( লেখাটি দৈনিক ইত্তেফাকেও এসেছে Click This Link)
মিয়া মুস্তাফিজ: মিশরের কায়রো থেকে শুরু করে সবগুলো শহর আলোকময় হয়ে উঠছে নানা রকম বাতিতে। রমযানকে ঘিরে নতুন গতি পাচ্ছে দেশটির ব্যবসা বাণিজ্যে। ব্যবসায়ীরা খেজুর, ছুলা থেকে শুরু করে রমযানের উপযোগী সব ধরণের খাদ্য সামগ্রী মওজুদ বাড়াচ্ছেন।
মিশরে এ বছর রোজা হয়েছে খুবই গরমের মৌসুমে। এ কারণে অনেক প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য সামগ্রী,ফল এবং পানীয়ের যোগান দিতে হবে অনেক।
তবে মিশর সরকার এক ঘন্টা সময় পিছিয়ে নিয়েছে এই গরমের সাথে ঠিকে থেকে রোজা পালনের জন্য।
রমযানের ইফতার বা খাবারে মিশরের একটা ঐতিহ্য রয়েছে। তাই কায়রোর বাজার গুলোতে কয়েক ডজনের কৃষিজাত খাদ্য পণ্য, ফল, ফলের তৈরী পানীয়, দুগ্ধ, মৃষ্টান্ন থাকা চাই। একজন প্রখ্যাত আরব খাদ্য সমালোচক বললেন মিশরে রমযানের ইফতার বা সেহরী খুবই গুরুত্বপুর্ণ। আরব বিশ্বের কোন নামকরা ব্রান্ড রমযানে অপরিহার্য অথবা কোরআন শরীফে বা রাসুল (সা) কতৃত উল্লেখ করা এমন খাদ্য থাকতে হবে খাবারের টেবিলে।
এছাড়া পাঁচটির অধিক পুষ্টি থাকবে খাদ্যে।
মিশরিয়রা অভিযোগ করেন রমযানে খাদ্য দ্রব্যের দাম নাটকিয়ভাবে বেড়ে গেছে। এ কারণে অনেক পরিবারের বিভিন্ন খাদ্য বা ফলের মিশেলে মিশরের ঐতিহ্যবাহী রমযানের খাবার তৈরী করা কঠিন হয়ে পড়েছে। অবশ্য দৈনিক আল মাশরি বলছে সরকার রমযানে খাদ্য দ্রব্যের দাম না বাড়াতে আইন জারী করেছে। আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন বলেছেন রমযানে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ানোর এই চর্চ্চা ইসলামী শরীয়া আইনে বেআইনী ।
ওদিকে আরব আমিরাতে ১২ আগষ্ট থেকে শুরু হচ্ছে শারজাহ রমজান উৎসব। বাণিজ্যিক প্রসারের পাশাপাশি রমযানে কৃষি ও খাদ্য পণ্যের মেলা বসবে এতে। এছাড়া এটি হলো আরব আমিরাতের ঐতিহ্যবাহী উৎসব যাতে ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বাণ্যিজ্যিক ঐতিহ্য তুলে ধরা হয়। আয়োজক কমিটির আর্ন্তজাতিক পরিচালক আহমেদ আমিন ইমিরেটস নিউজ এজেন্সিকে বলেছেন বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানী উৎসবে প্রতিনিধিত্ব করছে।
কুয়েতের আর্ন্তজার্তিক মেলা কমিটি আয়োজন করেছে রমযানের খাদ্য প্রদর্শনী।
কুয়েতের কৃষি ভিত্তিক কোম্পানী এতে অংশ নিয়েছে। এই প্রদর্শীর উদ্দ্যেশ্য হলো রমযানে সাধারণ মানুষের কাছে তাজা খাদ্য তুলে দেয়া। অন্যদিকে পরিবর্তিত আবহাওয়ায় সঠিক কৃষি নীতির মাধ্যকে কৃষির উন্নয়ন। আর কৃষির মাধ্যমে অর্থনৈতিক সামাজিক ও পারিপার্শিক স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখা।
জর্ড়ানের কৃষি মন্ত্রী সাঈদ মাশরী জর্ড়ান টাইমস কে বলেছেন পর্যাপ্ত যোগান দেয়ায় দেশটিতে হালাল মাংশের দাম রমযানে কমে যাবে।
সাধারণত এক কিলো মাংশের দাম ৯ থেকে ১০ জর্ড়ানিয়ান ডিনার। রমযানে মাংশের দাম ৭ থেকে ৮ ডিনারে বিক্রি হবে। রমযানে দেশটিতে মাংসের বিক্রয় বেড়ে যায় ২০-৩০ শতাংশ । সরকার খামারীদের দাম পুষিয়ে নিয়ে কমাদামে মাংসের যোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।
পুণ্যভুমি সৌদি আরবের খাদ্যভাস শতবছরের ঐতিহ্যগত।
তবে রমজানে উৎসবের আমেজ দেশটিতে । সৌদিদের ইফতার বা সেহরী আয়োজনও রাজকীয়। নানা রকম খাবারের পাশাপাশি গরীবদের খাওয়ানো এবং দান করতে বেশী গুরুত্ব দেন এই মাসে। সৌদি আরবের বাদশা আবদুল্লা বিন আবদুল আজিজ ফিলিপাইনের মুসলিমদের জন্য ১০০ মেট্টিকটন খেজুর উপহার দিয়েছেন। সুনামী আক্রান্ত দেশটির মুসলিমদের প্রতি ভালোবাসার প্রতিদান হিসেবে খেজুর পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সৌদি বাদশার মুখপাত্র।
সৌদিরা পৃথিবীর অন্যতম বয়লার মুরগী আমদানীকারক। বছরে একজন সৌদি গড়ে প্রায় ৮৯ পাউন্ড মুরগি খেয়ে থাকে। রমযানে মুরগির বাজার আরো বেড়ে যায় ।
লেবানন ভিত্তিক একসংবাদ সংস্থা বলেছে রমযান মাসে সৌদি আরবের বাজার মুল্য প্রায় ২০ বিলিয়ন সৌদি রিয়েল যা অন্যন্য মাসের তুলনায় ২০ শতাংশ বেশী।
ওদিকে আলজেরিয়ায় রমযানে কৃষিজাত খাদ্যদ্রব্য,ফল পানীয়, বা মাংসের দাম বৃদ্ধি পাবেনা বলে জানিয়েছেন দেশটির ব্যবসায়িক নেতারা।
রমজানে প্রয়োজনীয় দ্রব্যের পণ্যও মওজুদ রয়েছে পর্যাপ্ত। সুত্র : ভোয়া ডটকম,জর্ডান টাইমস্, গাল্ফ নিউজ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।