আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইউনাইটেড-২

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

হাসপাতালে যেতে রাজি হওয়ায় উল্টো বিপদে পড়লাম। উৎকট লিপস্টিক, মাঝরাতেও হালকা মেক-আপ আর পোষাকের শ্রী দেখে যে কেউ বুঝে নেবে ভাসমান পতিতা। বললাম, ওকে, লিপস্টিক ও মেকআপ মুছে, ওড়নাটা বুকের উপরে ভদ্রলোকের মত দেও! মেয়েটি হাতের তালু দিয়ে লিপস্টিক তুলে ফেললো, ওড়নার খুট দিয়ে গালের মেকআপ মুছলো। তারপরেও তার চেহারা চেঞ্জ হলো না। হাঁটতে হাঁটতে বললাম, রুক্ষ্মভাবে কথা বলবে না, কোমলস্বরে এবং শুদ্ধভাবে কথা বলার চেষ্টা করবে! ওখে! সে বললো, হাসলো।

তারপরে আমাকে অবাক করে দিয়ে বললো, নাহ - থাউক, আমি যাইগা! আমি বললাম, কেনো? পাবলিক দেইখ্খা টিটকারী মারবে! উল্টো দিকে ঘুরে হাঁটা শুরু করলো। বললাম, তোমাদের ব্লাড টেস্ট করার জন্য তো অনেক ক্লিনিক আছে! সেখানে টেস্ট করাতে পারো না? সে ঘুরে দাড়িয়ে বললো, সেখানে তো যাই রেগুলার, তয় ভাবছিনাম একটু দামি হাসপাতালে টেস্ট করাইয়া দেহি! ক্লিনিকের উপরে ভরসা নাই? সে বললো, আছে, কিন্তু কেমন যেনো আটকা লাগে। থাউকগা, যান গা ভাই...আমি যাই! ততক্ষণে মেয়েটি আমার চোখে সয়ে এসেছে। যৌনকর্মী মনে হচ্ছে না। বললাম, চলো, কেউ টিটকারী মারবে না! এবার তাকে একটু কনফিউজড মনে হলো।

সে বললো, একটু পরে সেহেরীর জন্য লোকজন উঠবে। বাসার ক্ষেপ পাইতে পারি! না কাজ কইরা কেন শুধু শুধু টাকা দিবেন? খুদা হাফেজ! আটকালাম না। বেঁচে গেছি। তবে এই সেদিন পর্যন্ত যৌনকর্মীদের অস্পৃশ্য মনে হতো, একধরণের ঘৃণাবোধ কাজ করতো। কোন প্রকার সংস্পর্শে বা কথা বললেও নিজের কুলীণতা বিপন্ন হবে ভাবতাম।

সেটা এখন আর প্রবল নয়। যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে আমাদের অফিসের কাজ আছে বলে অচ্ছ্যুৎ ভাবটা গেছে। এখন জানি পুরুষদের জন্যই যৌনপেশার উৎপত্তি। এই মেয়েটি দায়ী নয়। নারীর এই ক্ষুন্নিবৃত্তিকে কেবল কদর্যভাবে উপভোগ করছে পুরুষ।

দি-শেষ

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।