দু’ হাটুর মাঝে মাথা
সরসিজ আলীম
ঘাসেরা দু’ হাটুর মাঝে মাথা রেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছে,
কয়েকটি ব্যাঙ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পা ছড়িয়ে ব’সে পান চিবোচ্ছে,
পড়শির বাড়িতে বেড়াতে আসা মেয়েটি জল ঢেলে যাচ্ছিলো
ঝোপের ভেতর, বাতাসে ছপছপ আওয়াজ বইছে।
ঘাসেদের মাসের পর মাস পেটে-ভাতে বন্ধ হয়ে যায়,
রাস্তায় নামলে পুলিশের গুতা, টিয়ার গ্যাস, লাঠিচার্জ,
গ্রেফতার, আর গুপ্ত হত্যা বা লাশ গুম।
মালিক কারখানা বন্ধ করে শেরাবখানা আর প্রিয় নারীর
সান্নিধ্যে বুদ হ’য়ে থাকে,
মহাশয়রা আঙুলে চাবির রিং ঘোরায়,
বৈদেশিক যড়যন্ত্রের ভেপু বাজায় কারাখানার মালিক নেতারা ।
এই শহরের কবিরা মাজারে মাজারে নান্দীপাঠ করে,
কর্পোরেট মিডিয়া হাউজগুলোতে তাদের আঙুল কেটে
রাখা আছে সম্পাদক আর পরিচালকের টেবিলের কলমদানীতে,
তাদের জিভগুলো ঝুলানো আছে সম্পাদক আর পরিচালকের
পিতার ছবির ললাটের উপর;
তার বিনিময়ে কবিরা পাচ্ছে নিয়মিত মোটা অঙ্কের মাসোহারা।
বাক্স-পোটরাদের সফরসঙ্গি হয়ে রাষ্ট্রিয় সফরেও যাচ্ছেন কবিগণ,
সফরের বাক্স-পোটরা দেখভালে বেশ দক্ষ ও বিশ্বস্ত কবিরা,
কবিদেরকে নিয়ে জাতি আজ গর্ব করতেই পারে!
এই শহরের কবিরা থাকতে পারতো প্রতিবাদের প্রথম কাতারে,
ঈস্রাফিলের ফুঁ উপেক্ষা ক’রে দাঁড়াতে পারতো বুক চিতিয়ে,
ঘাসেরা কবির বুকে মাথা রাখতে পারতো নির্দ্বিধায়,
কবির বুকে মাথা রেখে একটা রাত শান্তিতে ঘুম দিতে পারতো।
ওহে আগামী শতকের মহাজীবন,
তোমাদের পাড়ায় কবির ঘুড়ির উপর আকাশ খেলা করে,
ওহে গ্লিজ ৫৮১-জির মহাজীবন,
তোমাদের পাড়ায় কবির বট বৃক্ষের ছায়ারা নদীতে নাইতে নামে!
০২.১০.২০১০, ঢাকা।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।