স্বপনের সমাধি খোঁড়া এ জীবন ... মনের গোপন ঘরে যে শ্বাপদ ঘর করে তাকেই লালন করে চলা এ জীবন!
গোমী (ময়লা) ফেলা নিয়ে জাপানীজদের নিয়মকানুন প্রথম প্রথম একটু বাড়াবাড়িই মনে হত। নির্দিষ্ট স্থানে, নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে, নির্দিষ্ট ধরনের ময়লা ফেলতে হবে। তাও আবার যেনতেন ভাবে ফেলে আসলে চলবে না, সিটি অফিসের নির্দিষ্ট পলিথিন ব্যাগে, নির্দিষ্ট উপায়ে প্যাকিং করে ফেলতে হবে (মনে হবে যেন কারো জন্য গিফটের প্যাকেট নিয়ে যাচ্ছি)। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে (না হয়ে উপায় নেই; ঠেলার নাম বাবাজী)। তবে এটা ঠিক, শুধু সিটি অফিসের কড়াকড়ি নিয়ম কানুনই নয়, সাধারন মানুষের সচেতনতার ফলেই জাপান পৃথিবীর পরিচ্ছন্ন দেশ গুলোর অন্যতম।
তবে এই পোষ্টের উদ্দেশ্য একটু ভিন্ন; শুধু নিজের বাসার ময়লা ফেলা নয়, ফ্লাটের আশে পাশের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে এদের একটা জিনিস আমার ভাল লাগে, সেটা আজ শেয়ার করব। আমি যেখানে থাকি সেটাকে দাঞ্চি (সরকারী কোয়ার্টারের মত)বলে। প্রতি মাসের প্রথম রবিবার (সাপ্তাহিক ছুটি) সকাল ৮.০০ টা থেকে ৮.৩০ এখানে বড় সৌজি (পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন)। নির্দিষ্ট সময়ে প্রতি ফ্যামিলি থেকে একজন করে এসে সবাই মিলে বিল্ডিংয়ের আশেপাশে এবং সংলগ্ন ফুটপাত/রাস্তার ময়লা পরিষ্কার করা হয়। ৬ মাসের জন্য একজন লোককে এই কাজের তদারকির দায়িক্ত দেওয়া হয়।
কোন ফ্যামিলি থেকে কোন মাসে কেও না আসতে পারলে জরিমানার ব্যবস্থা আছে, সেই টাকা দিয়ে যন্ত্রপাতি কেনা হয় বা মাঝে মাঝে সামান্য নাস্তার ব্যবস্থাও করা হয়। নিচের ছবি গুলো দেখুনঃ
সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে সবাই কাজে নেমে পড়েছে
খুটাখুটি চলছে পুরাদমে
দেখেন! হাটু গেড়ে লেগে গেছে
ময়লা কুড়িয়ে ব্যাগে ভরা হচ্ছে
কাজ শেষে সবাই মিলে খোশ গল্প, আড্ডা
দলনেতা (কালো গেঞ্জী) সবাইকে ধন্যবাদ দিচ্ছেন
আমি কিন্তু ফাঁকি দেয় নাই! বামপাশের ব্যাগটা আমি ভর্তি করেছি
একটা কথা মনে হলো; যদি আমাদের শহর গুলোতে এই সিষ্টেম চালু করা জেতো! তাহলে ঢাকা শহরকে বিশ্বের বসবাসের অনুপযোগী শহরের কলংক একটু হলেও কমানো যেত। মাসে ৭২০ ঘন্টার মধ্যে যদি একটা বন্ধের দিন আধা ঘন্টা সময় আমাদের বাসস্থান কে বসবাস করার উপোযুক্ত করতে ব্যয় করতে পারতাম ! কিন্তু আমাদের দেশে সেটাকি সম্ভব? ময়লা পরিষ্কার করার সব দায়িক্ত আমরা সিটি করপোরেশন আর কাজের মেয়েদের উপর দিয়ে রেখেছি। জাতিগত ভাবে আমরা নিজেদের কাজ অন্যের দিয়ে করিয়ে নিতে পারাকে স্টাটাস গন্য করি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।