আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাঘ-বন্দনা



এক সিনিয়র ভাই মাঝে মাঝে বলেন : 'আমাদের নেতারা বাঘের বাচ্চা হতে রাজি, তবে কেউ ভুলেও কুত্তার বাচ্চা হতে রাজি হন না। ' ফর গেট ইট। সাইড টক থেকে সরে আসি। বাঘ নিজের গায়ের গন্ধ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণির গন্ধ পেলেই তাকে শত্রু ভাবে এবং মওকা মতো পেছন থেকে আক্রমণ চালিয়ে হত্যা করে। ধারণা করা হয়, সুপ্রাচীন কাল থেকে এশিয়ায় বাঘ শৌয-বীর্যের প্রতীক।

হিন্দু দেবতা শিবের গায়ে বাঘের ছাল তারই প্রমাণ। জাতীয় বীরদেরকে তারা বাঘের মতো সাহসী ভাবতে অভ্যস্থ তারা। বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে বাঘ বেশ দাপুটে প্রাণি। বাঘে ছুঁলে আঠার ঘা, বাঘের ঘরে ঘোগের বাসা, টাকা দিলে বাঘের দুধও মেলে, যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়, জলে কুমীর ডাঙায় বাঘ, ঠেকায় পড়েলে বাঘেও ঘাস খায়, বাঘ-গরুতে এক ঘাটে জল খাওয়া ইত্যাদি প্রবাদ নিত্য আমাদের জিবের ডগায় লাফায়। এটা 'মার্জারদের রাজপুত্র' বা 'জঙ্গলের চাণক্য' নামেও পরিচিত।

এটা আমাদের জাতীয় পশু। তবে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের প্রকৃত সংখ্যা নিয়ে মতভেদ রয়েছে। গত কয়েক বছর ধরে গবেষণার পর বাংলাদেশের বিশিষ্ট বাঘ-বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম সুন্দরবনে বাঘ কমার লক্ষণ খুঁজে পাননি। তিনি সম্প্রতি বলেছেন, 'কয়েক বছর ধরে নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে আমি সুন্দরবনে বাঘ কমার লক্ষণ দেখিনি। সংখ্যা স্থির থাকার অর্থ হচ্ছে, এ বনে বাঘ বাড়ছে।

আর বাঘ বাড়ার সাধারণ সূত্র হচ্ছে, হরিণ বাড়লে বাঘ বাড়ে। সুন্দরবনে হরিণ বাড়ার কারণে বাঘও বেড়েছে বললে বেঠিক হবে না। ' বাংলাদেশ ও ভারতের সুন্দরবনে রয়েল বেঙ্গল টাইগারের সংখ্যা মাত্র চার শতাধিক। চামড়ায় ডোরা কাটা দাগ আর লালচে-হলুদ বর্ণের কারণে বাঘ ঘন জঙ্গল আর লম্বা ঘামের মাঝে সহজেই নিজেকে আড়াল করতে পারে। শক্তিশালী পা আর ঘাড়ের কারণে এটা নিজের দেহের চেয়েও ছয় গুণ বেশি ওজনের বুনো মহিষও শিকার ও বহন করতে পারে।

ভারতের একটি মোবাইল কোম্পানির অর্থায়নে 'সেভ দি টাইগারস' নামে টিভিতে একটি উদ্দীপনামূলক বিজ্ঞাপন সম্প্রচার করা হয়েছিল। ফিল্ম পার্সেনালিটি কিরণ বেদি, ভারতের জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মহিন্দর সিং ধোনি, সুরেশ রায়না, তামিল জনপ্রিয় তারকা সুরিয়া, ফুটবল তারকা বাইচুং বুটিয়া এ বিজ্ঞাপনে অভিনয় করছেন। ভারতীয় উপমহাদেশে বাঘের সবচেয়ে পুরনো দলিল পাওয়া গেছে ভারতের মহারাষ্ট্রের ওয়ারলি উপজাতির আঁকা একটি পাথর চিত্রে। এটি যিশু খ্রিস্টের জন্মের তিন হাজার বছর আগে আঁকা হয়েছে। এরা ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার বেগে দৌড়াতে পারে।

বাঘের পায়ের ছাপ মানুষের আঙ্গুলের ছাপের মতই। এ কারণে এক বাঘের পায়ের ছাপ আরেক বাঘের পায়ের ছাপের সঙ্গে মিলে না। এটা বিড়াল পরিবারের সদস্য। চলাফেরা রাজসিক, শিকার কায়দাও রাজসিক। এটা একাকী চলাফেরা পছন্দ করে।

পুরাণ ও লোকসাহিত্যে বাঘ-বন্দনা রয়েছে। এখনও এটা অনেক প্রতিষ্ঠান বা দলের পতাকায় শোভা পায়। বাংলাদেশসহ এশিয়ার একাধিক দেশে এটা জাতীয় প্রাণী। শক্তিশালী চোয়াল ও দাঁত থাকায় বাঘ যে কোনো পজিশন থেকে শিকারের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে। তবে প্রতিবারেই সে শিকারে সফল হয় না।

এক সময় বাঘ মেরে বনবিভাগের কর্মিরা পুরস্কার পেতেন

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।