বিচারকরা একের পর এক শয়তানি শুরু করেছে। এখন রাষ্ট্রধর্ম নিয়ে টানাটানি। এবার বিচারক গোলাম রব্বানী ওরফে গোলাম ই্হুদী পাগল হয়ে গেছে। 'পাগল ছাড়া কেউ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার কথা বলতে পারে না’- বিচারক গোলাম রাব্বানীর একথায় প্রতিভাত হয়, সে নিজেই পাগল ছিলো। ‘মদীনা সনদ’-এর ২৫ নম্বর ধারার নামে ‘মুসলমান ও ইহুদীরা এক জাতি’ বলে গোলাম রাব্বানী যা বলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার ও গভীর প্রতারণা।
কুরআন শরীফ-এ ‘সূরা মায়িদা’-এর ৮২ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইহুদীদের মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু বলা হয়েছে। এছাড়াও অনেক আয়াত শরীফ-এই ইহুদী, খ্রিস্টান, পৌত্তলিকদেরকে মুসলমানদের শত্রু বলা হয়েছে এবং তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখলে জাহান্নামী হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কাজেই ‘ইহুদী ও মুসলমান এক উম্মাহ’ একথা বলে বিচারক গোলাম রাব্বানী কুরআন শরীফ-এর চরম অবমাননা করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত দিয়েছে। এজন্য প্রায় ৯৬ ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠীর কাছে তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা ‘কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোন আইন পাস হবে না’- এই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির সরকারকেই নিতে হবে।
তথাকথিত বিচারক গোলাম রাব্বানী নিজের কথা দ্বারা নিজেই বড় পাগল সাব্যস্ত হয়েছে এবং সে বর্তমান সরকারকেও পাগল প্রতিপন্ন করেছে।
সে বলেছে, ‘পাগল ছাড়া কেউ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার কথা বলতে পারে না। ’ অথচ বিচারক হিসেবে সে যে সংবিধান সমুন্নত ও সংরক্ষণ এবং পালনের শপথ গ্রহণ করেছিলো; সে সংবিধানের ২(ক) ধারায় রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের কথা লিখিত ছিলো। বিচারক গোলাম রাব্বানীর বর্তমান কথা অনুযায়ী রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম যদি পাগলের কথা হয়ে থাকে, তাহলে এই পাগল সংবিধানের অধীন শপথ গ্রহণ করা তার উচিত হয়নি। বরং শপথ গ্রহণ করে সে নিজেকেই পাগল প্রতিপন্ন করলো। পাশাপাশি সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযোজনের পর যত সরকার এসেছে এমনকি বর্তমান সরকারের বর্তমান সময় ছাড়াও বিগত সময় এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযোজনের পর সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের যা কিছু কার্যক্রম চলছে, যত বিচারক শপথ গ্রহণ করেছেন, কর্মকাণ্ড করেছেন সবকিছুকে সে মূলত পাগল বলে প্রতিভাত করেছে।
যা তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী, সংবিধানদ্রোহী, সরকারদ্রোহী তথা ইসলামধর্মদ্রোহী প্রতিপন্ন করে।
‘মদীনা সনদ’-এর ২৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী ‘ইহুদী-মুসলমানকে এক জাতি’ বলে বিচারক গোলাম রাব্বানী চরম প্রতারণা ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। শেষ স্তরের অজ্ঞতাও জাহির করেছে। সে এক্ষেত্রে ইংরেজি believers শব্দের প্রবঞ্চনা ও প্রতারণাপূর্ণ অর্থ করেছে। believers শব্দ দিয়েই মুসলমান ও ইহুদী সম্প্রদায়কে এক করে দেখিয়েছে।
অথচ believers শব্দটা এখানে আহলে কিতাবদেরকে বোঝানো হয়েছে মুসলমানদেরকে নয়।
বিচারপতি রাব্বানী বর্ণনার ক্ষেত্রে উইকিপিডিয়ার বর্ণনা গ্রহণ করেছে। কিন' অন্যান্য কিতাবে এই বর্ণনা নেই। তবে উইকিপিডিয়ায় মদীনা সনদের প্রথমেও যা বলা হয়েছে তা দ্বারাও প্রতিভাত হয় যে, মুসলমান ও ইহুদী আলাদা জাতি। যেমন সনদের ভূমিকায় বলা হয়েছে, In the name of Allah, the compassionate Rahman. This is a writing of Muhammad, the prophet, between the believers and the Muslims of Quraysh and Yathreb.
এই অনুচ্ছেদে স্পষ্টতই believers এবং মুসলমানকে আলাদা এবং দুটো পক্ষ বা জাতি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
কিন' বিচারপতি রাব্বানী এ বর্ণনা এড়িয়ে তার প্রতারণার স্বার্থে The Jews of the Banu `Awf are one community with the believers. এই লাইনকে গ্রহণ করে মুসলমান ও ইহুদীকে এক জাতিভুক্ত বেঝানোর মত মহামিথ্যাচার ও চরম প্রবঞ্চনা করেছে।
মূলত এই অনুচ্ছেদে সেটা বলা হয়েছিল যে, মুসলমান, ইহুদী ও খ্রিস্টানদের মাঝে যদি কেউ কোন অপরাধ করে তবে সেটা তার ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এজন্য পুরো সম্প্রদায়কে দায়ী করা যাবে না।
আরো উল্লেখ্য, উইকিপিডিয়ার বর্ণনাই একমাত্র বিশ্বস্ত নয়। আবার উইকিপিডিয়াই এক বর্ণনায় ৪৭টি এবং অপর বর্ণনায় ৫৭টি সনদের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। কাজেই বিচারপতি রাব্বানী ২৫তম ধারা বলে যা বর্ণনা করেছে তার সার্বজনীন কোন ভিত্তি নেই।
মুসলমান ও ইহুদী এক উম্মাহ নয়; কারণ কুরআন শরীফ-এ বিধর্মীদের দুটো ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এক. আহলে কিতাব। অর্থাৎ যাদের উপর কিতাব নাযিল হয়েছে তারা কিতাব বিকৃত করে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মানেনি। এদেরকে কুরআন শরীফ-এর ভাষায় আহলে কিতাব বলা হয়। দুই. যারা আহলে কিতাব নয় তারা।
আর মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলে কিতাব প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, “অধিকাংশ আহলে কিতাব (ইহুদী-নাছারা) মুসলমানদের প্রতি হিংসার কারণে চায়- তোমরা ঈমান আনার পর তোমাদেরকে কোনো রকমে কাফির বানিয়ে দিতে। ”
কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফ-এ স্পষ্টভাবে ইহুদী, খ্রিস্টানদেরকে মুসলমানদের শত্রু বলা হয়েছে। তাদের থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। তাদের সাথে মিল রাখাকে জাহান্নামী হওয়ার কারণ বলা হয়েছে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা ইহুদী-নাছারাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না তারা একজন আরেক জনের বন্ধু, যারা তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে তারা তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে।
’
আর ‘সূরা মায়িদায়’ ইহুদীদেরকে মুসলমানদের স্পষ্টভাবে সবচেয়ে বড় শত্রু চিহ্নিত করে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদী অতঃপর মুশরিকদেরকে। ’
এভাবে স্পষ্ট বর্ণনা থাকার পরও বিচারক গোলাম রাব্বানী ইহুদীদেরকে মুসলমানদের সাথে এক উম্মাহ বলে কুরআন শরীফ-এর চরম অবমাননা করেছে। পৃথিবীর তিনশ কোটি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত দিয়েছে।
মুসলমান এবং ইহুদী যদি এক জাতিই হতো তবে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ-এ আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদীছ শরীফ-এ ইহুদীদেরকে আরব ভূখণ্ড থেকে বের করে দিতে বলতেন না। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘সূরা তওবার’ ২৮ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মুশরিকরা নাপাক।
সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল হারাম তথা হেরেম শরীফ-এর নিকটে না আসে। ” আর এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা মসজিদে (নববীতে) বসা ছিলাম। এমন সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (হুজরা শরীফ হতে) বাইরে এসে বললেন, ইহুদীদের নিকট চলো। সুতরাং আমরা উনার সঙ্গে রওয়ানা হলাম এবং তাদের শিক্ষালয়ে আসলাম।
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে দাঁড়িয়ে বললেন, হে ইহুদী সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম গ্রহণ করো, নিরাপদে থাকবে। জেনে রাখ, গোটা বিশ্ব ভূখণ্ড মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অধিকারে। আমি তোমাদেরকে এই ভূখণ্ড (তথা আরব উপদ্বীপ) হতে বহিষ্কার করার সঙ্কল্প করেছি। অতএব, তোমরা কোন জিনিস বিক্রি করতে চাইলে তা বিক্রি করতে পার। ” (অন্যথায় এমনিই ছেড়ে যেতে হবে।
) (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
হাদীছ শরীফ আরো উল্লেখ আছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (বিছাল শরীফ-এর সময়) তিনটি বিষয়ে অসীয়ত করেছেন। তিনি বলেছেন, আরব উপদ্বীপ হতে মুশরিকদিগকে বহিষ্কার করিবে। দূত বা প্রতিনিধিদলকে আমি যেভাবে উপঢৌকন প্রদান করতাম, তোমরাও অনুরূপভাবে উপঢৌকন প্রদান করবে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, তৃতীয়টি হতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে নীরব রয়েছেন অথবা তিনি তো বলেছেন, কিন' আমাকে উহা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। (তবে ইমাম হযরত মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন তৃতীয়টি হলো, আমার রওজা শরীফকে ইবাদতের জন্য ইবাদতখানায় পরিণত করো না।
(বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)যভাবে উপঢৌকন প্রদা
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বললেন, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আমাকে বলেছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছেন, নিশ্চয়ই আমি আরব উপদ্বীপ হতে ইহুদী ও নাসারাদিগকে বহিষ্কার করবো, এমনকি মুসলমান ব্যতীত কাউকে এখানে রাখবো না। (মুসলিম শরীফ)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত যে, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হিজায (আরব) ভূখণ্ড হতে ইহুদী ও নাসারাদিগকে বিতাড়িত করেছেন। (প্রকৃত ব্যাপার হলো) যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খায়বার জয় করেন, তখন সেখানের ইহুদীদিগকে সেখান থেকে বহিষ্কার করতে ইচ্ছা করেছিলেন। কেননা, যেই জায়গা তিনি জয় করতেন, সেই জায়গা মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সমস্ত মুসলমানগণের অধিকারে এসে যায়।
তখন ইহুদীরা রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আবেদন করলো এই শর্তে তাদেরকে সেখানে বহাল রাখা হোক যে, তারা নিজেদের শ্রমের বিনিময়ে ফসলের অর্ধেক লাভ করিবে। তখন রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আমরা যতদিন চাইবো, ততোদিন তোমাদেরকে বহাল রাখিব। ফলে তারা সেখানে থেকে গেল। অবশেষে হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খিলাফতকালে তাদেরকে তাইমা ও আরীহার দিকে বিতাড়িত করে দিলেন। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
কাজেই উপরোক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, বিচারক গোলাম রাব্বানী যে বলেছে, মুসলমান ইহুদী একই জাতি তা শুধু মিথ্যাই নয় বরং কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর খিলাফ হওয়ায় কুফরী হয়েছে।
বিচারক গোলাম রাব্বানী চরম অজ্ঞতা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত দিয়েছে।
‘কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোন আইন পাস হবে না’- এ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকারের উচিত বিচারক গোলাম রাব্বানীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে প্রায় ৯৬ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় অনূভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। পাগল ছাড়া কেউ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার কথা বলতে পারে না’- বিচারক গোলাম রাব্বানীর একথায় প্রতিভাত হয়, সে নিজেই পাগল ছিলো। ‘মদীনা সনদ’-এর ২৫ নম্বর ধারার নামে ‘মুসলমান ও ইহুদীরা এক জাতি’ বলে গোলাম রাব্বানী যা বলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যাচার ও গভীর প্রতারণা।
কুরআন শরীফ-এ ‘সূরা মায়িদা’-এর ৮২ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইহুদীদের মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু বলা হয়েছে।
এছাড়াও অনেক আয়াত শরীফ-এই ইহুদী, খ্রিস্টান, পৌত্তলিকদেরকে মুসলমানদের শত্রু বলা হয়েছে এবং তাদের সাথে বন্ধুত্ব রাখলে জাহান্নামী হওয়ার কথা বলা হয়েছে। কাজেই ‘ইহুদী ও মুসলমান এক উম্মাহ’ একথা বলে বিচারক গোলাম রাব্বানী কুরআন শরীফ-এর চরম অবমাননা করে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত দিয়েছে। এজন্য প্রায় ৯৬ ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠীর কাছে তাকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে এবং তার জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা ‘কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোন আইন পাস হবে না’- এই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির সরকারকেই নিতে হবে।
তথাকথিত বিচারক গোলাম রাব্বানী নিজের কথা দ্বারা নিজেই বড় পাগল সাব্যস্ত হয়েছে এবং সে বর্তমান সরকারকেও পাগল প্রতিপন্ন করেছে। সে বলেছে, ‘পাগল ছাড়া কেউ ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার কথা বলতে পারে না।
’ অথচ বিচারক হিসেবে সে যে সংবিধান সমুন্নত ও সংরক্ষণ এবং পালনের শপথ গ্রহণ করেছিলো; সে সংবিধানের ২(ক) ধারায় রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের কথা লিখিত ছিলো। বিচারক গোলাম রাব্বানীর বর্তমান কথা অনুযায়ী রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম যদি পাগলের কথা হয়ে থাকে, তাহলে এই পাগল সংবিধানের অধীন শপথ গ্রহণ করা তার উচিত হয়নি। বরং শপথ গ্রহণ করে সে নিজেকেই পাগল প্রতিপন্ন করলো। পাশাপাশি সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযোজনের পর যত সরকার এসেছে এমনকি বর্তমান সরকারের বর্তমান সময় ছাড়াও বিগত সময় এবং রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংযোজনের পর সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের যা কিছু কার্যক্রম চলছে, যত বিচারক শপথ গ্রহণ করেছেন, কর্মকাণ্ড করেছেন সবকিছুকে সে মূলত পাগল বলে প্রতিভাত করেছে। যা তাকে রাষ্ট্রদ্রোহী, সংবিধানদ্রোহী, সরকারদ্রোহী তথা ইসলামধর্মদ্রোহী প্রতিপন্ন করে।
‘মদীনা সনদ’-এর ২৫ নম্বর ধারা অনুযায়ী ‘ইহুদী-মুসলমানকে এক জাতি’ বলে বিচারক গোলাম রাব্বানী চরম প্রতারণা ও মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। শেষ স্তরের অজ্ঞতাও জাহির করেছে। সে এক্ষেত্রে ইংরেজি believers শব্দের প্রবঞ্চনা ও প্রতারণাপূর্ণ অর্থ করেছে। believers শব্দ দিয়েই মুসলমান ও ইহুদী সম্প্রদায়কে এক করে দেখিয়েছে। অথচ believers শব্দটা এখানে আহলে কিতাবদেরকে বোঝানো হয়েছে মুসলমানদেরকে নয়।
বিচারপতি রাব্বানী বর্ণনার ক্ষেত্রে উইকিপিডিয়ার বর্ণনা গ্রহণ করেছে। কিন' অন্যান্য কিতাবে এই বর্ণনা নেই। তবে উইকিপিডিয়ায় মদীনা সনদের প্রথমেও যা বলা হয়েছে তা দ্বারাও প্রতিভাত হয় যে, মুসলমান ও ইহুদী আলাদা জাতি। যেমন সনদের ভূমিকায় বলা হয়েছে, In the name of Allah, the compassionate Rahman. This is a writing of Muhammad, the prophet, between the believers and the Muslims of Quraysh and Yathreb.
এই অনুচ্ছেদে স্পষ্টতই believers এবং মুসলমানকে আলাদা এবং দুটো পক্ষ বা জাতি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন' বিচারপতি রাব্বানী এ বর্ণনা এড়িয়ে তার প্রতারণার স্বার্থে The Jews of the Banu `Awf are one community with the believers. এই লাইনকে গ্রহণ করে মুসলমান ও ইহুদীকে এক জাতিভুক্ত বেঝানোর মত মহামিথ্যাচার ও চরম প্রবঞ্চনা করেছে।
মূলত এই অনুচ্ছেদে সেটা বলা হয়েছিল যে, মুসলমান, ইহুদী ও খ্রিস্টানদের মাঝে যদি কেউ কোন অপরাধ করে তবে সেটা তার ব্যক্তিগত অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এজন্য পুরো সম্প্রদায়কে দায়ী করা যাবে না।
আরো উল্লেখ্য, উইকিপিডিয়ার বর্ণনাই একমাত্র বিশ্বস্ত নয়। আবার উইকিপিডিয়াই এক বর্ণনায় ৪৭টি এবং অপর বর্ণনায় ৫৭টি সনদের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। কাজেই বিচারপতি রাব্বানী ২৫তম ধারা বলে যা বর্ণনা করেছে তার সার্বজনীন কোন ভিত্তি নেই।
মুসলমান ও ইহুদী এক উম্মাহ নয়; কারণ কুরআন শরীফ-এ বিধর্মীদের দুটো ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
এক. আহলে কিতাব। অর্থাৎ যাদের উপর কিতাব নাযিল হয়েছে তারা কিতাব বিকৃত করে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে মানেনি। এদেরকে কুরআন শরীফ-এর ভাষায় আহলে কিতাব বলা হয়। দুই. যারা আহলে কিতাব নয় তারা। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি আহলে কিতাব প্রসঙ্গে ইরশাদ করেন, “অধিকাংশ আহলে কিতাব (ইহুদী-নাছারা) মুসলমানদের প্রতি হিংসার কারণে চায়- তোমরা ঈমান আনার পর তোমাদেরকে কোনো রকমে কাফির বানিয়ে দিতে।
”
কুরআন শরীফ-এর অনেক আয়াত শরীফ-এ স্পষ্টভাবে ইহুদী, খ্রিস্টানদেরকে মুসলমানদের শত্রু বলা হয়েছে। তাদের থেকে দূরে থাকতে বলা হয়েছে। তাদের সাথে মিল রাখাকে জাহান্নামী হওয়ার কারণ বলা হয়েছে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো বলেন, ‘তোমরা ইহুদী-নাছারাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না তারা একজন আরেক জনের বন্ধু, যারা তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করবে তারা তাদেরই দলভুক্ত বলে গণ্য হবে। ’
আর ‘সূরা মায়িদায়’ ইহুদীদেরকে মুসলমানদের স্পষ্টভাবে সবচেয়ে বড় শত্রু চিহ্নিত করে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, ‘তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদী অতঃপর মুশরিকদেরকে।
’
এভাবে স্পষ্ট বর্ণনা থাকার পরও বিচারক গোলাম রাব্বানী ইহুদীদেরকে মুসলমানদের সাথে এক উম্মাহ বলে কুরআন শরীফ-এর চরম অবমাননা করেছে। পৃথিবীর তিনশ কোটি মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত দিয়েছে।
মুসলমান এবং ইহুদী যদি এক জাতিই হতো তবে মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ-এ আর নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হাদীছ শরীফ-এ ইহুদীদেরকে আরব ভূখণ্ড থেকে বের করে দিতে বলতেন না। যেমন মহান আল্লাহ পাক তিনি ‘সূরা তওবার’ ২৮ নম্বর আয়াত শরীফ-এ ইরশাদ করেন, “হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মুশরিকরা নাপাক। সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল হারাম তথা হেরেম শরীফ-এর নিকটে না আসে।
” আর এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে, “হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আমরা মসজিদে (নববীতে) বসা ছিলাম। এমন সময় নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (হুজরা শরীফ হতে) বাইরে এসে বললেন, ইহুদীদের নিকট চলো। সুতরাং আমরা উনার সঙ্গে রওয়ানা হলাম এবং তাদের শিক্ষালয়ে আসলাম। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে দাঁড়িয়ে বললেন, হে ইহুদী সম্প্রদায়! তোমরা ইসলাম গ্রহণ করো, নিরাপদে থাকবে।
জেনে রাখ, গোটা বিশ্ব ভূখণ্ড মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অধিকারে। আমি তোমাদেরকে এই ভূখণ্ড (তথা আরব উপদ্বীপ) হতে বহিষ্কার করার সঙ্কল্প করেছি। অতএব, তোমরা কোন জিনিস বিক্রি করতে চাইলে তা বিক্রি করতে পার। ” (অন্যথায় এমনিই ছেড়ে যেতে হবে। ) (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
হাদীছ শরীফ আরো উল্লেখ আছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (বিছাল শরীফ-এর সময়) তিনটি বিষয়ে অসীয়ত করেছেন।
তিনি বলেছেন, আরব উপদ্বীপ হতে মুশরিকদিগকে বহিষ্কার করিবে। দূত বা প্রতিনিধিদলকে আমি যেভাবে উপঢৌকন প্রদান করতাম, তোমরাও অনুরূপভাবে উপঢৌকন প্রদান করবে। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, তৃতীয়টি হতে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিজে নীরব রয়েছেন অথবা তিনি তো বলেছেন, কিন' আমাকে উহা ভুলিয়ে দেয়া হয়েছে। (তবে ইমাম হযরত মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেছেন তৃতীয়টি হলো, আমার রওজা শরীফকে ইবাদতের জন্য ইবাদতখানায় পরিণত করো না। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)যভাবে উপঢৌকন প্রদা
হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত।
তিনি বললেন, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি আমাকে বলেছেন যে, তিনি রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বলতে শুনেছেন, নিশ্চয়ই আমি আরব উপদ্বীপ হতে ইহুদী ও নাসারাদিগকে বহিষ্কার করবো, এমনকি মুসলমান ব্যতীত কাউকে এখানে রাখবো না। (মুসলিম শরীফ)
হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত যে, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি হিজায (আরব) ভূখণ্ড হতে ইহুদী ও নাসারাদিগকে বিতাড়িত করেছেন। (প্রকৃত ব্যাপার হলো) যখন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি খায়বার জয় করেন, তখন সেখানের ইহুদীদিগকে সেখান থেকে বহিষ্কার করতে ইচ্ছা করেছিলেন। কেননা, যেই জায়গা তিনি জয় করতেন, সেই জায়গা মহান আল্লাহ পাক ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও সমস্ত মুসলমানগণের অধিকারে এসে যায়। তখন ইহুদীরা রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে আবেদন করলো এই শর্তে তাদেরকে সেখানে বহাল রাখা হোক যে, তারা নিজেদের শ্রমের বিনিময়ে ফসলের অর্ধেক লাভ করিবে।
তখন রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, আমরা যতদিন চাইবো, ততোদিন তোমাদেরকে বহাল রাখিব। ফলে তারা সেখানে থেকে গেল। অবশেষে হযরত উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার খিলাফতকালে তাদেরকে তাইমা ও আরীহার দিকে বিতাড়িত করে দিলেন। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ)
কাজেই উপরোক্ত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, বিচারক গোলাম রাব্বানী যে বলেছে, মুসলমান ইহুদী একই জাতি তা শুধু মিথ্যাই নয় বরং কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ-এর খিলাফ হওয়ায় কুফরী হয়েছে।
বিচারক গোলাম রাব্বানী চরম অজ্ঞতা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে চরম আঘাত দিয়েছে।
‘কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোন আইন পাস হবে না’- এ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সরকারের উচিত বিচারক গোলাম রাব্বানীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করে প্রায় ৯৬ ভাগ মুসলমানের ধর্মীয় অনূভূতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।