যখন একা বসে ভাবি তখন সেই ভাবনাগুলোই গান হয়ে যায়। তারপর গীটারটা হাতে নেই সেই ভাবনাকে সুরের মূর্ছনায় ছড়িয়ে দিতে। এভাবেই চলছে গান, ভাবনা আর বেচে থাকা।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রীতি ম্যাচ দিয়ে ব্রাজিলের নতুন যুগ শুরু করলেন কাল মানো মেনেজেস। ২-০ গোলের জয় দিয়ে শুরু এই যুগ যেন প্রতিশ্রুতি দিল সাম্বার ছন্দ ফিরিয়ে দেওয়ার।
আলেক্সান্দ্রে পাতো আর নেইমার, কার্লোস দুঙ্গার বিশ্বকাপের দলে জায়গা না পাওয়া দুই তরুণের পায়েই নতুন যুগের শুভসূচনা।
স্কোরলাইন অনেক সময় সত্যি কথাটা বলে না। এই স্কোরলাইনটাও তা করেনি। জয়টা দুই গোলের হলেও ব্রাজিলের তরুণ দলটির কাছে যুক্তরাষ্ট্র একেবারেই পাত্তা পায়নি। বল দখল, পাসিং, ড্রিবলিং—সব মিলিয়ে নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে অনন্য এক ব্রাজিলেরই দেখা মিলেছে কাল।
বিশ্বকাপ-ব্যর্থতার দায় নিয়ে সরে যেতে হয়েছে দুঙ্গাকে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন মেনেজেস। দায়িত্ব নিয়ে প্রথম আনুষ্ঠানিক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘ব্রাজিলের মানুষ সুন্দর ফুটবল খেলে দলকে জিততে দেখতে চায়, আশা করি, আমি সেটা উপহার দিতে পারব। ’
প্রথম ম্যাচেই মেনেজেসের দল দারুণ এক জয় এনে ওই প্রতিশ্রুতিকে পূর্ণতা দিয়েছে। ২৮ মিনিটে নেইমারের করা প্রথম গোলটি ছিল দুর্দান্ত এক পরিকল্পনার সফল সমাপ্তি।
যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণ ভেঙেছেন লেফটব্যাক আন্দ্রে সান্তোস। ড্রিবলিংয়ের জাদুতে যুক্তরাষ্ট্রের রক্ষণকে হতবাক করে বাঁ প্রান্ত থেকে তিনি ক্রস করেছিলেন দূরের পোস্টে। নেইমারও দারুণ এক হেডে বল পৌঁছে দেন যুক্তরাষ্ট্রের জালে।
দ্বিতীয় গোলটি ব্রাজিলের সহজাত পাসিং ফুটবলের উদাহরণ। প্রথমার্ধের শেষ মুহূর্তে একেবারে নিজেদের অর্ধ থেকে বল নিয়ে উঠেছিলেন দুই রক্ষণাত্মক মিডফিল্ডার রামিরেস ও লুকাস।
সান্তোস-ত্রয়ী রবিনহো, পাওলো হেনরিকে গানসো ও নেইমারের পা ঘুরে শেষে বল এসেছিল রামিরেসের কাছে। রামিরেসের পাস পাতো ঠান্ডা মাথায় ঠেলে দেন জালে।
দ্বিতীয়ার্ধে আর গোল না হলেও পাতো, নেইমার আর মূল প্লে-মেকারের ভূমিকায় খেলা গানসোরা গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন অনেক। কখনো বারে লেগে বল ফিরেছে, কখনো আবার যুক্তরাষ্ট্রের বদলি গোলরক্ষক ব্র্যাড গুজান করেছেন অসাধারণ সেভ।
আর গোল পাননি ঠিক, তবে পাতো আবার হলুদ জার্সিটা ফিরে পেয়েই খুশি, ‘আমি খেলাটা উপভোগ করেছি।
আবার দলে ফিরতে পেরে আমি খুব খুশি। এমন কুশলী খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলতে পারাটা খুব আনন্দের। তবে আমাদের কঠিন পরিশ্রমও করতে হবে। ’
বয়স মাত্র ১৮ হলেও খেলায় পরিণতির ছাপ আছে নেইমারের। কাল তিনি বুঝিয়েছেন কেন সক্রেটিস-রোমারিওরা তাঁকে বিশ্বকাপের দলে চেয়েছিলেন।
খেলার মতো কথায়ও একই রকম পরিণত সান্তোসের উইঙ্গার, ‘আমাদের দলটিকে অনেক আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে। কোচ শুধু আমাদের বলেছেন ক্লাবে যেমন খেলি এখানেও তেমনই যেন খেলি। ’
দলের খেলায় মুগ্ধ কোচ মেনেজেসও, ‘আসলে আমরা একসঙ্গে অনুশীলন করার খুব একটা সময় পাইনি। তবু দলটাকে সংঘবদ্ধ মনে হয়েছে। আমরা ভালো ফুটবল খেলেছি।
আমরা যে রকম খেলেছি তাতে আমাদের স্টাইল এবং দর্শনটাই ফুটে উঠেছে। ’
আগামী বিশ্বকাপটা হচ্ছে ব্রাজিলে। নিজেদের দেশে সেই বিশ্বকাপের এখনো চার বছর বাকি। এ সময়ের মধ্যে ব্রাজিলের এই দলটি আরও অনেক এগোবে, আর সেটা দেখার জন্যই হয়তো সবাইকে আরও আমন্ত্রণ জানিয়ে রাখলেন ব্রাজিল কোচ, ‘কেবল তো একটা ধাপই এগোলাম আমরা। আরও দেখতে পাবেন।
’ ব্রাজিল ১৯৮২ ও ১৯৮৬ বিশ্বকাপে সর্বশেষ সত্যিকারের রোমাঞ্চকর ও আনন্দদায়ী ফুটবল খেলেছে। মেনেজেস বলেছেন, ওই দর্শনটাই বুকের মধ্যে সযত্নে লালন করছেন তিনি।
উৎসঃ প্রথম আলো
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।