শুরুতেই একটা সত্য কাহিনী বলে নেই।
জোশের বশে একবার শেরে বাংলা একে ফজলুল হক বড়লাটকে 'বানরের জাত' বলে কষে গালি দিলেন।
পত্রিকায় পরদিন যথারীতি ছাপা হলো : প্রধানমন্ত্রী বড়লাটকে বানর বলেছেন। বড়লাট পড়তে না পারলেও ভালো বাংলা জানতেন। তিনি ফজুলল হককে তলব করে কৈফিয়ত চাইলেন।
'আমি যা বলেছি, তা মিডিয়াম্যানরা বুঝতে না পেরে অন্য কিছু লিখে দিয়েছে' শেরে বাংলা জবাব দিলেন।
'তাহলে কি বলেছেন আপনি?' বড়লাট জানতে চাইলেন।
'বাঃ নর' মানে 'মানুষের মতো মানুষ' বলেছি।
বড়লাট লা-জবাব।
সংস্কৃত বানর শব্দের মূল দ্রাবিড় ভাষার 'বনর'।
তবে এতোটা গভীরে এখন কেউ যেতে চান না। অভিধানগুলো বানর শব্দের মূল হিসেবে সংস্কৃত 'বন্' ধাতুকে নির্দেশ করেই খালাস। বন্ মানে অরণ্য বা শুষ্ক ফল। প্রাণিটি জঙ্গলে থাকে ও ফল খায় বলে এটা 'বনর' আর এই বংশজাত বলেই এরা 'বানর'।
এটা মর্কট (মানে যে বৃক্ষান্তরে যায়) এবং শাখামৃগ নামেও পরিচিত।
শাখামৃগ শব্দটি বৈদিক। শাখামৃগ মানে গাছের ডালের হরিণ। আর বানর হরিণ না হলেও এটা হরিণের বেশ উপকার করে। কারণ বাঘ দেখলেই এটা জোরে চেঁচামেচি শুরু করে দেয়।
বানর থেকেই বাংলায় এসেছে বান্দর বান্দর বা বাঁদর।
ব্যাঙ লাফিয়ে চলে বলে এটাকে বলা হয় 'প্লবগ'। তাহলে লাফিয়ে চলার কারণে বানরও কি প্লবগ? অবশ্যই। কিন্তু এ নামে বানরকে কেউ আর চেনেন না। তাই 'প্লবগ' শব্দটি এখন ব্যাঙের সম্পত্তি হয়ে গেছে
হনুমানও এক ধরনের বানর যা উত্তর ভারতে 'বজরঙবলী' নামে পরিচিত।
মহাভারতে বলা হয়েছে : ভূমিষ্ট হবার পরই এই বানর উদীয় সূর্যকে ফল মনে করে ধরতে আকাশে লাফ দেয়।
ব্যাপারটা খেয়াল করে রেগেমেগে দেবরাজ ইন্দ্র বজ্রাঘাত করেন। এ বজ্রাঘাতে বানরের বাম হনু বা চোয়াল ভেঙে যায় এবং আহত হয়ে পর্বতে পতিত হয়। হনু ভেঙে যাওয়ায় বানরটির নাম হয়ে যায় 'হনুমান'।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।