দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেছেন, উপকূলীয় ১৩টি জেলায় সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এসব এলাকার সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।
দুপুরে আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভার পর তিনি সাংবাদিকদের একথা বলেন।
ওই সভা হওয়ার সময়ও নিশ্চিত জানা যায়নি ঝড়টি বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানবে কি না। তবে রাতে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, ঝড়টি ধীর গতিতে টেকনাফ ও মিয়ানমার উপকূলের দিকে এগোচ্ছে।
ঝড়টি চার থেকে পাঁচশ’ কিলোমিটারের মধ্যে এলে এর গতিপ্রকৃতি স্পষ্ট হওয়া যাবে বলে মন্ত্রীর সঙ্গে সভায় অংশ নেয়া আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক শাহ আলম সাংবাদিকদের জানান।
উপকূল থেকে এর দ্বিগুণের বেশি দূরত্বে রয়েছে মাঝারি মাত্রার ঝড়টি। এটি বুধবারের শেষ ভাগ কিংবা বৃহস্পতিবারের দিকে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে আবহাওয়াবিদদের ধারণা।
ঝড় নিয়ে আতঙ্কিত না হয়ে জানমালের নিরাপত্তায় সবাইকে প্রস্তত থাকার আহ্বান জানান মন্ত্রী।
তিনি বলেন, ৪৯ হাজার ৩৬৫ স্বেচ্ছাসেবক আগাম বার্তা মাইকিং ও প্রচার চালাচ্ছে।
বর্তমানে ৩ হাজার ৭৭০টি কার্যকর আশ্রয় কেন্দ্র তৈরি রাখা হয়েছে।
“প্রয়োজনে প্রাথমিক স্কুলগুলোতেও আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হবে এবং স্কুলগুলো ছুটি দেয়া হবে,” বলেন মাহমুদ আলী। ।
ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী দুর্যোগ মোকাবেলায় উপকূলীয় জেলাগুলোর প্রত্যেকটিতে অতিরিক্ত ৩ লাখ টাকা এবং ১০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য উপকূলীয় প্রতি ইউনিয়নে একটি করে মেডিকেল টিমও কাজ করবে বলে জানান মন্ত্রী।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের চট্টগ্রাম অফিস জানায়, ঝড় মোকাবেলায় জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশনসহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা প্রস্তুত রয়েছে। বন্দর নগরী ও উপকূলীয় এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে নিতেও তারা তৈরি।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, লোকজনকে সতর্ক থাকার জন্য উপকূলীয় উপজেলাগুলোতে মাইকিং চলছে।
চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ও ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় গঠিত সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক এস এম আবদুল কাদের জানান, নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলার পাশাপাশি লোকজনকে সরিয়ে নিতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
“বিপদ সঙ্কেত বাড়লেই তাদের সরিয়ে নেয়া হবে।
প্রয়োজনে জোর করে সরিয়ে আনা হবে। ”
আবদুল কাদের জানান, মঙ্গলবার চট্টগ্রামের উপকূলীয় সাতটি উপজেলায় ১০০ মেট্রিক টন শুকনো খাবার পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে সন্দ্বীপেই পাঠানো হয়েছে ২০ টন।
কর্মকর্তারা জানান, ৫২০টি সাইক্লোন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে, গঠন করা হয়েছে ২৮৩টি মেডিক্যাল টিম। নগরী ও জেলার উপকূলীয় এলাকায় বিভিন্ন স্কুল কলেজ ভবনও আশ্রয়ের জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল থেকে পতেঙ্গা, কাট্টলী ও হালিশহর উপকূলে মাইকিং চলছিলো। সবাইকে শুকনো খাবার ও মোমবাতি-দিয়াশলাই মজুদ রাখার পাশাপাশি মূল্যবান জিনিসপত্র নিয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে যাওয়ার প্রস্তুতি নিতে আহ্বান জানানো হচ্ছিলো।
ঘূর্ণিঝড়ের আগাম সতর্কতা হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দরে জারি করা হয়েছে দুই মাত্রার সতর্কতা (এলার্ট-২)। বহির্নোঙরে অবস্থানরত বড় জাহাজগুলোতে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।
বন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, বহির্নোঙরে বর্তমানে ৪০টি জাহাজ রয়েছে।
এছাড়া জেটিতে বাঁধা রয়েছে ২১টি জাহাজ।
চট্টগ্রামে ঝড় সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য পেতে ও দিতে কয়েকটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে। নম্বরগুলো হচ্ছে- চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন- ০১৭১১ ৩৭২৮৬০, ০৩১-৬১১৫৪৫, চট্টগ্রাম সিটি করপেরেশন- ০৩১-৬৩০৭৩৯, ০৩১-৬৩৩৬৪৯, চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ- ০৩১-২৫১০৮৩৯, ০৩১-২৫১০৮৬৬, রেডক্রিসেন্ট- ০১৮১৭ ৭১৭৫৭২, ০১৫৫৪ ৩৩৭৩৩০।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।