আশা করি সবাই ভালো আছেন :)
মোবাইলের বিজ্ঞাপনের সময় আমরা দেখি যে সেখানে মোবাইলের স্ক্রীন টাইপ লেখা রয়েছে। কিন্তু আমরা অনেকেই এই স্ক্রীন টাইপ সম্পর্কে তেমন একটা জানি না। তাই আজ আমি আপনাদের মোবাইলের বিভিন্ন ধরনের স্ক্রীনের নাম ও তাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি। নতুন মোবাইল যারা কিনতে চাইছেন তারা জেনে রাখতে পারেন। আশা করি কাজে লাগবে।
TFT LCD Display :
এটি সবচেয়ে বেশি প্রচলিত স্ক্রীন টাইপ। পুরানো মডেলের মোবাইলগুলো থেকে শুরু করে কম বাজেটের স্মার্টফোনগুলোতেও এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। TFT এর পুর্নরুপ হলো Thin Film Transistor Technology. আর LCD এর পুর্নরুপ হলো Liquid Crystal Display.
খারাপ কোয়ালিটির TFT LCD ডিসপ্লে যুক্ত মোবাইলে রঙ ফ্যাকাশে দেখাবে এবং স্ক্রীনের সাইড দিয়ে তাকালে অন্ধকার দেখা যাবে। ভাল কোয়ালিটির স্ক্রীন বেশি উজ্জ্বল হবে আর যেকোন দিক দিয়ে তাকালেই মোটামুটি পরিস্কার দেখা যাবে।
সূর্যের আলোতে এই স্ক্রীনে পরিস্কার দেখতে অসুবিধা হয়।
এ ধরনের ডিসপ্লেতে ব্যাটারীর খরচ বেশি হয় তবে এটি তৈরী করা যায় অনেক সস্তায়। তাই কম ও মাঝারী দামের সেটের এই ডিসপ্লে বেশি ব্যবহার করা হয়।
IPS LCD Display:
IPS এর পুর্নরুপ হলো In-Plane Switching. এটি TFT LCD Display থেকে উন্নত। এই স্ক্রীনের ডিসপ্লে কোয়ালিটি ভালো এবং ব্যাটারী কম খরচ হয়। এটি সাধারন LCD থেকে বেশী দামের বলে বেশী দামের স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহার করা হয়।
OLED Display:
OLED এর পুর্নরুপ হলো Organic Light Emitting Diode. এটি LCD থেকে ভালো কোয়ালিটির মোবাইল স্ক্রীন। এই ডিসপ্লে অনেক উজ্জ্বল,কৌনিক দিক থেকে সহজেই দেখা যায় এবং বেশ হালকা।
AMOLED Display:
AMOLED এর পুরোটি হলো Active Matrix Organic Light Emitting Diode. এই ডিসপ্লের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো পিক্সেলগুলো নিজ থেকেই আলো তৈরী করতে পারে যার কারনে আপনি সূর্যের আলোতেও কোন সমস্যা ছাড়াই দেখতে পারবেন। OLED স্ক্রীনের মতই এর ডিসপ্লে অনেক উজ্জল,শার্প এবং হালকা। হাই কোয়ালিটির স্মার্টফোনগুলোতে এই স্ক্রীন এখন অনেক ব্যবহার করা হয়।
Super AMOLED Display:
এটি AMOLED ডিসপ্লে এর আধুনিক ভার্সন। স্যামসং এর গ্যালাক্সী স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহার করা হয়। এই ডিসপ্লে সবচাইতে হালকা ডিসপ্লে। এবং ব্যাটারীর খরচও আগের থেকে কম হয়।
Super LCD (SLCD):
এটি LCD স্ক্রীনের আধুনিকতম সংস্করন।
এই ডিসপ্লেতেও সূর্যের আলোতে সহজেই দেখা যায়। এছাড়াও AMOLED স্ক্রীন থেকে রঙ আরো ভালোভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে।
Retina Display:
এই স্ক্রিনটি শুধুমাত্র আইফোনে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এর নাম রেটিনা ডিসপ্লে বলা হয় কেননা মানুষের সাধারন চোখ দিয়ে পিক্সেলগুলোকে আলাদা করা বোঝা সম্ভব নয়। এর ছবির কোয়ালিটি,শার্পনেস খুবই উন্নত মানের।
Gorilla Glass:
গরিলা গ্লাস হলো alkali-alluminium যৌগের তৈরী শক্ত ও মজবুত ডিসপ্লে। এটি আপনার মোবাইলের স্ক্রীনকে দাগ,আচড়,ঘষা-মাজা এমনকি হাতুরীর শক্ত আঘাত থেকেও রক্ষা করবে। বর্তমানে Corning কোম্পানীর গরিলা গ্লাস বেশিরভাগ স্মার্টফোনে ব্যবহার করা হয়।
Resistive Touchscreen:
এ ধরনের টাচস্ক্রীনে পর্দায় দুটি স্তর থাকে। প্রথম ও ২য় স্তরের মাঝে ফাকা স্থান থাকে।
প্রথম স্তরে চাপ পড়ার ফলে মাঝের ফাকা অংশটি বেকিয়ে গিয়ে ২য় স্তরে চাপ পড়বে। এবং তারপর মোবাইলের প্রসেসরে সংকেত পাঠাবে। আর এভাবেই এই টাচ কাজ করে।
Resistive Touchscreen আঙ্গুল বাদেও যেকোন কিছু দিয়ে টাচ করে ব্যবহার করা যায়। এতে স্ক্রীনে বেশি চাপ দিতে হয় এবং মাঝে মাঝে ঠিক জায়গামত চাপ পড়েনা।
স্টাইলাস ব্যবহারের জন্য এই স্ক্রীন উপযোগী।
Resistive Touch যেভাবে কাজ করে থাকে
Capacitive Touchscreen:
এ ধরনের টাচ স্ক্রিনে শুধুমাত্র মানুষের হাতের স্পর্শের মাধ্যমেই কাজ করা যায়। এটির ডিসপ্লেতে স্পর্শ করার সাথে সাথেই ইলেক্ট্রোস্টাকিক ফিল্ড তৈরী হয় এবং দ্রুত প্রসেসরে সিগনাল পৌছানোর মাধ্যমে কাজ করে।
Capacitive Touchscreen বেশি দামের আধুনিক স্মার্টফোনগুলোতে ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এটি ব্যবহার আরামদায়ক।
তবে মানুষের আঙ্গুল বা অংগ ব্যাতিত অন্য কিছু দিয়ে টাচ করা যায়না।
আজ এ পর্যন্তই রইলো। আমার পোস্টটি কেমন হয়েছে জানাবেন। কোন ভুল থাকলে কমেন্টে বলবেন।
প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে আমার ফেসবুক পেইজটিতে ঘুরে আসতে পারেন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।