বর্তমান সময়ে দেশের অন্যতম শীর্ষ মডেল ও টিভি অভিনেত্রী প্রভার বাস্তব জীবনের কিছু ঘটনা গত কয়েকদিন ধরেই ব্লগের আলোচিত বিষয়গুলোর মধ্যে শীর্ষে। নানা জনের নানা মত, নানা মন্তব্য। শুনতে শুনতে কেউ বিরক্ত, কেউ আবার মজা পাচ্ছেন দেদারসে। কথা উঠেছে সমাজ বাস্তবতা কিংবা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে একজন নারীর সম্মানহানীতে কে কিভাবে কতটুকু মজা পাচ্ছেন বা আহত হচ্ছেন তা নিয়েও। এরই মধ্যে একজন সম্মানিত প্রমীলা ব্লগার (কথাটি কি জেন্ডার সেনসিটিভ কি-না তা বুঝতে পারছি না, হলে মাফ চেয়ে নিচ্ছি) একটি ব্লগ লিখেছেন।
তার ব্লগটি দেখলাম কিন্তু আমার কিছু কথা থাকলেও লিখতে পারলাম না, কারণ সেকানে তিনি কোন লেখা গ্রহণ করবেন না। বাধ্য হয়েই না বলা এই কথাগুলো নিয়ে এই পোস্ট। এটি মেঘবালিকা নামের সেই ব্লগার আপুর উপলব্ধির জবাব অথবা নতুন কিছু ইপলব্ধি দুটোই ধরে নিতে পারেন।
মেঘবালিকার লেকাটি এখানে,
Click This Link
আজকের বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী নারী, বিরোধী দলীয় নেত্রী নারী, স্বরাষ্ট্র কিংবা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোও যোগ্যতাবলে (দুর্মুখেরা আবার যোগ্যতার প্রশ্নে কিছু উটকো প্রশ্ন টানেন, সেদিকে এখন মনোযোগ না দেয়াটাই বাঞ্ছনীয়) তাদের অধীনে। এই দেশে মিডিয়াগুলো এখন নারীবাদীতায় মুখরিত, জাতীয়-বিজাতীয় সংস্থা সংগঠন নারী অধিকার সংরক্ষণ করার বিষয়টিকেই যেন উন্নয়নের মূলমন্ত্র হিসেবে ধরে নিয়েছে।
তারপরও নারীদের অবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে না-কারণ হিসেবে প্রায় সব নারীবাদীই উল্লেখ করেন সমাজব্যবস্থার পুরুষতান্ত্রিক চরিত্রকে। এটা নিয়েও আবার বহুমুখী আলাচনার অবকাশ রয়েছে। সেদিকে গেলে পাঠকের মনোযোগ ধরে রাখা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াবে। তাই প্রভার ঘটনা এবং মেঘবালিকার উপলব্ধি এবং আমার জবাব নিয়েই পরে থাকি।
ইভটিজিং বর্তমানের সামাজিক ইস্যুগুলোর মধ্যে প্রধানতম একটি।
নারীপ্রধান রাষ্ট্রকাঠামোর ভেতর থেকেও এই অবস্থা যেন মেনে নেবার মত নয়। তাই কোন ছেলে (পুরুষ অর্থে, কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কমবয়সীরাই এগুলোর নায়ক) কোন মেয়েকে যদি ফ্লার্ট করে সেটিও যেমন টিজিং আবার কোন ছেলে যদি কোন মেয়েকে বাজে কথা বলে সেটিও টিজিং। ধরণ বোঝা মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোন মেয়েকে রাস্তায় কিংবা ফোনে উত্যক্ত করাও যেমন টিজিং, তেমনি হঠাৎ করে দীর্ঘদিনের (অল্পদিনেরও হতে পারে) প্রেম অস্বীকার করলে তা নিয়ে কোন কথা বললে তাও টিজিং। আজব এক টিজিং সোসাইটিতে আমাদের বাস।
কোন ছেলে কোন মেয়ের প্রেম অস্বীকার করলে যদি মেয়েটি আত্মহত্যা করে বসে তবে তাকেও যেমন আইনের হাতে তুলে দিয়ে জীবন শেষ করার ব্যবস্থা আছে, তেমনি একই মেয়ে যদি একই সম্পর্ক হঠাৎ অস্বীকার করে তবে ছেলেটির প্রেম ফিরে পাবার কিংবা প্রকাশের কোন চেষ্টাও আইনের চোখে দন্ডনীয় হয়ে যায়। বাহ্ নারীবাদী সমাজ ব্যবস্থার কি সম্যক চিত্র আমাদের! উদাহরণ দিতে হবে? সম্প্রতি উত্তরায় টিজিংয়ের কারণে যে পুলিশ অ্যাসল্টের ঘটনাটি ঘটল সেখানে ছেলেটির সাথে মেয়েটির যোগাযোগ এবং সম্পর্ক দীর্ঘদিনের বলেই মেয়ের আচরণ এবং আশেপাশের লোকদের কথায় প্রমাণিত। এরকম উদাহরণ আরো আছে, দিতে গেলে অনেক লম্বা হয়ে যায়।
আসি প্রভার কথায়। রাজীব যেটা করল সেটি অপরাধ, কিন্তু প্রভা যেটা করল সেটি কি? প্রশ্নটি নারীবাদী পুরুষদের এবং অধিকার পাচ্ছি না বলে চেঁচাতে থাকা নারীদের প্রতি।
রাজীব যদি আত্মহত্যা করে বসত তা-কি সমাজ কিংবা রাষ্ট্রের কাছে এডাম টিজিং নামে পরিচিত হয়ে নায়িকার অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হত? রাজীবদের অপরাধের কথা সবাই বলবে কিন্তু প্রভাদের যাচ্ছেতাই আচরণ এবং জীবনাচরণের কথা কোথাও বলা যাবে না, এই কি নারীবাদী সমাজব্যবস্থার রূপরেখা? একই অপরাধ একটি ছেলে করলে তার ফাঁসি পর্যন্ত হবে অথচ একজন নারী করলে তা সাধারণ ভুল হিসেবে বিবেচিত হবে-এই যদি নারীবাদীত্বের রূপ হয় তবে আমি বিরুদ্ধে অবস্থান নেবার ঘোষনা দিচ্ছি প্রকাশ্যে। যে ভিডিও এবং স্টিল ছবিগুলো প্রভা রাজীবের অনৈতিক সম্পর্ককে তুলে ধরেছে সেগুলো যদি আজকের অবস্থার বিপরীত ঘটনা ঘটত তবে কি তা প্রেমের ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের জন্য প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারত না(কোন মেয়ে তা প্রকাশ করত কি-না সে প্রশ্নের উত্তরে আলোচনা অন্য দিকে মোড় নেবে)? এরকম ঘটনা কি দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ঘটছে না? এর প্রতিকার কি?
তাই বলি সম অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। ছেলে কিংবা মেয়ে যেই হোন সম্পর্ক তৈরি কিংবা ধরে রাখার ক্ষেত্রে দায়িত্ব হোন। আজ প্রভার আজকের পরিণতির জন্য তার দায় অস্বীকার করে শুধু রাজীবের অন্যায়কেই একপাক্ষিতভাবে তুলে ধরা হলেও তা সবক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে।
আর মেঘবালিকাকে সম্মানের সাথেই বলছি, সালমান খান কিংবা টম ক্রুজের ভালগার ছবি পেলে আপনি বা আপনারা কি করতেন জানি না তবে জৈবিক ধরণ অনুসারে প্রভার ভালগার ছবির প্রতি টান থাকা ছেলেদের জন্য অস্বাভাবিক নয়।
হয়তো অনেকের মন্তব্য বাড়াবাড়ি তবে সেই সূত্র ধরে আপনার মতের সাথে মিল না হলেই বিডি বয়েজ সেক হয়ে যাবে এ ধরণের উদ্ধত মন্তব্য করার সাহস দেখানো আপনার উচিত হয়নি। আপনার মত ওহী হিসেবে নাজিল হয়নি, আবার সবাই সমপরিমাণ আস্তিকও নন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।