সত্য বলার সাহস, কিন্তু তা হজম করার সাহস ক্য় জনের আছে তা জানি না .।
“না ওড়ে, না পোড়ে বোধ
মহাকাল নেবে ধ্বংসের শোধ। “
কার কবিতা এটা মনে নেই, কয়েক বছর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আই.ই.আর এর দেয়ালে এই কবিতাটি দেখেছিলাম, সে সময় মনে হয়েছিলো যে কথাটায় ওজন আছে। অনেক ভারী কথা সন্দেহ নেই। কিন্তু কথাটা কতটা ওজনদার তা সে সময় না বুঝলেও ঢাকার রাস্তায় চলতে ফিরতে টের পাওয়া যাচ্ছে ইদানিং।
ঢাকাবাসী মাত্রই ঢাকার সমস্যা, সুবিধা নিয়েই মধুরং বসবাদ ছিলো এতোদিন। ট্রাফিক জ্যাম, গ্যাস, পানি, বিদ্যুৎ রাস্তার ময়লা-আবর্জনা ফাকা রাস্তায় ছিনতাই ...... এই সমস্যা গুলোতো ছিলোই, কিন্তু ঢাকা যেনো কেমন আপন একটা শহর ছিলো আমাদের কাছে, অন্তত আমার কাছে। হায়!! সেই ঢাকাকে বড় অচেনা লাগে। ছিনতাই, জ্যাম এই সমস্যাগুলো মনে ভয় ধড়ায় সবসময়, কিন্তু ঢাকার রাস্তায় চলতে গিয়ে প্রচন্ড জ্যামের ভেতর আটকে আছি, আর এমন নিরাপদ মূহুর্তে মারা পড়বো, এমন ভয় কখনোই আমার মনে উকি দেয় নি। কিন্তু কালকে সায়েদাবাদের ঘটনার পর মনে হচ্ছে – ঢাকা আমাদের আর আপন কেও না।
( যদিও শোনা যাচ্ছে – গেটমেন গেটের দিকে নজর না দিয়ে সে সময় রেল লাইনের পাশে তার গড়ে তোলা টং দোকানে বেশি সময় কাটান বলেই এই ঘটনা ...... আফসোস ) মহাকাল যেনো তার ধ্বংসের শোধ নেয়া শুরু করে দিয়েছে। ঢাকা এবার ফুসে উঠছে। আমরা সদাই ভীরু জাতি যদি ৫২, ৭১, ৯০ তে ফুসে উঠতে পারি – অত্যাচার আর অবহেলার বিরুদ্ধে তাহলে হাজার বছরের অতিহ্য আছে যে শহরের সে কেনো, নীরবে নিজের অপমান, অবহেলা সহ্য করে যাবে। ৩০ – ৪০ লাখ মানুষের আবাসের জায়গায় এখন দুই থেকে আড়াই কোটি মানুষ থাকছে। থাকতে পারছে না, তা ও থাকছে।
শুধু থাকছেই না, প্রতিদিন আরো আসছে ...... থেমে থাকছে না এই আসার খেলা ...... এটা যেনো একতরফা ভাবে হচ্ছে, মানে শুধু আসছেই ...... কেও ঢাকা ছেড়ে যাচ্ছে না। আসলে যাওয়ার উপায় ও নেই। কোথায় যাবে ? যারা এসেছে তারা ভাগ্যাহত, নয়তো ঢাকায় আসতে বাধ্য।
- গ্রামে মুক্ত হাওয়া খেয়ে আর যাই হউক, পেট ভরে না। তাই কিছু ( আসলে অনেক ) লোক ঢাকায় আসে, যদি ঢাকাবাসীর আয়ের কিছু অংশ তারা ভিক্ষা হিসেবে পায়, এই আশায়।
- আর কিছু লোক আসে, কারণ আপনি যেই প্রতিষ্ঠানেই চাকরি করেন না কেনো, আপনার মুল অফিস অথবা একমাত্র অফিস টিও যে ঢাকায়। এমনকি কৃষি ব্যাংকের হেড অফিস সহ আরো কয়েকটা ব্রাঞ্চ ও ঢাকায়। তাদের ঢাকায় কাজ কি ???
- ভালো স্কুল বা কলেজের কথা বলবেন অথবা ভালো বিশ্ববিদ্যালয় – তাও যে ঢাকায় !!!
এখন হয়তো আর বেশী সময় নেই, তাই যা করার এখনই করতে হবে। কে খুশি হলো, আর কে বেজার হলো সেদিকে না তাকিয়ে সময় হয়েছে কিছু করার। কিছু কঠিন স্বিদ্ধান্ত নেয়ার।
) পোষাক কারখানাগুলো সরিয়ে নেয়া হোক ঢাকার বাহিরে।
) বে-সরকারি কিছু বিশ্ববিদ্যালয় যারা এখনো নিজেদের ক্যাম্পাসে যায় নি, তাদের বাধ্য করা হোক ঢাকার আশে-পাশে ক্যাম্পাস গড়তে।
) প্রসাশন সহ, কিছু বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়, যাদের ঢাকায় মুলত কোনো কাজ নেই, তাদের কার্যালয় গুলো সরিয়ে নেয়া হোক গ্রামের দিকে।
) ট্রেন-লাইনগুলো মুল রাস্তায় ওভারপাশ হিসেবে বানানো হোক।
সবচেয়ে বড় কথা – যেকোনো গাফিলতির শাস্তি এত কঠোর হোক, যেনো কেও গাফিলতি করেও গাফিলতি না করে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।