খবরে বেরিয়েছে, অবশেষে মরিচের বৈজ্ঞানিক ব্যবহার নিশ্চিত করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী (মাশাআল্লাহ!)। জঙ্গিরা যাতে পালাতে না পারে, সেই লক্ষ্যে তারা ছুঁড়ে মারবে 'মরিচ গ্রেনেড'। এটা বিস্ফোরিত হলে সন্দেভাজনদের চোখ ভীষণ জ্বলবে, ঠিক কাঁদানে গ্যাসের মতো। পালানোর পথ খুঁজে পাবে না তারা।
ওরা মরিচ-গ্রেনেড নিয়ে থাকুক।
আমরা মাতি মরিচ-বন্দনায়।
এমন একটি দিনের কথা কল্পনা করা যায়, যেদিন পৃথিবীর কোথাও কেউ মরিচ (কাঁচা অথবা শুকনো) খাবে না! অথচ এশিয়া আর ইউরোপ ৯ হাজার বছর মরিচ ছাড়াই অন্ন গিলেছে
ভারতীয়রা অবশ্য ভাগ্যবান। কারণ তাদের ছিল গোলমরিচ, পিপ্পলী আর আদা। এগুলোর সাহয্যে তারা মরিচরে অভাব মাইনাস করেছে।
ইতিহাস বলছে, মুগল সম্রাট শাহজাহানের আমলে পর্তুগিজ বেনিয়াদের সৌজন্যে ভারতবাসী মরিচের ঝাল প্রথম চাখতে পেরেছে এবং গত চারশো বছর ধরে ভারতবাসী এতো বেশি মরিচ খেয়েছে যে, মরিচের আসল মালিক মেক্সিকানরা (কেই কেউ বলেন বলিভিয়ান) গত ৯ হাজার বছরেও এতো পরিমাণ মরিচ গিলতে পারেনি।
মরিচের ভারত-বিজয় কাহিনী মোটামোটি এটাই।
মরিচকে এক সময় 'গাছ-মরিচ' বলা হতো। হরিচরণের বঙ্গীয় শব্দকোষে শব্দটি এখনও রয়েছে। তবে মরিচ শব্দের উৎস কি, তা নিয়ে ভাষাবিদদের রয়েছে নানা মত। হরিচরণের ধারণা, শব্দটি 'মরিশাস' দ্বীপ থেকে এসে থাকতে পারে।
মানে তিনি নিজেও নিশ্চিত নন।
মরিচকে আমরা লঙ্কা নামেও চিনি। কিন্তু সংস্কৃতে মরিচ মানে লঙ্কা নয়। শব্দকল্পদ্রুমে লঙ্কা শব্দের একটি অর্থে এক প্রকার ধান নির্দেশিত হলেও মরিচ বোঝায়নি। বাংলা যে একটি গতিশীল ভাষা --তার প্রমাণ হচ্ছে 'লঙ্কা' শব্দটি।
এটি ডাহা সংস্কৃত কিন্তু আমরা শব্দটি দিয়ে মরিচ চিনি। অথচ লঙ্কা শব্দে সংস্কৃত ভাষাভাষীরা কখনই মরিচকে চিনবে না। সংস্কৃতে লঙ্কা শব্দের প্রধান অর্থ 'রাক্ষসদের রমণস্থান'।
সংস্কৃতে মরিচের প্রতিশব্দ হচ্ছে 'ঊণণ'। উড়িষ্যাবাসী মরিচকে বলে 'সোপারিয়া'।
সাগরপাড়িয়া শব্দের অপভ্রংশ হচ্ছে সোপারিয়া। অর্থাৎ এটা সাগরের ওপার বা বিদেশ থেকে এসেছে।
তবে মরিচের জাতভাই গোলমরিচ ভারতের নিজস্ব সম্পত্তি। ইগিহাসে রয়েছে, যিশু খ্রিস্টের জন্মেরও দুই হাজার বছর আগ থেকে ভারতীয় গোলমরিচ মধ্যপ্রাচ্যে যেতো। ওখান থেকে যেতো মিসরে।
মিসরীয়রা মমি তৈরিতে গোলমরিচ ব্যবহার করতো।
ফার্মা ও ভেষজে মরিচের ব্যবহার রয়েছে। ক্যাপসিকামও মরিচ। তবে তাতে মরিচের সেই শিহরিত ঝাল নেই। এটা সবজি প্লাস সালাদের রেঙ্ক পেয়েছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।