আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফরজ সালাত শেষে হাত তুলে মোনাজাত



বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম ইন্নাল হাম্‌দালিল্লাহ্‌ (নিঃসন্দেহে সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য)! দুআয় হাত ওঠানো নামাযের পর দুআকবূল হয়। এ সময় মেহেরবান রবের নিকট যেকোনো দুআ করা যায়। আরবিতে বা নিজ নিজ মাতৃভাষায় ইখলাস ও মনোযোগের সঙ্গে দুআ করা উচিত। এ সময় দুআ করামুস্তাহাব, তবে তা নামাযেরঅংশনয়। ১নং হাদীস হায্‌রাত সালমান ফার্‌সী রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হু হতে বর্ণিত, ان اللہ حی کریم، یستحی ان یرفع الرجل الیہ یدیہ ان یردھما صِفراً خائِبیْن۔ নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহ তাআলা দয়ালু, দাতা।

যখন বান্দা তাঁর সামনে প্রার্থনার হাত প্রসারিত করে তখন তা শূন্য ফিরিয়ে দিতে তিনি লজ্জ্বাবোধ করেন। (জামি’ তিরমিযী, ২/১৯৫) ২নং হাদীস আবূ মুহাম্মাদ ইবনু আবি ইয়াহ্‌ইয়া রাহিমাহুল্লাহ্‌ বলেন, رایت عبد اللہ بن الزبیر و رئیٰ رجلا رافعا یدیہ قبلان یفرغ من صلاتہ، فلما فرغ منھا قال: ان رسول اللہ صلی اللہ علیہ و سلم لم یکن یرفع یدیہ حتی یفرغ من صلاتہ۔ আব্দুল্লাহ ইবনু যুবাইর রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হু একজন নামাযীকে দেখলেন, সে নামায শেষ করারআগেই হাত তুলে দুআ করছে। তিনিতাকে বললেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামায সমাপ্ত হওয়ার আগে হাত তুলে দুআ করতেননা। (মাজমাউয যাওয়াইদ, ১০/১৬৯) ৩নং হাদীস হাযরাত সালমান রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হু থেকে বর্ণিত, قال رسول اللہ صلی اللہ علیہ وسلم: ما رفع قوم اکفھم الی اللہ عز و جل یسئلونہ شیئا الا کان حقا علی اللہ ان یضع فی ایدیھم الذی سئلوا۔ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন কিছু মানুষ হাতউঠিয়ে আল্লাহর কাছে কোন কিছু প্রার্থনা করে তখন অবশ্যই আল্লাহ তাদের প্রার্থিত বিষয় দান করেন। (মাজমাউয যাওয়াইদ, ১০/১৬৯) ৪নং হাদীস হাযরাত আবূ উমামাহ্‌ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হু হতে বর্ণিত, قیل لرسول اللہصلی اللہ علیہ و سلم، ای الدعاء اسمع؟ قال: جوف اللیل الآخر، و دبر الصلوات المکتوبات সাহাবীগণ রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আন্‌হুমনাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন,কোন্‌ দুআ বেশিকবূল হয়? নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, শেষ রাতের দুআ ও ফরয নামাযের শেষের দুআ।

(জামি’ তিরমিযী, ২/১৮৮) উপরোক্ত চার হাদীসের মধ্যে প্রথম হাদীসথেকে জানা যাচ্ছে, হাত তুলে দুআ করলে তা কবূলের সম্ভাবনা বেশি। দ্বিতীয় হাদীসথেকে জানা যাচ্ছে যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নামাযের পর হাততুলে দুআ করতেন। তৃতীয় হাদীসথেকে জানা যাচ্ছে যে, কিছু মানুষ যখনআল্লাহর দরবারে দুআ করেন তখন তা কবূল হওয়ার অধিক সম্ভাবনা থাকে। চতুর্থ হাদীসথেকে জানা যাচ্ছে যে, নামায শেষে দুআকবূল হয়। ফরয নামাযের পরহাত তুলে দুআ করার বিষয়ে দু’ ধরণের প্রান্তিকতা রয়েছে।

কেউ একেনামাযের অংশ মনে করেন। আর কেউ একে নাজায়িয ও বিদআত বলেন। (অথচ দু'নো ধারণাই ভুল, এটা কেবলমুস্তাহাবআমল,যেমনটি শুরুতে বলা হয়েছে) এখানে কতিপয় গাইরে মুকাল্লিদ (অর্থাৎ যারা মাযহাব মানেন না/আহলে হাদীস)আলিমের বক্তব্য উল্লেখ করা হলো, ১. হাফিয আব্দুল্লাহ রোপড়ী বলেন, ফরয নামাযের পরহাত তুলে দুআ করার যে প্রচলনরয়েছে তা সঠিক। (ফাতাওয়াতে আহলে হাদীস, ২/১৯০) ২. মিয়া নাজীর হোসাইন দেহলবী বলেন, চিন্তাশীল ব্যক্তি মাত্রই জানেন যে, ফরয নামাযের পর হাততুলে দুআ করা জায়িয ও মুস্তাহাব। যাইদ (যিনি এ দুআকে বিদআত বলেন) ভুল বলেন।

(ফাতাওয়ানাজীরিয়্যাহ্‌, ১/৫৬৬) ৩. মাওলানা সানাউল্লাহ্‌ অমৃতসরী বলেন, কোনো কোনো রিওয়ায়াতে (বর্ণনায়) নামাযের পর হাততুলে দুআ করার কথা রয়েছে। (ফাতাওয়া ছানাইয়্যাহ্‌, ১/৫২৭) সূত্রঃ নবীজির নামায লেখকঃ ড. শাইখ মুহাম্মাদ ইল্‌ইয়াস ফাইসাল মাদীনাহ্‌ মুনাওয়ারাহ্‌, পৃষ্ঠা, ২০৬ অনুবাদকঃ মাওলানা মুহাম্মাদ যাকারিয়া আব্দুল্লাহ্‌, পরিবেশনায়ঃ মাকতাবাতুল আশরাফ, ইসলামী টাওয়ার, ১১ বাংলা বাজার, ঢাকা-১১০০।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।