নাজমুল ইসলাম মকবুল
নাজমুল ইসলাম মকবুল
সুরমা নদীতে যার উৎসমুখ সেই ঐতিহ্যবাহী সুরমা নদী থেকে কামাল বাজার মুন্সীর বাজার লালাবাজার হয়ে বিশ্বনাথের বুক চিরে যে বিখ্যাত নদী প্রবাহিত হয়েছে সেই নদীর নাম বাসিয়া নদী। এককালে এই নদীতে পাল তোলা নৌকা চলতো পত পত করে। মাঝিরা গুন টেনে দাড় টেনে নৌকা দিয়ে পরিবহন করতো মালামাল কিংবা যাত্রী সাধারনকে। বর কনের নৌকা চলতো বিভিন্ন সাজে রঙে ঢঙে। নদীর বিভিন্ন স্থানে বড় বড় ডর (মোহনা) ছিল।
সেখানে কন্যা নৌশার নৌকা ঢুবে যেত। অনেকে বলতেন নয়া কন্যা নউশাকে মাত্তা বা দেওলায় নিয়ে গেছে। বড় ও গভীর খরস্রোতা নদীতে নাকি মাত্তা বা দেওলা থাকতো। আবার বড় বড় লঞ্চ ষ্টিমার দাপিয়ে বেড়াতো এই বাসিয়া নদীতে। বাসিয়া নদী নিয়ে অনেক কবিতা গানও রচনা করেছেন অনেক কবি সাহিত্যিকেরা।
বর্তমানে এই ঐতিহ্যবাহী বাসিয়া নদীতে ডর (মোহনা) নেই, কথিত মাত্তা কিংবা দেওলা নেই, পাল তোলা নৌকা নেই, গুণ বা দাড় টানার মাঝি নেই, প্রচন্ড বেগের স্্েরাত নেই, লঞ্চ বা স্টিমারের দাপাদাপি নেই। যেন নির্জীব একটি মরা খালে পরিণত হয়েছে। এই কদিন পুর্বেও যে খরস্রোতা বাসিয়া নদীর পরিধি ছিল তার এক চতুর্তাংশও এখন আর অবশিষ্ট নেই। বিশ্বনাথের গরু হাটার পাশে যে ডর ছিল তা ভরাট হয়ে ডরের উপর এখন বাসা বাড়ি দোকান পাঠ ও কলোনি নির্মিত হয়েছে। রজকপুরের ডরের পার্শ্বে খেয়া নৌকায় উঠতে বুক ধুরু ধুরু করতো।
কিন্তু এখন আর ডরতো নেইই বরং তা ভরাট হয়ে পরিণত হয়েছে েেতর জমিনে। তাই এই অবস্থা চলতে থাকলে কিছুদিনের মধ্যেই ঐতিহ্যবাহী বাসিয়া নদী একটি ছড়া বা নালায় পরিণত হবে যা অনায়াসে পার হওয়া যাবে লাফ দিয়ে। অনুসন্ধানে জানা গেছে বাসিয়া নদীর উৎসমুখ এতই সংকুচিত হয়ে পড়েছে যে সুরমা নদী থেকে পানির প্রবাহ প্রায় বন্ধই বলা চলে। ফলে উৎস মুখ থেকে বেশ কয়েক কিলোমিটার নদী এখন প্রায় বিলীন হয়ে েেতর জমীতে পরিণত হয়েছে। এছাড়া দখলদাররা অবাধে দখল করে নির্মাণ করছে দোকান গৃহ মার্কেট কিংবা বাড়ি ঘর।
দিন দিন নদীতে পলি জমে ভরাট হলেও কারো মাথা ব্যথা নেই বরং দখলদাররাই হচ্ছে দিন দিন আঙুল ফুলে কলাগাছ। বাসিয়া নদী বিলীন হতে থাকায় অনেক দেশীয় প্রজাতির মিটা পানির মাছের দেখাও আর পাওয়া যায় না। বিলীন হচ্ছে আমাদের মুল্যবান মৎস্য সম্পদও। এছাড়া বাসিয়া নদী থেকে উৎপন্ন হওয়া বিভিন্ন শাখানদীও ক্রমান্বয়ে বিলীন হয়ে গেছে।
বাসিয়া নদী খনন প্রসঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরীর সাথে এ প্রতিবেদকের আলাপ হলে তিনি বলেন অচিরেই বাসিয়া নদী খনন করা হবে।
তিনি আরও বলেন নদীতে পানি থাকলে মাছ হবে। পানি দিয়ে কৃষি জমিতে সেচ দেওয়া সম্ভব হবে। ফলে ধানের ফলন বৃদ্ধি পাবে। তাই নদী খনন জরুরী হয়ে পড়েছে। বাসিয়া নদী খনন করে বিশ্বনাথবাসীকে অকাল বন্যার হাত থেকে রাসহ হারিয়ে যাওয়া নদীটির নাব্যতা ফিরিয়ে আনা এখন বিশ্বনাথবাসীর প্রাণের দাবী।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।