প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারি (মিডিয়া) মাহবুবুল হক শাকিলের সঙ্গে কূটনীতিক শাহনাজ গাজীর বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সচিবালয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। সম্প্রতি দুজনের যুগল ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধমে প্রকাশ পাওয়ার পর এ নিয়ে বিভিন্ন মহলে সমালোচনা চলছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানান, শাহনাজ গাজী এখন চীনের কুংমিংয়ে বাংলাদেশ মিশনের কনসাল জেনারেল। এর আগে ২০১০ সালে নিউইয়র্কের গ্রান্ড হায়াত হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর তত্কালীন ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি মাহবুবুল হক শাকিলের সঙ্গে অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ ওঠে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, শাহনাজ গাজীই ওই সময় শাকিলের বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগ করেছিলেন।
এরপর দুজনের নতুন করে মেলামেশার ছবি প্রকাশ পেল। বিদেশে কর্মরত একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার এমন আপত্তিকর ছবি মিডিয়া প্রকাশ পাওয়ায় দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে বলেও কোন কোন কর্মকর্তা মনে করেন।
শাকিলের একজন ঘনষ্টিজন জানান, নিউইয়র্কের ঘটনার পরও শাকিলের সঙ্গে শাহনাজ গাজী দিল্লিতে ঘুরতে যান। এসব ঘটনায় শাকিলের স্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়েও অভিযোগ করেছিলেন।
এদিকে পত্র-পত্রিকায় খবর ছাপা হওয়া প্রসঙ্গে শাহনাজ গাজী ফেসবুকে স্ট্যাটাসে শাকিলের নাম উল্লেখ না করে লিখেন, রাজনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত একজন সরকারি কর্মকর্তা ‘photo-shopped images, concocted scandalous stories on facebook and blogs and forcing some journalists of online newspapers to write obnoxious stories using his official position’।
অর্থাত্ ছবিগুলো তোলা হয়নি, বরং শাকিল এগুলো ফটোশপ সফটওয়্যারে বানিয়েছে। তবে গ্রাফিক্স বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছবিগুলো ফটোশপের মাধ্যমে কোন কারসাজি করা হয়নি। এগুলো বাস্তবে তোলা ছবি।
নিউইয়র্কে সেই আলোচিত ঘটনার পরও তাদেরকে একসঙ্গে বেশ কয়েকবার গুলশানের সামদাদো রেস্টুরেন্টেও দেখা গেছে। সেখানে তাদের বিভিন্ন মুহুর্তের ছবি তুলেছিলেন রেস্টুরেন্টটির কর্মচারী এ্যালবার্ট বাড়ই।
তিনি শুক্রবার কালের কণ্ঠকে বলেন, 'বিভিন্ন সময় আমি শাকিল স্যার ও শাহনাজ ম্যাডামের হাস্যজ্জ্বল দৃশ্যের ছবি তুলে দিয়েছি। সন্ধ্যার পর প্রায়ই এখানে এসে দীর্ঘ সময় ধরে আড্ডা দিতেন। তাদেরকে ঘনিষ্ঠভাবে মিশতে দেখতাম'। একইভাবে রেস্টুরেন্টের ব্যবস্থাপক বরকত উল্লা ফরাজী বাবুল বলেন, নিউইয়র্কের ঘটনার আগেও উনারা দুজন আমাদের রেস্টুরেন্টে এক সঙ্গে খাওয়া দাওয়া করেছেন, সেই ঘটনার পরও আমাদের এখানে আসতেন'।
২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা শাহনাজ গাজীকে মাহবুবুল হক শাকিল ধর্ষণের চেষ্টা করেছিলেন বলে অভিযোগ উঠে।
ঘটনার ৩৬ ঘণ্টা পরে নিউইয়র্ক থেকে দেশে ফিরে আসেন শাকিল। পরে প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারির পদটিও ছাড়তে হয় শাকিলকে। ওদিকে শাহনাজ গাজীকে যুক্তরাষ্ট্রের লসএঞ্জেলসে বাংলাদেশ মিশনে ডেপুটি কনসাল জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এর এক বছর পর চীনের কুনমিংয়ে বাংলাদেশের নতুন মিশন খোলা হলে শাহনাজ গাজীকে কনসাল জেনারেল হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার।
সরকারের একাধিক সূত্র জানায়, ওই ঘটনায় শাকিলের কোনো দায় ছিল না, বিষযটি পরিস্কার হওয়ার প্রধানমন্ত্রী তাকে ২০১২ সালের ১২ জানুয়ারি আরও উচ্চতর পদে (বিশেষ সহকারী, মিডিয়া) নিয়োগ দেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিল কালের কণ্ঠকে বলেন, 'শাহনাজ গাজী সম্পর্কে আমি আর কিছু বলতে চাই না পি্লজ ওইসব নিয়ে আমি ভুলে থাকতে চাই। '
Click This Link
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।