আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ আরেকটি ২৮শে অক্টবর ঘটে গেল নাটরে.....

ভারতের দালাল আর পাকি রাজাকার দুইটারেই ঘৃনা........

বলার ভাষা নেই। একেবারেই নিশব্দ ও নিস্তব্ধ......... ভিডিও লিন্ক.. Click This Link কপি পেষ্ট সংবাদ.... নাটোর, ০৮ অক্টোবর (আরটিএনএন ডটনেট)-- নাটোরে বিএনপির মিছিলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র হামলায় বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ও বনপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি সানাউল্লাহ নুর বাবু (৪০) নিহত হয়েছেন। হামলায় পৌর মেয়র ও সাংবাদিকসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে। শুক্রবার জেলার বনপাড়ায় পূর্বনির্ধারিত সভা উপলক্ষে আয়োজিত মিছিলে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার ছবি তুলতে গেলে নাটোরের চার সাংবাদিকে পিটিয়ে জখম করে হামলাকারীরা।

হামলায় বড়াইগ্রাম পৌরসভার মেয়র ইসাহাক আলী, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক ও বড়াইগ্রাম বিআরডিবির চেয়ারম্যান জামাল উদ্দিন আলীসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়। হামলায় আহত সাংবাদিকদের ক্যামেরা ভাঙচুর ও ছিনতাই করা হয়। হামলাকারীরা তিনটি মাইক্রোবাস, তিনটি প্রাইভেটকার ও সাতটি সিএনজি ট্যাক্সি ভাঙচুর করে। হামলার প্রতিবাদে বড়াইগ্রাম পৌরসভা বিএনপি তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে। নাটোর জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ভূমি উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু ঘটনার জন্য সরাসরি আওয়ামী লীগকে দায়ি করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বনপাড়া পৌর বিএনপি মাসব্যাপী আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসাবে শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। দুলুর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। ঢাকা থেকে রওনা দিয়ে দুলু বনপাড়ার কাছাকাছি পৌঁছেছেন এমন খবর আসলে স্থানীয় বিএনপি উপজেলা চেয়ারম্যান ও বনপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি সানাউল্লাহ নুর বাবুর নেতৃত্বে একটি মিছিল বের করে। মিছিলটি উপজেলা চত্বর থেকে শুরু হয়ে বনপাড়া বাজারে আসলে আগে থেকেই প্রস্তুত থাকা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠিসোটা ও বিভিন্ন আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মিছিলে আক্রমন করে। জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জাকির হোসেন, ছাত্রলীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা রাকিব, জামিল ও বাবলু হামলার নেতৃত্ব দেন।

এ সময় বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান ও বনপাড়া পৌর বিএনপির সভাপতি সানাউল্লাহ নুর বাবুকে কুপিয়ে ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে নাটোর-পাবনা মহাসড়কে ফেলে দেয় হামলাকরীরা। বাবুকে বাঁচাতে এগিয়ে আসলে হামলাকারীদের আঘাতে উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-সম্পাদক জামাল উদ্দিন আলী, উপজেলা যুবদল সভাপতি রফিক সরদার, নাজিম উদ্দিন, আব্দুল আলিম ও মোজাম্মেল হকসহ কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়। নাটোর থেকে যাওয়া কয়েকজন সাংবাদিক হামলার ছবি তুলতে গেলে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতাসীন দলের সশস্ত্র নেতা-কর্মীরা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় ডেসটিনি, সোনালী সংবাদ ও বাংলার চোখের নাটোর জেলা প্রতিনিধি শেখ তোফাজ্জল হোসেন, বাংলাদেশ প্রতিদিনের নাটোর জেলা প্রতিনিধি নাসিম উদ্দিন, এটিএন বাংলার ক্যামেরাম্যান রানা আহম্মেদ ও দিগন্ত টিভির ক্যামেরাম্যান লেমন হোসেন আহত হন। শেখ তোফাজ্জল হোসেনের ডান পা ভেঙ্গে যায় এবং বাম হাত গুরুতর জখম হয়।

এ সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নাসিম উদ্দিন ও রানা আহম্মেদের মাথা ফেটে যায়। লেমন হোসেনকে লাঠি দিয়ে পেটানো হয়। ঘটনার সময় বড়াইগ্রাম পৌরসভার মেয়র ও বিএনপি নেতা মো. ইসাহাক আলীকে বহনকারী মাইক্রোবাস ভাঙচুর এবং তাকেও মারধর করা হয়। গুরুতর আহত বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুকে প্রথমে নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতালে আনা হয়। অবস্থার দ্রুত অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

সেখানে নেয়ার পর দুপুর আড়াইটার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাবুকে মৃত ঘোষণা করে। তার মৃত্যুর খবরে নাটোরে শোকের ছায়া নেমে আসে। অপরদিকে আহত চার সাংবাদিকসহ বাকিদের নাটোর আধুনিক সদর হাসপাতাল ও বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এ সময় দুটি টিভি-ক্যামেরা ভাঙচুর ও তিনটি ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া হয়। এদিকে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক জাকির হোসেন ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন বলে দাবি করেন।

সংঘর্ষের সময় ঢাকা-রাজশাহী ও নাটোর-পাবনা মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বনপাড়া বাজারের দোকান এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। বিএনপি অভিযোগ করেছে এই হামলার সময় পুলিশ নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে। সংঘর্ষ শেষে দুপুরের দিকে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। হামলার প্রতিবাদে দুপুরে ১টার দিকে বড়াইগ্রাম পৌরসভা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শরিফুল হক মুক্তার নেতৃত্বে পৌর এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে।

বিকালে নাটোর জেলা বিএনপির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন ডাকা হলেও উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুর মৃত্যুর খবর পেয়ে এম রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুসহ দলের নেতারা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চলে যান। দুলু এ ঘটনার জন্য সরাসরি আওয়ামী লীগকে দায়ি করে বলেছেন, বর্তমান সরকার ফাঁসির আসামিদের ক্ষমা করে দিচ্ছে বলেই হত্যাকারীরা উৎসাহিত হচ্ছে। রাজপথে জনপ্রিয় একজন তরুণ উপজেলা চেয়ারম্যানকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই প্রকাশ্যে হামলা চালিয়ে একজন নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যানকে হত্যা ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা বর্তমান সরকারের ফ্যাসিবাদী চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ। শনিবার সকাল ১১টায় বনপাড়া মুসলিম হাই স্কুল মাঠে নিহত বড়াইগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান সানাউল্লাহ নুর বাবুর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। আরটিএনএন ডটনেট/প্রতিনিধি/এসআই_ ১৯১৬ ঘ.

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।