আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইহা একটি সেবামুলক পোষ্টঃ দাঁত ব্যথাঃ ফিলিং না রুট ক্যানেল

জানার আগ্রহ মানুষের চিরন্তন, বই হলো তার বাহন, আইনের মৃত্যু আছে কিন্তু বইয়ের মৃত্যু নেই।
প্রায় সাত/আট মাস ধরে দাঁতের ব্যথা নিয়ে প্রচন্ড মানসিক যন্ত্রনায় ছিলাম। প্রাথমিক চিকিৎকসা হিসেবে লবণ মিশানো গরম পানি দিয়ে কুলি করেছি তারপরে ও ব্যথা কমেনি.. অবশেষে ডাক্তারের শরনাপন্ন হয়েছি। ডাক্তার ভাল ভাবে চেকআপ না করে ব্যথার জন্য ট্যাবলেট দেন। ট্যাবলেট খাওয়ার পর কিছুক্ষন ভাল লাগলেও আবার ব্যথা করত।

ছুটি নিয়ে দেশে গিয়ে আবার ও ডাক্তারের কাছে গিয়েছি.. স্ক্যালিং ও ফিলিং করে দুবাইতে চলে আসি। ১০/১২ দিন আগে হঠাৎ করে ব্যথা শূরু হলে ডাক্তার সাবিহা সুলতানার (দুবাই) কাছে যায়.. এবার দাঁত এক্সরে করার পর আসল রোগ ধরা পড়ে ..যার কারনে রুট ক্যানেল করতে হচ্ছে। দাঁতের সমস্যা ও ট্রিটমেন্ট বিষয়ে অন-লাইন থেকে অনেক কিছু জানতে পারি। দাঁতের যত্ন কিভাবে নিতে হয় জানতে হলে বিস্তারিত পড়ুন। আশাকরি উপকৃত হবেন ।

দাঁতের সমস্যা ও ট্রিটমেন্ট বিষয়ে অন-লাইনে নিন্মোক্ত সাইটে ভিজিট করুনঃ http://health.evergreenbangla.com/ http://health.amardesh.com/ http://www.susastho.com/ Click This Link http://www.mbbsdoctor.com/Disease/Mouth/ http://healthz.info/ http://sasthabangla.com/ দাঁত ব্যথাঃ ফিলিং না রুট ক্যানেল কিভাবে রুট ক্যানেল করা হয় ভিডিওতে দেখুন ‘ডাক্তার সাহের দাঁতে প্রচণ্ড ব্যথা, নাওয়া-খাওয়া আজ ৩ দিন যাবৎ বন্ধ হয়ে গেছে, একটু ফিলিং করে দেনতো। ’ আমাদের দেশে বেশিরভাগ রোগীর মুখেই এই কথাটি শোন যায়। তবে এ কথাটির মধ্যে যে ভুলটি রয়েছে, তা হলো দাঁতের সঠিক চিকিৎসা সম্বন্ধে রোগীর ভুল ধারণা। আর এই ধারণাটি হল দাঁতটিতে ফিলিং করা হবে নাকি রুট ক্যানেল করা হবে। দাঁতে তিনটি স্তর থাকে।

প্রথম স্তর এনামেল, দ্বিতীয় স্তর ডেন্টিন এবং সর্বশেষ এবং মাঝের স্তরের নাম পাল্প বা দন্তমজ্জা। যখন দাঁতে ক্যারিজ বা দন্তক্ষয় হতে শুরু করে তখন প্রথমে তা এনামেল দিয়ে শুরু করে যথাক্রমে নিচের দিকে বিস্তার লাভ করে। এই দন্তক্ষয় যখন ডেন্টিন পর্যন্ত পৌঁছায় তখন দাঁতে ফিলিং দিয়ে দাঁতটি সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। এক্ষেত্রেও কথা আছে যদি দেখা যায় দাঁতটি বেশি Sensative -এর প্রায় দন্তমজ্জার কাছাকাছি তখন দাঁতে ফিলিং এর নিচে Subbase হিসাবে এরকম material দেয়া হয় যাতে ঠান্ডা, গরম এবং অন্যান্য খাবারের অনুভূতি বেশি না হয় এবং Secondary Dentine Form করে দন্তমজ্জা রক্ষা করে। তারপর Permanant Filling দিয়ে দেয়া হয়।

কিন্তু যদি দেখা যায় দাঁতের সংক্রমণ ডেন্টিনকে ছাড়িয়ে Pulp বা দন্তমজ্জাকে ছুঁয়ে গেছে সেক্ষেত্রে আর Filling করা চলবে না। যদি কেউ ভুল করে কোন ফিলিং দেয়, তবে সেখানে ব্যথা আরো বেশি হবে দাঁতের মধ্যকার পচন ব‘গুলো বাইরে বের হতে না পেরে দাঁতের গোড়া দিয়ে জমা হবে এবং তা ফুলে যেতে পারে এবং Sincus দিয়ে তার পুঁজ বের হয়ে আসবে। যা হোক এ ক্ষেত্রে তখন Patient-এর সংশিস্নষ্ট দাঁতে Root Canal করতে হবে। Root Canal হচ্ছে ঐ দাঁতের উপযুক্ত Treatment এক্ষেত্রে Root Canal -এর আগে ঐ দাঁতের একটা এক্সরে করে দাঁতের অবস্থা সম্বন্ধে ভালভাবে বুঝে নিতে হবে। প্রিয় পাঠকবৃন্দ এবারে বুঝলেন তো রুট ক্যানেল এবং ফিলিং-এর পার্থক্য।

রোগী তো আর জানেন না তার দাঁতের উপযুক্ত চিকিৎসা কোনটি তাই এটা আমরা যারা ডেন্টাল সার্জন আছি, তারাই বুঝব রোগীর দাঁতের কাজ কি হবে। তবে বর্তমানে অনেক কোয়াক আছে যারা নিজেকে ডাক্তার বলে দাবি করে, তাদের কাছে না গিয়ে একজন ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিয়ে আপনার দাঁতের সুচিকিৎসা করান। সময় থাকতে দাঁতকে বাঁচান-দাঁতকে মর্যাদা দিন। ———————— ডাঃ নাহিদ ফারজানা, সিনিয়র লেকচারাল, সিটি ডেন্টাল কলেজ এন্ড হস্পিটাল, চেম্বারঃ নাহিদ ডেন্টাল কেয়ার, ২১৬/বি, এলিফ্যান্ট রোড, ঢাকা-১২০৫। দৈনিক ইত্তেফাক, ১২ এপ্রিল ২০০৮ =========================================== মুখ ও দাঁতের যত্ন নেবেন কিভাবে সুস্থ সবল দেহের জন্য দাঁত ও মাড়ি তথা মুখের স্বাস্থ্য ভালো রাখা একান- প্রয়োজন।

দাঁত ও মুখের ভেতরের স্বাস্থ্যকে অবহেলা করে নিরোগ জীবন আশা করা যায় না। মুখ ও দাঁতের যত্নে করণীয় উপদেশ, সবার জন্য সাধারণ উপদেশ: ০ প্রতিদিন সকালে এবং রাতে ঘুমাবার আগে টুথপেস্ট ও ব্রাশ দিয়ে ওপরের দাঁত ওপর থেকে নিচে এবং নিচের দাঁত নিচ থেকে ওপরের দিকে এবং দাঁতের ভেতর দিকেও মাজবেন। ০ ফ্লুরাইড দেয় যে কোনো টুথপেস্ট দাঁতের জন্য উপকারী। দু-তিন মাস অন-র টুথপেস্ট ও ব্রান্ড বদলাবেন, কারণ বিভিন্ন পেস্টে বিভিন্ন ধরনের উপাদান থাকে। ০ যেসব জায়গা ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করা সম্ভব নয় সেসব জায়গায় ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহার করবেন।

০ কয়লা, গুল, টুথ পাউডার, ছাই, মাটি, গাছের ডাল ইত্যাদি ব্যবহার নিষেধ। ০ অত্যধিক পান-সুপারি খাবেন না- এতে দাঁত ক্ষয় হয়ে যায়। ০ বিড়ি-সিগারেট খাবেন না- এতে মুখ ও দাঁতের ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ০ বিশেষ বিশেষ খাদ্য যেমন-পাউরুটি, বিস্কুট, কেক, লজেন্স, আইসক্রিম ইত্যাদি খাওয়ার পর উত্তমরূপে দাঁত পরিষ্কার করবেন। ০ ঘুমানোর আগে এবং খাবারের মাঝে কখনো বিস্কুট, কেক, টফি লজেন্স খাবেন না, আর খেলেও ভালো করে দাঁত পরিষ্কার করে ফেলবেন।

০ হাঁ করে ঘুমানোর অভ্যাস হলে তা পরিহার করবেন, কারণ হাঁ করে ঘুমানোর ফলে মুখে ও দাঁতের রোগ বেড়ে যায়। মা ও শিশুদের জন্য উপদেশ: ০ মায়ের দুধ শিশুদের শরীর ও দাঁতের আদর্শ খাদ্য। যেসব মা শিশুদেরকে ফিডার দিয়ে দুধপান করান, তারা একই নিপল দীর্ঘদিন ব্যবহার করবেন না। ঘুমের মধ্যে শিশুদেরকে কোনোক্রমেই ফিডার দেবেন না; দিলে দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি হবে। দেড় থেকে দুই বছরের শিশুদেরকে ফিডার ছাড়িয়ে পেয়ালায় দুধপান করার অভ্যাস করান।

০ সময়মতো আপনার ছেলে-মেয়েদের দুধের দাঁত ফেলে দেবেন। নচেত স্থায়ী দাঁত বাঁকা-ত্যাড়া হওয়ার আশঙ্কা থাকে। ০ শিশু-কিশোর-কিশোরী যদি কোনো কারণে আঙুল চোষার অভ্যস্থ হয় সে ক্ষেত্রে ওই অভ্যাস রোধ করতে হবে। অপরাগতায় ডেন্টাল সার্জনের পরামর্শ নিন। নতুবা দাঁত আঁকা-বাঁকা, উঁচু নিচু ও অসামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।

এ ছাড়া মুখের ও চোয়ালের স্বাভাবিক গঠন ব্যাহত ও বেমানান হতে পারে এবং মুখশ্রীর গঠন ব্যাহত হতে পারে। ০ আঁশালো ও শক্ত খাদ্য যেমন-গাজর, পেঁয়ারা, আমড়া, আখ, আনারস, নাশপাতি, আপেল, নারকেল ইত্যাদি দাঁত ও মাঢ়ি সুস্থ থাকতে সাহায্য করে। উপরন- চোয়ালের স্বাভাবিক গঠনে সহায়তা করে। ০ লেবু, আমলকী, কমলা, টমেটো ও বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি ও অন্যান্য ভিটামিন থাকে। ভিটামিন সি দাঁতের ও মাড়ির জন্য উপকারী।

০ গর্ভকালীন মায়েরা টেট্রাসাইক্লিন জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক খাবেন না। কারণ এটি শিশুর দাঁতের মারাত্মক ক্ষতি করে। শিশু জন্মানোর পরেও শিশুকে ওই জাতীয় অ্যান্টিবায়োটিক ১২ বছর পর্যন্ত দেবেন না। কারণ এতে স্থায়ী দাঁতের ক্ষতি হবে। প্রতিরোধ: দাঁত নষ্ট হয় শুধু আমাদের বদ অভ্যাস এবং অনিয়মিত দাঁত পরিষ্কার করার কারণে।

তবে এ কথা সত্য যে, সবারই রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা সমান থাকে না। যারা নিয়মিত দাঁতের যত্ন করেন ও দাঁত নিয়মিত পরীক্ষা করান তারাই ভাগ্যবান। বছরে অন্তত: দু’বার একজন অভিজ্ঞ ডেন্টাল সার্জনের কাছে মুখ ও দাঁত পরীক্ষা করানো ভালো। কারণ দন্তক্ষয় বা ডেন্টাল ক্যারিজ প্রাথমিক অবস্থায় নির্ণয় করা গেলে চিকিৎসা (ফিলিং) করিয়ে দীর্ঘদিন দাঁতটি বাঁচানো সম্ভব। তেমনি মাঢ়ির রোগ (দাঁতের গোড়া দিয়ে রক্ত পড়া) ও প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে স্কেলিং করালে দাঁত নড়ে না বা ফেলে দিতে হয় না।

যাদের দাঁত ইতোমধ্যে নষ্ট হয়ে গেছে তাদের মনে রাখা উচিত দেহের কোনো অংশের যত্ন নেয়ার দরকার বা প্রয়োজন ফুরিয়ে যায় না। অস্বাভাবিক দাঁতকে যে ভাবেই হোক চিকিৎসা করিয়ে টিকিয়ে রাখাই শ্রেয়। আজকাল চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নতির সাথে সাথে দন-চিকিৎসার প্রয়োগ ও প্রসার অনেক গুণে বেড়ে গেছে। তাই একটি মূল্যবান দাঁতকে ফেলে দেয়ার আগে একটু ভেবে দেখা দরকার নয় কি? ডা: অসীম কুমার হালদার ডেন্টাল সার্জন, গরীব নেওয়াজ ক্লিনিক, খুলনা সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, এপ্রিল ১৭, ২০১০ ================================= ইউ এ ই তে প্রায় ৭/৮ লক্ষ বাংলাদেশী বসবাস করছে। কিন্তু ডাক্তারের সংখ্যা খু্বই নগন্য।

ডাক্তার সাবিহা সুলতানা একজন অভিজ্ঞ দন্ত চিকিৎসক। চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি তিনি নিয়মিত লেখালেখি ও গান করে থাকেন। দুবাই প্রবাসী বাংলাদেশী ভাইদের দাঁতের সমস্যা থাকলে ডাক্তার সাবিহা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।