের দাসীবৃত্তি,স্বামী-পিতার নির্যৃাতন;
গ্রাম্য-মোড়ল আর যৌন অত্যাচার থেকে বাঁচিয়ে
ঠাঁই দিয়েছে প্রাসাদোপম বাড়িতে ।
বিদেশি কসমেটিকস ফ্যাশনেবল ড্রেসে পাল্টে ফেলেছে
গ্রাম্যতা—স্পোকেন ইংলিশে হাই হ্যালো,
বাংলাভাষার জড়তা গেছে কেটে,
মোবাইল ফোন হাতে আর কানে…হ্যালো—
ভার্সিটির মেধাবী উচ্চাভিলাষী মফস্বল বালিকাও
যোগাযোগ রাখে ঐ আন্টির সাথে,
সময়ে অসময়ে,প্রয়োজনে,মানিব্যাগের টানাটানিতে
নতুন শাড়ি ড্রেসে শহুরে বান্ধবীর সাথে পাল্লা দিতে
মোবাইল কলে চলে আসে—এদের মূল্য একটু বেশি !
কলেজ অথবা ভার্সিটি গার্ল--ভার্জিন,কুমারীত্ব,হাসালে !
বস্তাপচা বুলি,--সতীত্ব হারানো স্মার্টনেসের নমুনা,
তা নয় তো জাতে ওঠা যাবে না—
ওপর মহলে আনাগোনা—মেয়েটি বলছিলো—
বন্ধুর জ্ঞান দেখে ছেলেটি উত্তেজিত !
‘এ্যাড্রেসটা এখুনি দে দোস্ত—
যা জোস্ খবর এনেছিস !’
মধ্যবিত্ত বন্ধুর মুখ শুকনো,‘না না,
খারাপ রোগ এইডস,সিফিলিস-গণোরিয়া—’
‘মিডিয়া শিখিয়ে দিয়েছে সুরক্ষা পদ্ধতি—
নিশ্চিন্ত নানা ব্রান্ডের নাম কে না জানে !’
‘তবু কিন্তু থেকে যায়—মুখের লালা,দংশন—’
‘হা হা হা;এত চিন্তার কী আছে?
আগে উপভোগ পরে—কী রে,কী বলিস?
এই হ্যাঁ,হ্যালো হ্যালো—’
ছেলেটির মা তার ব্যস্ত ডাক্তার স্বামী আর
ছোট্ট শিশুটিকে ছেড়ে চলে গেছে
আমেরিকা-প্রবাসী এক উচ্চবিত্তের হাত ধরে!
বারিধারার ট্রিপ্লেক্স প্রাসাদোপম বাড়ির
নিরালা নিজ রুমে শুয়ে ছেলেটি নেটে চ্যাট করে
গভীর হতাশায় ডুবে গিয়ে বলে,
‘জানো আমার জীবন দীপু নাম্বার টু-এর মত !’
ছেলেটি একটি প্রাইভেট ভার্সিটির বি.বি.এর ছাত্র
আই..ডি.—orion_33bd, নাম অনিরুদ্ধ,সে বলেছিলো---
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।