পাবনার প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক কর্মীদের ঘটনায় দেশের প্রধানমন্ত্রীর মন্তব্য ‘এক হাতে তালি বাজে না’ যেমন অনভিপ্রেত তেমনি অরাষ্ট্রনায়কোচিত।
‘এক হাত দেখিয়ে দেব’ বা ‘এক হাত দেখিয়ে দাও’, ‘শাড়ি-চুড়ি পরব’ বা ‘শাড়ি-চুড়ি পর’, ‘তোমার ভিটায় ঘুঘু চরাব’, ‘একটা পড়লে দশটা ফেলব’ এমন বাগধারা বাঙালি মন-মানসিকতারই পরিচয় দেয়। হয়তো সব সমাজ-সংস্কৃতিতেই এ ধরনের কথার কম-বেশি প্রচলন আছে। কিন্তু, কে কখন কোন কথা বলেন তা কখনো বিবেচনার দাবী রাখে।
এমন অশ্লীল বাগধারাও আছে (যেমন, ‘সূঁচের আগায় মিষ্টি মেখে পিঁপড়া ‘ধরা’’) যা বাঙালি সমাজের সকল স্তরেই রূপান্তরভেদে প্রচলিত।
সুবোধ বাগধারা যেমন, ‘চাঁদ উঠলে সবাই দ্যাখে’, ‘ধর্মের কল বাতাসে নড়ে’ এ সবও বাংলা ভাষায় আছে। আমরা কখন কোনটি ব্যবহার করি, তা আমাদের মন-মানসিকতা, ব্যক্তিত্ব ও চরিত্রের পরিচয় বহন করে।
‘এক হাতে তালি বাজে না’ কথাটা শুনেছি পড়শি ‘খালাম্মা’-র মুখে যিনি তার দুষ্ট অবাধ্য সন্তানের সকল কুকর্মকে এই ‘এক হাতে তালি বাজে না’ কথার তুবড়িতে হালাল করে দিতেন। নিজের সন্তানের প্রতি অন্ধ ভালবাসায় প্রতিবেশী ও তার সন্তানের সকল কষ্ট, আকুতি ও অভিযোগ তিনি ঐ একটা কথাতেই ঝেড়ে ফেলতেন। -
‘এক হাতে তালি বাজে না’ কথাটা আরো শুনেছি মহল্লার মাতব্বরের মুখে, যিনি বিচার প্রার্থীর সকল আর্জি-আবেদনকে তার গুরুগম্ভীর মুখে ‘এক হাতে তালি বাজে না’ এই একটা কথার অতি শীতল স্পর্শে মরণ-আড়ষ্টে জমিয়ে ফেলতেন।
পড়শি ‘খালাম্মা’ এবং মহল্লার ‘মাতব্বর’ যা বলতে পারেন বলেন, কিন্তু দেশের ‘প্রধানমন্ত্রী’ তা বলতে পারেন না। যখন দেশের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তি এমন কথা বলেন, আমরা স্বীকার করি বা না করি, আমাদের বুঝতে হবে আমরা কঠিন সমস্যায় এবং বিপদে আছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।