আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেশ টিভিকে হুমায়ূন আহমেদের উকিল নোটিশ

সমাজকে বদলানোর জন্য নিজেকে আগে বদলানো প্রয়োজন। আসুন আমরা সবাই বদলে যাই সত্যের আলোয়।
নন্দিত কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার ও চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদ দেশ টিভির বিরুদ্ধে এক কোটি টাকার মানহানি মামলার প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। এ বিষয়ে তিনি ১৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশ টিভিতে একটি উকিল নোটিশ পাঠিয়েছেন। তার গল্প-উপন্যাসের কয়েকটি জনপ্রিয় চরিত্রকে দেশ টিভির ঈদের ধারাবাহিক ‘এই সময়ে সেইসব মানুষেরা’তে বিকৃতভাবে উপস্থাপন ও প্রচারের অভিযোগে দেশ টিভিকে উকিল নোটিশ পাঠান।

হুমায়ূন আহমেদ বিষয়টির সুষ্ঠু সমাধান ও নাটকটির প্রচার বন্ধের দাবি জানান, অন্যথায় তার সৃষ্টিকর্মের প্রতি অবজ্ঞা ও মানহানির জন্য দেশ টিভির বিরুদ্ধে এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণের মামলা দায়ের করবেন বলে উকিল নোটিশে উল্লেখ করেন। ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে রাত পৌনে দশটায় দেশ টিভিতে প্রচার শুরু হয় হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টি করা বাকের ভাই, মিসির আলী, হিমু ও আরো কয়েকটি চরিত্র নিয়ে বিশেষ ধারাবাহিক নাটক ‘এই সময়ে সেইসব মানুষেরা’। দেশ টিভির নিজস্ব প্রযোজনায় নির্মিত ৭ পর্বের এই ধারাবাহিকটির রচনা ও পরিচালনায় রয়েছেন রেদোয়ান রনী। নাটকটির প্রথমে নাম দেয়া হয় ‘হিমু, মিসির আলী, বড় চাচা ও বাকের ভাই’। পরে নাম পাল্টে রাখা হয় ‘এই সময়ে সেইসব মানুষেরা’।

প্রতি পর্বের ব্যাপ্তি ২৫ মিনিট। নিজের সৃষ্টি করা চরিত্র বিকৃতভাবে প্রচার প্রসঙ্গে হুমায়ূন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, দেশ টিভি থেকে আমাকে বলা হয়েছিল আমার তৈরি করা কিছু চরিত্র নিয়ে তারা একটি নাটক নির্মাণ করতে চায়। নাটকটি নির্মাণের বিস্তারিত পরিকল্পনা শুনে আমার পছন্দ না হওয়ায় আমি তাদের নিষেধ করি। কিন্তু তারা আমার নিষেধের প্রতি কোনও সম্মান না দেখিয়ে নাটকটি নির্মাণ করে এবং প্রচার শুরু করে। নাটকটির প্রথম পর্ব দেখে আমি ব্যথিত হই।

এতে আমার ভালোবাসার চরিত্রগুলোকে বাজেভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমি নিজেও আমার উপন্যাসের এসব চরিত্রকে নিয়ে পরে নাটক নির্মাণের ঝুঁকি নিইনি, পাছে এসব জনপ্রিয় চরিত্রের প্রতি অবিচার করা হয়। কিন্তু দেশ টিভি আমার সৃষ্টি করা চরিত্র ও আমার প্রতি অবিচার করেছে। অনুমতি ছাড়াই তারা আমার সৃষ্টিকর্ম নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। এই অধিকার তাদের নেই।

তারা এটি করে আমার মানহানি করেছে। বাধ্য হয়েই আমি তাই আইনের শরণ নিয়েছি। ‘এই সময়ে সেইসব মানুষেরা’ ধারাবাহিকটির রচয়িতা ও নির্মাতা রেদোয়ান রনী এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, এটি দেশ টিভির নিজস্ব প্রডাকশন। আমাকে দেশ টিভি থেকে হুমায়ূন আহমেদের তৈরি করা জনপ্রিয় চরিত্র নিয়ে ঈদের জন্য একটি নাটক নির্মাণের প্রস্তাব দেওয়া হয়। আমাকে জানানো হয়, এ বিষয়ে হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে।

আমাকে তারা স্ক্রিপ্ট তৈরি করে জমা দিতে বলে। আমি তাই করি। পরে আমাকে ওই স্ক্রিপ্ট কোনও ধরনের পরিবর্তন-পরিবর্তন ছাড়াই ফিরিয়ে দিয়ে কাজ শুরু করতে বলা হয়। আমি জানতাম, হুমায়ূন আহমেদ নাটকটি নির্মাণের অনুমতি দিয়েছেন। নাটকটির কাস্টিং প্রসঙ্গেও তিনি অবগত আছেন।

হুমায়ূন আহমেদের তৈরি বিভিন্ন চরিত্রকে বিকৃতভাবে উপস্থাপনের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে রেদোয়ান রনীর বলেন, ছোটবেলা থেকেই আমি হুমায়ূন আহমেদের ভক্ত। তার তৈরি করা বাকের ভাই, মিসির আলী আর হিমুর মতো চরিত্র নিয়ে নাটক নির্মাণের সুযোগ পেয়ে আমি ছিলাম অভিভূত। আমার সর্বাত্মক চেষ্টা ছিল চরিত্রগুলোর কাঠামো আর মনোভাব ঠিক রাখা। কাজের ক্ষেত্রে নেমে, গল্পের প্রয়োজন ছাড়া চরিত্রগুলোর মধ্যে সচেতনভাবে কোনও পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হয়নি। দেশ টিভির অনুষ্ঠান প্রধান পারভেজ চৌধুরীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি ভীষণ স্পর্শকাতর।

আমি মামলা বা উকিল নোটিশের ব্যাপারে কিছু জানি না। আইনের আশ্রয় নিতে পারেন যে কেউই। নাটকটি নির্মাণের অনুমতি হুমায়ূন আহমেদ দিয়েছেন কিনা তাও বলতে পারছি না। এ বিষয়ে কার সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে জানতে চাইলে তিনি দেশ টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসাদুজ্জামান নূর ও উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ হাসানের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন। কিন্তু তাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে জানা যায়, উভয়েই দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

সুত্রঃ বাংলানিউজটুয়েন্টিফোর.কম.বিডি
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।