'চিতল হরিণ ঐ শিং তুলে ফিকে জ্যোৎস্নায়
হরিণীকে খুঁজে তবু পাবে না কখনও
ব্যাঘ্র যুগে শুধু মৃত হরিণের মাংস পাওয়া যায়। '
জীবনানন্দ দাশ হৃদয়হীন যান্ত্রিকতার এই যুগে হরিণ নিয়ে যে আফসোস করেছেন, তা হয়তো শতভাগ সত্য।
হরিণের মূল অর্থ 'যে সকলের মন হরণ করে। ' তবে প্রচলিত অর্থে হরিণ এক জাতীয় তৃণভোজী পশুকেই নির্দেশ করে।
বাংলা একাডেমীর অভিধানে হরিণের অর্থে বলা হয়েছে 'বড় চোখবিশিষ্ট সরল বা শাখাপ্রশাখাযুক্ত শিংওয়ালা এক প্রকার গাঢ় বর্ণের সুদৃশ্য প্রাণী, যা খুব দ্রুত দৌড়ায়।
' অভিধানটিতে আরো বলা হয়েছে, হরিণের অন্য দুটি প্রজাতি মৃগ ও কুরঙ্গ।
মৃগতৃষষ্ণা মানে মরীচিকা। মরুভূমিতে বালির ওপর সূর্যকিরণ প্রতিফলিত হয়। এতে দূর থেকে স্বচ্ছ জলাশয়ের মায়া সৃষ্টি হয়। এটাই মরীচিকা।
মৃগ মানে হরিণ। আর হরিণ তো থাকে বনে থাকে। মরুভূমিতে কেন মরতে যাবে? আসলে এক সময় মৃগ বলতে বনের যে কোন পশুকে বোঝাতো।
প্রাচীন কালে রাজারা যখন মৃগয়ায় যেতেন, তখন কি শুধু হরিণ শিকার করতেন? প্রকৃতপক্ষে শিকারে গিয়ে যে কোনো পশু শিকার করার নামই মৃগয়া। তাই মৃগতৃষষ্ণার মৃগ হরিণ নয়।
যে কোন পশু এবং তা মরুভূমির পশু।
যাই হোক, হরিণের নরম স্পর্শ রয়েছে বাংলা ও সংস্কৃত সাহিত্যে। শকুন্তলা পতিগৃহে যাবার প্রাক্কালে তার শাড়ির আঁচল ধরে হরিণ শাবক কিভাবে টানছে, তার সরেস বর্ণনা কি কালিদাসের অভিজ্ঞান শকুন্তলমে নেই? অথবা তিনি ধাবমান হরিণের যে রূপকল্প উপস্থাপন করেছেন, তা কি অসাধারণ নয়? চর্যাপদের কবি ভুষূকপাদ কতই না আবেগ ভরে লিখে গেছেন 'আপনা মাংশে হরিণা বৈরী'।
পুনশ্চ : সম্রাট আকবর জন্মের পর হুমায়ুন বন্ধুমহলে কস্তুরি বিলিয়ে ছিলেন, যাতে নবজাতকের সুনাম বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। হুমায়ুন সত্যি সার্থক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।