আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক, দুই, তিন তালাক এবং চতুর্থ বিয়ে হিল্লা (৩)

মিলে মিশে করি কাজ, হারি জিতি নাহি লাজ!

প্রথম পর্ব দ্বিতীয় পর্ব ৪। একসাথে তিন তালাক দেয়াঃ Dawud :: Book 12 : Hadith 2194 Narrated Abdullah ibn Abbas: Tawus said: AbusSahba' said to Ibn Abbas: Do you know that a divorce by three pronouncements was made a single one during the time of the Prophet (peace_be_upon_him), and of AbuBakr and in the early days of the caliphate of Umar? He replied: Yes. Muslim :: Book 9 : Hadith 3493 Abu al-Sahba' said to Ibn 'Abbas: Enlighten us with your information whether the three divorces (pronounced at one and the same time) were not treated as one during the lifetime of Allah's Messenger (may peace be upon him) and Abu Bakr. He said: It was in fact so, but when during the caliphate of 'Umar (Allah be pleased with him) people began to pronounce divorce frequently, he allowed them to do so (to treat pronouncements of three divorces in a single breath as one). কাছাকাছি রকমের আরো কিছু হাদীস মুসলিম ও আবু দাউদ শরীফে আছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে রাসূল(সাঃ), আবু বকর(রাঃ) এবং উমর(রাঃ)-র শাসনামলের প্রথম দিকে একসাথে তিন তালাক উচ্চারণ করলেও এক তালাক ধরা হতো। কিন্তু পরবর্তীতে ঊমর(রাঃ)-র সময়ে লোকজন যখন প্রায়শই তালাক দিতে চাইতো, তাড়াহুড়ো করতে চাইতো এবং প্রথম স্ত্রীকে পুরোপুরি ছেড়ে দেয়ার পক্ষেই তাদের প্রবণতা দেখতে পেয়ে একসাথে তিনবার উচ্চারিত তালাক থেকে একবারে তিন তালাক হয়ে যাওয়ার প্রচলন শুরু করা হয়। পরবর্তীতে সেটা এতোই জনপ্রিয়তা পায় যে বিভিন্ন ফিকহবিদের হাত ধরে, বিভিন্ন মাজহাবের মাঝ দিয়ে এটাই আজ আমাদের সমাজে বহুল প্রচলিত মত। রাসূল(সাঃ) এর সময়েও কিছু একসাথে তিন তালাকের ঘটনা ঘটেছে (উপরে বর্ণিত ফাতিমা বিনতে কায়েসের ঘটনাটিও সেরকম একটি ঘটনা), যেটা জানতে পেরে রাসূল(সাঃ) খুব রেগে গিয়েছিলেন এবং ভীষণভাবে অপছন্দ করেছিলেন, বলেছিলেন তোমরা আল্লাহ্‌র দেয়া বিধানকে খেলাচ্ছলে ব্যবহার করছো? তবে সে তালাকগুলো কার্যকর হয়েছিল।

৫ নং রেফারেন্স লিঙ্কে এরকম দু একটি হাদীসের কথা বলা আছে। উমর(রাঃ)-র সময়ে বিশেষ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়াও নিষেধ করা হয়েছিল, সেটাও আরেকটি বহুল প্রচলিত মত হিসেবে সারা বিশ্বসহ এ বাংলাদেশেও পরিচিত এবং চর্চিত। আমাদের অনেক আলেমদেরই পছন্দ নারীদের ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে থাকতে। যদি আজকাল অনেক দেশেই নারীরা মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ছে, বাংলাদেশে খুব অল্পভাবে চালু আছে নারীদের মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়ার ব্যাপারটি। তবে ধীরে ধীরে এ চর্চাটি বাড়ছে, কারণ আমরা রাসূল(সাঃ)-এর সুন্নাহ্‌কেই বেশি অনুসরণ করতে চাই।

তাই এক সাথে তিন তালাক উচ্চারণে নিরুৎসাহিত করা (যা তাক্‌ওয়ার অন্তর্ভুক্ত নয়), কঠোরভাবে নিষেধ করা এবং সেটাকে এক তালাক হিসেবে গণ্য করাটাকেই অনেক বেশি সুন্নাহ কাছাকাছি যাওয়া বলে মনে হয়। আমাদের বিজ্ঞ আলেমগণ নিশ্চয়ই দেখতে পান যে এক সাথে তিন তালাক হলে পরে একজন নারী কি পরিমাণ ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। এবং এর থেকে হীন সুযোগ নিয়ে আমাদের দেশে গ্রামে গঞ্জে মাঝে মাঝেই চুক্তিভিত্তিক মারাত্মক বর্বর আর অশ্লীল হিল্লা বিয়ে সংঘটিত হচ্ছে। এখানে আরেকটি কথা বলে রাখা ভাল ইসলামী আদালত ছাড়া যে কেউ যখন তখন কোন ফতোয়া কার্যকর করতে পারে না, তবুও ফতোয়ার নানা রকমের অপব্যবহার এবং বেআইনীভাবে অপপ্রয়োগ হয়ে আসছিল আমাদের দেশে। আশার কথা এই যে আমাদের বিজ্ঞ আদালত যত্রতত্র ফতোয়া দেয়া নিষিদ্ধ করেছেন।

নারীর তালাক প্রদানের ক্ষমতাঃ ইসলামী শরীয়তে সাধারণত স্বামী স্ত্রীকে তালাক দেয়ার ক্ষমতা অর্পণ করতে পারেন। আমরা দেখি যে রাসূল(সাঃ) আল্লাহ্‌তাআলার নির্দেশে তাঁর স্ত্রীদের তাঁকে তালাক দেয়ার অপশন দিয়েছিলেন এবং প্রথম অপশন দিয়েছিলেন আয়েশা(রাঃ)কে। সূরা আহযাবঃ ২৮। হে নবী, আপনার পত্নীগণকে বলুন, তোমরা যদি পার্থিব জীবন ও তার বিলাসিতা কামনা কর, তবে আস, আমি তোমাদের ভোগের ব্যবস্থা করে দেই এবং উত্তম পন্থায় তোমাদের বিদায় নেই। ২৯।

পক্ষান্তরে যদি তোমরা আল্লাহ, তাঁর রসূল ও পরকাল কামনা কর, তবে তোমাদের সৎকর্মপরায়ণদের জন্য আল্লাহ মহা পুরস্কার প্রস্তুত করে রেখেছেন। Bukhari :: Book 7 :: Volume 63 :: Hadith 189 Narrated Musruq: I asked 'Aisha about the option: She said, "The Prophet gave us the option. Do you think that option was considered as a divorce?" I said, "It matters little to me if I give my wife the option once or a hundred times after she has chosen me." এখানে আমি আরেকটু বলে রাখি, আমাদের দেশে বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন আইনেও নারীরা স্বামী কর্তৃক তালাক প্রদানের ক্ষমতা পান যদি সে অপশনের কথা নিকাহনামায় উল্লেখ থাকে। যেসব নারীরা ভবিষ্যতে বিয়ে করবেন তারা অবশ্যই তাদের বিয়েতে নিকাহনামা সাইন করার আগে ১৮ নম্বর অপশনটি চেক করে নিবেন যে আপনাকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে কিনা। আমাদের দেশে অনেক শিক্ষিত নারীরাও এ ব্যাপারে সচেতন নন। এ সুবিধা না পাওয়ার ফলে অনেক নারীই পরবর্তিতে ভোগান্তির স্বীকার হন বলে সরকারী কাজিদের বাই ডিফল্ট ঐ অপশন দিয়ে দিতে বলা হয়।

তবুও নিজেদের চেক করে নেয়া ভাল। জুডিশিয়াল ডিভোর্সঃ আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী নানা কারণে স্ত্রীরা আদালতে গিয়ে ডিভোর্স চাইতে পারেন। যেমন, ১। দীর্ধদিন ধরে স্বামীর অনুপস্থিতি (চার বছর), ২। দুই বছর পর্যন্ত টানা ভরণপোষণ না দেয়া, ৩।

স্বামী বহুবিবাহ সংক্রান্ত চুক্তি ভঙ্গ করলে, ৪। স্বামীর যৌন অক্ষমতা, ৫। স্বামীর সাত বছরের জেল হলে, ৬। স্বামী কর্তৃক নির্যাতন ইত্যাদি। এছাড়া স্বামীর কন্সেন্ট ব্যতীত জুডিশিয়াল খুলা তালাকের অপশনও আছে।

তবে সেক্ষেত্রে স্বামী আর্থিক দায়িত্ব থেকে মুক্তি পাবেন। কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ /sb] ১। G-45, G-46, Islamic Teaching Course, vol 3 (Social System of Islam) Jamal A. Badawi, Ph.D. Click This Link ২। The Status Of Women In Islam by Dr.Yusuf Al Qaradawy Click This Link ৩। সংক্ষেপে এক নজরে তালাকের ব্যাপারটা পুরোটা বুঝতে Click This Link ৪।

বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মালিকী মুয়াত্তা, আবু দাউদ, Click This Link ৫। Click This Link ৬। মুসলিম পারিবারিক আইন Click This Link আপডেটঃ মুসলিম, হিন্দু ও খ্রিস্টান নারীর তালাকের আইন ও অধিকার নিয়ে খুঁটিনাটি বিস্তারিত তথ্যসহ একটা চমৎকার সাইট পেলাম। অবলম্বন

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।