জিনাত রহমান, পেশায় একজন সাংবাদিক, কলামিস্ট, উন্নয়নকর্মী, ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার। সমসাময়িক ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন নিয়ে প্রচুর লেখা দেশের দৈনিক, পাক্ষিক ও মাসিক পত্রিকাগুলোতে প্রকাশিত হয়েছে। নির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক উত্তর বাংলা, সভানেত্রী, দিনাজপুর লেখ
পরদিন অহনা প্রবালকে ফোন করে। তখন তাদের মধ্যে ফেলে আসা ২৪ বছরের ঘটনা অহনাকে বলে প্রবাল।
তোমার স্ত্রী এই যে আমার সামনে হেয়ালী ছাড় এতগুলি বছর কোন খোঁজ নাওনি এখন এসব কথা বলছো।
জান জীবনে যে ভুল করেছি সেই মাশুল দিচ্ছি একা একা থেকে। কেন সুইটি কোথায়?
সে আমাকে ভুল বুঝে আমাকে ছেড়ে চলে গেছে একটা ছবি দেখে ফেলে সেই থেকে ঝগড়া অশান্তি আমার মনের এত জ্বালা যন্ত্রণা সব গোপণ রেখে সুইটি কে সুখি করতে চেষ্টা করেছি। আমার একমাত্র বংশধর তার খোঁজ নেইনি অশান্তি হবে বলে। আমিতো পাপি তোমাকে কাপুরুষের মত ছেড়ে চলে গেছি। বাবা ভাইয়ের কাছে তোমার আমার বয়সের ডিফারেন্ট কথা বলতে তারা রাজি হয়নি।
তাছাড়া কিছুই অভাব নেই। তুমি এতবড় কলেজে পড়াও সুন্দর বাড়ি ঘর সব আছে। আমার সোনার টুকরা ছেলেকে জীবনে দেখিনি। কালকে অবশ্যই তুমি আমার কোয়ার্টারে আসবে। তোমার সাথে আমার কথা আছে।
হারানো জিনিষ পেলে যেমন আনন্দ হয়। অহনা তখন তেমন অবস্থা। রাতে অহনার ঘুম নেই। প্রবালের একই অবস্থা হল। সকালে ঘুম থেকে উঠে এলো প্রবালের কোয়ার্টারে।
প্রবালতো মহা খুশি অহনাকে পেয়েছে। বিগত ২৪ বছরের যত জমানো কথা প্রান খুলে তারা কথা বললো। আগের মত অহনা প্রবালকে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এতোদিন পর স্বার্থকহলো অহনার ভালবাসার মানুষ টিকে কাছে পেয়ে তার জয় হলো।
স্বপ্নেরগভীরে যখন আমার দখিনা হাওয়া ফিরিয়ে দিল। অহনা তখন শুধু তোমার কথা মনে ফিরে ফিরে আসতো।
তুমি চোখের আরাল হলেও আমার মনের আড়াল হওনি মনের গোপণ গভীরে তোমার আসন পাতা ছিল। নীল আকাশে দিকে তাকালে তোমাকে দেখতে পাই। তুমি কত সুন্দর করে কথা বল অহনা, কদিন আছ খুলনায়?
আছি দশ বার দিন। কলেজ স্কুলে গেলে চলে যাব।
আচ্ছা অহনা একটা কতা বলতো নিশি তুমি যে জীবনে এত ডিছিসন নিলে এভাবে জীবন কাটাবে।
আমার ছেলেটা হলো আমাকে জানালেনা কেন?
কেন জানাবো বল তুমিতো এই পৃথিবীর আলো বাতাস তো দেখাতে চাওনি। বাচ্চা নিতে বার বার না করেছিলে।
কেন বলেছিলাম? এই বাচ্চাটির জন্য অন্য কোথাও তোমার বিয়ে হতোনা তাই। আমি বিয়ে করে ঘর সংসার করছিলাম। তুমি জীবনটা এভাবে নষ্ট করলে।
এটা আমার স্বার্থকতা সমাজকে দেখিয়ে দিয়েছি। একটা সন্তানকে নিয়ে কীভাবে মা একা মাথা তুলে দাড়িয়ে। ছেলেকে মানুসের মত মানুস করেছি। আমার ছেলে কার মত হয়েছে অহনা জান প্রবাল একেবারে তোমার মত কপাল ভুরু, চোখ, ঠোঁট সব তোমার শুধু আমার মত লম্বা হয়েছে। গায়ের রং তোমার মত।
আমার দেখতে মন চায় ছেলেকে।
কেন পঁচিশ বছরে একবার খোঁজ নাওনি? আমি ছেলেকে নিয়ে কেমন আছি?
কে বলেছে খোঁজ নেইনি সব সময় নিয়েছি তোমার বান্ধবী অর্পিতার কাছে আমি ওকে কছম দিয়েছি তুমি যেন টের না পাও।
জান প্রবাল আজ এই মধুর লগ্নে ভাবতেই ভাল লাগছে তুমি আমার একান্তই আমার তুমি আমার রাজপুত্র।
আর তুমি অহনা কোন স্বর্গেররাজরাণী তুমি। তুমি কত ভাল।
এত কিছু ভাবছো কেন। তুমি একান্তই আমার। এভাবে দুজনের কেমন দিন চলে যায় ছুটি কাটিয়ে অহনা ফিরে আসে ঢাকায়। আর প্রবাল থেকে যায় খুলনায়। অহনা ভাবে প্রবাল এত চাপা আমাকে এত ভালবাসে অথচ একবার আমাকে জানালো না সে একা একা নির্বাসিত জীবন কাটাচ্ছে।
তা আমার সাথে তার সংসার হলো না হলো সুইটির সাথে। প্রবাল সব সময় মানিয়ে চলেছে ধৈর্য্য পরীক্ষা দিয়েছে সুইটি প্রবাল কে একটু ও বুঝেনি সন্দেহের আগুনে ছারখার করে দিয়েছে প্রবালের জীবন। শেষ পর্যন্ত প্রবাল জটিল সিদ্ধান্ত নেয়। সে সুইটকে রেখে চলে এসেছে জানালে তারাই বিয়ে দেয়।
একটি দিনের জন্য আমি সুখ পাইনি সুইটির কাছে।
সারাক্ষণ তার ক্যারিয়ার চাকুরী বাবার বাড়ি এই করে কাটিয়েছে। জান রাতিন অহনা তার উল্টো আমার কাছে তার চাওয়া কিছু না। আমি কী পছন্দ করি খেতে কী করছি। কখন কী খেলাম। আমাকে ভালবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিত অহনা সেবা ভালবাসা আমার জীবন ভরিয়ে রাখতো।
অথচ আমি ওকে ঠকিয়ে ছি। একটু বয়স বেশী ছিল ভয়ে কাউকে বলতে পারিনি। ওকে নিয়ে ঘর করবো না। এই কারণে আল্লাহ আমাকে শাস্তি দিয়েছে। না থাকতে পেলাম সুইটির কাছে না পারলাম অহনা কাছে।
শোন অহনা ভাবির কাছে ফিরে যাও। যার জন্য আমার প্রতিটি নিশ্বাস যার জন্য আমার অনন্ত অপেক্ষা যার জন্য সব কিছু তুচ্ছ আমার কাছে তাকে দেখতে ইচ্ছে করে।
সে কে?
চলবে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।