একটি সতর্কতা মূলক পোষ্ট।
ঢাকার ধামরাই পৌর এলাকায় জবাই করা গরুর রক্ত খেয়ে ও স্পর্শ করে শনিবার অর্ধশতাধিক পশু-পাখির মৃত্যু হয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
গরুগুলো অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত ছিল কি না তা পরীক্ষা করতে গরুর মাংস রোগতত্ত্ব, রোগ নির্ণয়, গবেষণা এবং জাতীয় ইনফ্লুয়েঞ্জা সেন্টারে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে। মৃত পশু-পাখির নমুনাও সেখানে পরীক্ষা করা হবে।
তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, 'ব্লাড পয়জনিংয়ের' কারণে এটা হয়ে থাকতে পারে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গেছেন। পরীক্ষার জন্য জবাই করা গরুর রক্ত ও মৃত পশু-পাখির নমুনা সংগ্রহ করেছেন। ওই মাংস না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এলাকাবাসীকে।
এলাকাবাসী জানান, ধামরাই পৌর এলাকার ৪১টি পরিবার চাঁদা করে পাশের কালামপুর হাট থেকে বৃহস্পতিবার তিনটি গরু কেনে। গরুগুলো সিরাজগঞ্জ থেকে কালামপুর হাটে বিক্রির জন্য এসেছিল বলেও তারা জানান।
গরুর ক্রেতা লাল মিয়াসহ অনেকে জানান, জবাই করা তিনটি গরুর মধ্যে একটির গায়ে অনেকগুলো ঘা-এর মতো ছিল।
শুক্রবার রাতে এলাকার একটি ধানের চাতালে গরুগুলো জবাই করা হয়। পরে ওই পরিবারগুলো মাংস নিয়ে যায়। রাত বেশি হওয়ায় রক্ত আর মাটিচাপা দেওয়া হয়নি।
লাল মিয়া বলেন, শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই জবাই গরুর রক্ত খেয়ে ও স্পর্শ করে এলাকায় কয়েকটি রাজ হাঁস, পাতি হাঁস, মুরগি, কবুতর, ২০-২৫টি কাক, চড়�ই, কুকুড় ও বিড়ালসহ অর্ধশতাধিক পশু-পাখি মারা যায়।
দুপুরের পর এলাকাবাসী ধামরাই উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে খবর দেয়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ভেটেরিনারি ফিল্ড অ্যাসিস্টেন্ট (ভিএফএ) ডা. ইয়াকুব হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে জবাই করা গরুর মাংস না খাওয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি গরুর রক্ত ও মৃত পশু-পাখি নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে যান।
অপর ভিএফএ ডা. আবু হানিফ জানান, খবর পেয়ে ঢাকা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মোসাদ্দেক হোসেন, পরিচালক ডা. প্রভাত চন্দ্র তরফদার, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ আলী ঘটনাস্থলে আসেন।
তিনি আরো বলেন, মৃত পশু-পাখির নমুনা পরীক্ষার জন্য রোগতত্ত্ব, রোগ নির্ণয়, গবেষণা এবং জাতীয় ইনফ্লুয়েঞ্জা সেন্টারে (আইইডিসিআর) পাঠানো হয়েছে।
তা পরীক্ষার পরই বোঝা যাবে কী কারণে পশু-পাখিগুলো মারা গেছে।
ঢাকা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মোসাদ্দেক হোসেন জানান, মৃত পশুপাখির নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট দু-তিন দিনের মধ্যে পাওয়া যাবে। এরপরই বোঝা যাবে পশু-পাখিগুলো কী কারণে মারা গেল।
"তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি ব্লাড পয়জনিংয়ের কারণে এটা হয়েছে," বলেন তিনি।
ঘটনাস্থল সংলগ্ন এলাকায় পশু-পাখিকে টিকা দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য একটি টিম পাঠানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
ঢাকা বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. প্রভাত চন্দ্র তরফদার বলেন, "আপাতত আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। তাছাড়া পরীক্ষা ছাড়া কিছু বলা যাচ্ছে না পশু-পাখিগুলো অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত হয়ে নাকি অন্য কোনো কারণে মারা গেছে। "
ধামরাই পৌরসভার এক নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর রাকিব হাসান পল্টু জানান, ওই মাংস অনেকেই রান্না করে খেয়েছে। এ নিয়ে এলাকার লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।
ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুকুমার সরকার জানান, ধামরাইয়ে এখনো কোনো অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়নি।
দেশের বিভিন্ন স্থানে অ্যানথ্রাক্সে গত ১৮ অগাস্ট থেকে ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আট জেলায় মোট ৪৭৯ জন আক্রান্ত হয়েছে।
এরমধ্যে রয়েছে- পাবনায় ৫৭, সিরাজগঞ্জে ২০৬, কুষ্টিয়ায় ৪৬, টাঙ্গাইলে ২৬, মেহেরপুরে ৬৪, মানিকগঞ্জে ৮, সাতক্ষীরায় ১ ও লালমনিরহাটে ৭১ জন।
মনে হলো এই খবরটি থেকে অনেকেই সতর্ক হতে পারবেন এবং উপকৃতও হবেন আশা করি। সরাসরি বিডিনিউজ থেকে কপি করা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।