আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৯/১১ হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রই দায়ী: আহমাদিনেজাদ



ইরানের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমাদিনেজাদ বলেছেন, বেশির ভাগ মানুষই মনে করে, ৯/১১ হামলার জন্য যুক্তরাষ্ট্রই দায়ী। গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। আহমাদিনেজাদের এই বক্তব্যের প্রতিবাদে অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকেরা। আহমাদিনেজাদ বলেন, ৯/১১ হামলার জন্য আল-কায়েদার জঙ্গিরা দায়ী বলে যারা মনে করে, তারা বেশির ভাগই মার্কিন নেতা ও সরকারি কর্মকর্তা। ইরানি নেতা বলেন, আরেকটি তত্ত্ব অনুযায়ী, মার্কিন সরকারের একটি অংশ এই হামলার পেছনে ইন্ধন জুগিয়েছিল।

নাজুক মার্কিন অর্থনীতি পুনরুদ্ধার, মধ্যপ্রাচ্যের ওপর নিজেদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও ইহুদি রাষ্ট্রকে রক্ষার জন্য তারা এ হামলার ষড়যন্ত্র করে। ইহুদি রাষ্ট্র বলতে তিনি ইসলায়েলকে বুঝিয়েছেন। ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের মানুষ ও নেতারা দ্বিতীয় তত্ত্বটি বিশ্বাস করেন। ৯/১১ হামলার প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করতে একটি স্বাধীন কমিটি গঠনে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। এই হামলা নিয়ে একটি তৃতীয় তত্ত্ব উপস্থাপন করেন ইরানি প্রেসিডেন্ট।

তিনি বলেন, একটি সংগঠনই এ হামলা চালায়, এতে সমর্থন দিয়েছে মার্কিন সরকার। পরিস্থিতির সুযোগও নিয়েছে তারা। তবে এ ধারণা খুব কম মানুষের। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বিশ্ববাণিজ্য কেন্দ্র (ডব্লিউটিসি) ও সামরিক সদর দপ্তর পেন্টাগনে বিমান হামলায় নিহত হয়েছিল প্রায় তিন হাজার মানুষ। এই হামলার জন্য জঙ্গি সংগঠন আল-কায়েদাকেই দায়ী করে মার্কিন সরকার।

জাতিসংঘের ১৯২ সদস্যের সাধারণ পরিষদে আহমাদিনেজাদের এই বক্তব্যের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশ, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও কোস্টারিকার প্রতিনিধিরা অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করেন। এর পরও আক্রমণাত্মক বক্তৃতা চালিয়ে যেতে থাকেন ইরানি প্রেসিডেন্ট। তিনি বলেন, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের সব মূল্যবোধ ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা ইহুদিবাদের জন্য নিবেদিত। আহমাদিনেজাদ বলেন, কিছু পশ্চিমা দেশের কাছ থেকে সমর্থন পেয়ে দেশটি (ইসরায়েল) ওই অঞ্চলের দেশগুলোকে হুমকি দিয়েই চলেছে। ফিলিস্তিনি নেতা ও অন্যদের হত্যার বিষয় প্রকাশ্যে ঘোষণা দিচ্ছে।

অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি জনগণকে সন্ত্রাসী ও ইহুদিবিদ্বেষী বলে অভিহিত করা হচ্ছে। জাতিসংঘে আহমাদিনেজাদের বক্তব্যকে ‘জঘন্য ও মতিভ্রম’ বলে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। তাঁর বক্তব্য শেষ হওয়ার আগেই জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের মুখপাত্র মার্ক কর্নব্লাউ বলেন, ‘ইরানি জনগণের সদিচ্ছা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরার পরিবর্তে আহমাদিনেজাদ বাগাড়ম্বর করে অসার সব তত্ত্ব আওড়াচ্ছেন এবং ইহুদিবিদ্বেষী গীত গেয়ে যাচ্ছেন। ’ আহমাদিনেজাদের বক্তব্যকে আন্তর্জাতিক আইনের নির্লজ্জ লঙ্ঘন ও জাতিসংঘের আদর্শের বিরোধী বলে অভিহিত করেন কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরেন্স ক্যানন। বিতর্কিত পরমাণু কর্মসূচি পরিহার করতে ইরানকে বাধ্য করতে দেশটির বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত চার দফায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে জাতিসংঘ।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এর আগে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে বলেন, কূটনৈতিক উপায়ে সমস্যা সমাধানের পথ এখনো ইরানের জন্য খোলা আছে, তবে তাদের প্রমাণ করতে হবে তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ। নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের সমালোচনা করে আমাদিনেজাদ বলেন, এতে পরিষদের অবশিষ্ট গ্রহণযোগ্যতাও নষ্ট হচ্ছে। ইরানের প্রেসিডেন্ট জানান, সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে তিনি আগামী বছর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করবেন এবং ২০১১ সালকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের বছর হিসেবে ঘোষণা করা উচিত। এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্স। Click This Link


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।