ভব ঘুরতে চাই। ভবঘুরে হতে চাই না।
১৫-১৬-১৭ তিন দিনের ছুটি অগত্য বাসায় বসে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে নষ্ট করব না, এ সিদ্ধান্ত আগেই নিয়েছিলাম।
তাই বন্ধুরা মিলে আয়োজনটা আগেই করেছিলাম। যেমন টিকিট কাটা হোটেল বুকিং (ধন্যবাদ: শাহেদ ভাই; উনি মাইক্রো, হোটেল, জীপ, রিটার্ন টিকিট সব রেডি করে রেখে ছিলেন)
১৪ তারিখ রাতেও হরতাল ছিল।
এনা পরিবহন তাদের বাস ক্যানসেল করল। হাল না ছেড়ে ফকিরাপুল ছূটলাম, অন্য একটা 'কোনোরকম' পরিবহনের টিকিট ম্যানেজ করে ফেললাম।
পরদিন ভোরে সিলেট পৌছালাম... হামিদ ভাইয়ের মাইক্রো আগেই রেডি ছিল। দুই মাইক্রোতে আমরা ১৩ জন রওনা দিলাম। এক ঘন্টার মধ্যেই রাতারগুল পৌছালাম... দুই নৌকাই করে বনের মধ্যে ঢুকলাম।
বা: কি সুন্দর! কি অপরূপ... চারিদিকে পানিতে থৈ থৈ....তার মধ্যে গাছ গুলি দিব্যি দাড়িয়ে আছে। সত্যিই 'আমাজন', বাংলাদেশের 'আমাজন'!
অমর মাঝি হটাৎ গাছের গর্তে সবুজ রংয়ের সাপ দেখালো..
বাপরে বাপ... এই সাপ আমি তো ডিসকভারি চ্যানেলে দেখেছি।
রাতালগুল ভ্রমন শেষ করে রওনা দিলাম লালাখালের দিকে.
ইন্জিন নৌকা ভাড়া করে জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত গেলাম। সারি নদীর দুই ধার দিয়ে জঙ্গল আর সোজা তাকালে মনোমুগ্ধকর পাহাড়। পাহাড়ের মাথায় আকাশ আর মেঘের লুকোচুরি খেলা।
আমাদের টিমের কেউ কেউ পারলে
নৌকা থেকে নেমে পাহাড়ের মাথায় চড়তে রওনা দেয়। তখন বুঝলাম ক্যান প্রতি বছর মাথায় আমাদের পাহাড়ে ওঠার নেশা চেপে বসে, আর ক্যান প্রতি বছর বান্দরবান ছুটে যায় ।
যাইহোক.... ফিরে এসে ২৫ কিলোমিটার দূরে জাফলং গেলাম... আগেও জাফলং গিয়েছি... তবে এবার একটু বেশিই ভাল লাগল। ভাল লাগার কারন মনে হয় এবার জাফলং এর বরফ শীতল পানিতে জিরো পয়েন্টে গোসলে নেমে পড়ে ছিলাম।
শ্রী-মঙ্গল আসতে আসতে রাত ৯ টা বেজে গেল।
পরদিন সকালে জীপে করে রওনা দিলাম আমাদের আসল ডেসটিনি হামহামের উদ্দেশ্যে। ২ ঘন্টা জীপে গিয়ে পৌছালাম খার্মুপাড়া। গাইড নিলাম আতাউর ভাইকে। চমৎকার মানুষ। ঘন্টা খানেক হাটার পরে শুরূ হল পাহাড়ি বর্ষন্, হাইরে ভয়ংকর রাস্তা।
পা পড়ে এখানে স্লিপ করে পড়ি অন্যখানে। তাজিংডং এর রাস্তায় উঠতে কষ্ট হয়েছে কিন্তু এরকম বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়নি কখনো। কিছুক্ষন পর শরীরে প্রথম জোঁক এর উপস্থিতি আবিষ্কার করলাম। একে একে তিন তিনটি জোঁকের কামড় আর ছয়টি আছাড় খেয়ে অত্যন্ত সফলতার সাথে সাড়ে তিন ঘন্টা হেটেঁ হাম হাম পৌছালাম।
পৌছে যা দেখলাম তা অবিশ্বাস্য।
সত্যিই অবিশ্বাস্য! এত বড় জলপ্রপাত।
এখানে বেশ কিছু সময় কাটালাম। বুনো গোসল করলাম। অসাধারণ কিছু ছবির অংশ হলাম। এরপর জীপের কাছে ফিরতে ফিরতে প্রায় সন্ধা ঘুরে গেল।
পরদিন অর্থাৎ ১৭ তারিখে ঘুরলাম লাউয়াছড়া উদ্যান। সরি.... এইটা একটা বোরিং জায়গা (ব্যক্তিগত মত)।
মাধবপুর লেকে গেলাম। চমৎকার জায়গা। কেউ বগা লেকে যাওয়ার সুযোগ না পেলে এক বার হলেও এখানে ঘুরে আসতে পারেন।
ভালো লাগার মত জায়গা।
শ্রী-মঙ্গল ফিরে 'গোবিন্দাস' রেষ্টুরেন্টে লান্চ করলাম। পরিছন্ন খাবার খেলাম। ট্রেন ছিল বিকাল ৫.০৮ মিনিটে, হাতে সময় প্রায় দুই ঘন্টা। টায়ার্ড ছিলাম, ঘুমাতে পারলে ভালো লাগত! ধূর কিসের ঘুম... এইটা তো শুক্রবারও করা যায়।
গেলাম শীতেস বাবুর পশু সেবাশ্রম দেখতে। ব্যাক্তিগত সংগ্রহশালা। সংগ্রহ খুব বেশি না। তারপরও বলব....বেশ ভালো লাগল।
ষ্টেশনে ফিরছি।
টু্র প্রায় শেষের দিকে। বিদায়ের ঘন্টা বাজছে! ছাড়লো পারবাত এক্সপ্রেস। আকাশটা একটু ঘোলাটে......ব্ন্ধুর ডিএসএলআর ক্যামেরার সাটার তখনো খুজে ফিরছে চলন্ত ট্রেনের বিভিন্ন এন্গেলের ছবি।
ও ছবির কথা বলছিলাম!!!! হ্যাঁ ছবি আমরা তুলেছি প্রায় আড়াই হাজার।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।