আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

M1 Abrams - স্ট্যান্ডার্ড মেইন ব্যাটেল ট্যাংক অব আমেরিকা

অলস মস্তিস্ক বহু বান্দরামীর উর্বর ভূমি
M1 Abrams আমেরিকার সব বাহিনীর জন্য স্ট্যান্ডার্ড মেইন ব্যাটেল ট্যাংক। এটি একটি থার্ড জেনারেশন মেইন ব্যাটেল ট্যান্ক বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ট্যাংক । এই ট্যাংকের জন্ম ইতিহাস বেশ প্যাচানো। ২য় বিশ্বযুদ্ধের পর কোল্ড ওয়ারের সময় আমেরিকা ১৯৬০ এর দশকে এসে তার পুরোনো মডেলের ট্যাংক গুলোর সীমাবদ্ধতা টের পেতে শুরু করে এবং তারা নতুন মডেল তৈরির জন্য গবেষনা শুরু করে। এর মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন তাদের নতুন ট্যাংক T-62 কে সার্ভিসে আনে যাতে অটো শেল লোডিং ,উন্নত আর্মার ছিলো।

এই ঘহটনায় আমেরিকা তাদের গবেষনায় আরো জোর দেয়। সে সময় আমেরিকা এবং পশ্চিম জার্মানী একত্রিত হয়ে তৈরি করে MBT-70 যা ছিলো মূলত জার্মান প্যান্জার এবং আমেরিকান এম ৬০ ট্যাংকের উন্নত সংস্করন। MBT-70 প্রটোটাইপ টেষ্টিং এর আগ পর্যন্ত আমেরিকা এবং পশ্চিম জার্মানী MBT-70 এর ব্যাপারে বেশ উচ্চাকাংখা পোষন করেছিলো। কিন্তু প্রটোটাইপ টেষ্টিং এ দেখা গেলো MBT-70 এর মান কোন মতেই T-62 এর ধারে কাছে নাই । পরে সেই প্রযেক্ট বাতিল ঘোষনা করা হয়।

পরে ইউ এস আর্মি XM803 নামে একটি প্রযেক্টে MBT-70 এর ডাটা গুলো ব্যবহার করে এবং XM1 Abrams নামে একটা ট্যাংকের ডিজাইন কমপ্লিট করে। এবং আরও উন্নয়নের জন্য ১৯৭৬ সালে এই ডিজাইনের প্রটোটাইপ Chrysler Defense and General Motors এর কাছে পাঠানো হয়। এবং সেখান থেকেই ১৯৮০ নাগাদ সার্ভিসে আসে M1 Abrams। তবে ইউএস আর্মির মতোই জার্মানরাও MBT-70 এর ডাটা গুলো ব্যবহার করে তৈরি করে Leopard 2 । এজন্য এই দুই ধরনের ট্যাংকের বেসিক ডিজাইন প্রায় এক।

M1 Abrams বলতে গেলে প্রায় সব দিক থেকেই অসাধারন। এতে ব্যাবহৃত হয়েছে Honeywell AGT1500C gas turbine engine যা যে কোন পরিবেশে তীব্র ঠান্ডা কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের গরম পরিবেশেও বিনা দ্বিধায় চলতে সক্ষম। M1 Abrams এর মাল্টি লেভেল আর্মার কে বলা হয় বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী আর্মার। এই আর্মার তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে বিভিন্ন ধরনের সিরামিকস,স্টীল,প্লাস্টিক কম্পোজিট,কেভলার এর মতো পদার্থ। ১৯৮৭ সালে এর আর্মারে যোগ করা ডিপ্লেটেড ইউরেনিয়াম শিল্ড।

১৯৮০ সালের M1 Abrams এর মেইনগান ছিলো ১০৫ এমএম । পরে তা পরিবর্তন করে ১২০ এমএম মেইনগান সংযোজন করা হয়। এর মেইনগান ফায়ারিং এ এইম করার জন্য আছে লেজার গাইডেড সিষ্টেম। এতে ব্যবহৃত হয়েছে এডভ্যান্স ব্যালেন্স সিষ্টেম যা কিনা ভালো ঝাকুনির মাঝেও সঠিক এইম নিশ্চিত করে। এই দুই সমন্বয়ে এর অ্যাকুরেসি অন্য যে কোন ট্যান্কের চেয়ে উন্নত।

M1 Abrams এর মেইনগান ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরতে পারে। এবং এর ইন্টারনাল সাইট ভিউ হিসাবে আছে হিট সিকিং ইনফ্রারেড সেন্সর যা এর আশেপাশে প্রায় ১.৫ কি.মি. এর মধ্যে থাকা অট্যাকেবল সকল কিছুকে ডিটেক্ট করতে পারে। এতে ২ টা জয়ষ্টিক কন্ট্রোলড ৭.৬৬ এমএম মেশিনগান আছে যা ট্যাংকের ভেতর থেকেই অপারেট করা যায়। এ ছাড়া আছে স্মোক জেনারেটর যার ফলে এই ট্যাংকে কে স্মোক গ্রেনেড এর উপর নির্ভর করতে হয় নাহ। কোন দুর্ঘটনা এড়াতে এর ভেতরে ফায়ারিং শেল রাখার জন্য আছে আলাদা চেম্বার ।

বিবরণ: ডিজাইনার : US Army,Chrysler Defense & General Motors ভর : ৬৮ টন ইন্জিন: ১৫০০ হর্স পাওয়ার (১, ১২০ কিলোওয়াট) গ্যাস টারবাইন ইন্জিন ফুয়েল ক্যাপাসিটি: ১৯০০ লিটার আর্মামেন্ট: মেইনগান: ১২০ এমএম এটিজিএম ক্ষেপনযোগ্য সেকন্ডারি পার্টস: একটি .৫০ ক্যালিবার হেভী মেশিন গান একটা ৭.৬৬ এমএম মেশিনগান (জয়ষ্টিক কন্ট্রোল ) একটা ৭.৬৬ এমএম কোএক্সিয়াল মেশিন গান (জয়ষ্টিক কন্ট্রোল ) ইন্টারনাল স্মোক জেনারেটর অপারেশনাল রেন্জ : ৪৭০ কিলোমিটার ক্রু ম্যান: ৪ জন ক্রু গতি : অফরোড - ৪৯ কি.মি. /ঘন্টা রোড - ৬৯ কি.মি. /ঘন্টা M1 Abrams এর অসুবিধার মাঝে আছে এর দানবাকৃতির ইন্জিন, ১৫০০ হর্স পাওয়ার এর এই ইন্জিন ব্যাপক তাপ উৎপন্ন করে যা কিনা ২-৩ কিলোমিটার দুরের ইনফ্রারেড সেন্সর এও ধরা পড়ে। আর এই ট্যান্কের মেইটেইন্যান্স ও যথেষ্ট ব্যয়বহুল। এছাড়া এই ট্যান্কের জ্বালানী অনুপাতে অপারেশনাল রেন্জ ও যথেষ্ট কম ১৯০০ লিটার = ৪৭০ কিলোমিটার। সার্ভিসে আসার পরে এই ট্যাংক প্রথম ব্যবহার করা হয় ১৯৯০ এ গালফ ওয়ার এর সময়। সে সময় বেশ কিছু ট্যাংক ইরাকিদের হাতে ধ্বংস হলেও উইনিং সাইড এই ট্যাংকের দিকেই যায়।

২০০৩ সালের ইরাক যুদ্ধে মোটামুটি সংখ্যার Abrams হারিয়েছে আমেরিকানরা। শেষ কথায় শক্তিশালী আর্মার থাকা সত্বেও এই ট্যাংক অজেয় নয়। তবে এর পারফরমেন্স এই ট্যাংককে অন্য সব ট্যাংক থেকে আলাদা করে রেখেছে। আমেরিকা এই ট্যাংক কে ২০৫০ সাল পর্যন্ত সার্ভিসে রাখার ঘোষনা দিয়েছে। বিদ্র: বিকাল ৪টায় একবার এই পোষ্ট দিয়েছিলাম ....পরে বানান ঠিক করার জন্য এডিট করতে গিয়ে ভুলে মুছে ফেলুন এ ক্লিকাই ছিলাম তাই আবার পোষ্ট মারিলাম ।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।