‘মদীনা সনদ’-এর ২৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী ‘ইহুদী-মুসলমানকে এক জাতি’ বলে বিচারক গোলাম রাব্বানী চরম প্রতারণা ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। শেষ স্তরের অজ্ঞতাও জাহির করেছে। সে এক্ষেত্রে ইংরেজি believers শব্দের প্রবঞ্চনা ও প্রতারণাপূর্ণ অর্থ করেছে। believers শব্দ দিয়েই মুসলমান ও ইহুদী সম্প্রদায়কে এক করে দেখিয়েছে। অথচ believers শব্দটা এখানে আহলে কিতাবদেরকে বোঝানো হয়েছে মুসলমানদেরকে নয়।
বিচারপতি রাব্বানী বর্ণনার ক্ষেত্রে উইকিপিডিয়ার বর্ণনা গ্রহণ করেছে। কিন' অন্যান্য কিতাবে এই বর্ণনা নেই। তবে উইকিপিডিয়ায় মদীনা সনদের প্রথমেও যা বলা হয়েছে তা দ্বারাও প্রতিভাত হয় যে, মুসলমান ও ইহুদী আলাদা জাতি। যেমন সনদের ভূমিকায় বলা হয়েছে, In the name of Allah, the compassionate Rahman. This is a writing of Muhammad, the prophet, between the believers and the Muslims of Quraysh and Yathreb.
এই অনুচ্ছেদে স্পষ্টতই believers এবং মুসলমানকে আলাদা এবং দুটো পক্ষ বা জাতি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন' বিচারপতি রাব্বানী এ বর্ণনা এড়িয়ে তার প্রতারণার স্বার্থে The Jews of the Banu `Awf are one community with the believers. এই লাইনকে গ্রহণ করে মুসলমান ও ইহুদীকে এক জাতিভুক্ত বেঝানোর মত মহামিথ্যাচার ও চরম প্রবঞ্চনা করেছে।
মূলত এই অনুচ্ছেদে সেটা বলা হয়েছিল যে, মুসলমান, ইহুদী ও খ্রিস্টানদের মাঝে যদি কেউ কোন অপরাধ করে তবে সেটা তার ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এজন্য পুরো সম্প্রদায়কে দায়ী করা যাবে না।
আরো উল্লেখ্য, উইকিপিডিয়ার বর্ণনাই একমাত্র বিশ্বস্ত নয়। আবার উইকিপিডিয়াই এক বর্ণনায় ৪৭টি এবং অপর বর্ণনায় ৫৭টি সনদের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। কাজেই বিচারপতি রাব্বানী ২৫তম ধারা বলে যা বর্ণনা করেছে তার সার্বজনীন কোন ভিত্তি নেই।
মুসলমান ও ইহুদী এক উম্মাহ নয়; কারণ কুরআন শরীফ-এ বিধর্মীদের দুটো ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
এক. আহলে কিতাব। অর্থাৎ যাদের উপর কিতাব নাযিল হয়েছে তারা কিতাব বিকৃত করে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মানেনি। এদেরকে কুরআন শরীফ-এর ভাষায় আহলে কিতাব বলা হয়। দুই. যারা আহলে কিতাব নয় তারা। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলে কিতাব প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, “অধিকাংশ আহলে কিতাব (ইহুদী-নাছারা) মুসলমানদের প্রতি হিংসার কারণে চায়- তোমরা ঈমান আনার পর তোমাদেরকে কোনো রকমে কাফির বানিয়ে দিতে।
”
কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফ-এ স্পষ্টভাবে ইহুদী, খ্রিস্টানদেরকে মুসলমানদের শত্রু বলা হয়েছে। তাদের থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। তাদের সাথে মিল রাখাকে জাহান্নামী হওয়ার কারণ বলা হয়েছে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা ইহুদী-নাছারাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না তারা একজন আরেক জনের বন্ধু, যারা তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে তারা তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে। ’
আর ‘সূরা মায়িদায়’ ইহুদীদেরকে মুসলমানদের স্পষ্টভাবে সবচেয়ে বড় শত্রু চিহ্নিত করে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদী অতঃপর মুশরিকদেরকে।
’
এভাবে স্পষ্ট বর্ণনা থাকার পরও বিচারক গোলাম রাব্বানী ইহুদীদেরকে মুসলমানদের সাথে এক উম্মাহ বলে কুরআন শরীফ-এর চরম অবমাননা করেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।