আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তিন্নি-হিল্লোলের আবারও অভিযোগ

সমাজকে বদলানোর জন্য নিজেকে আগে বদলানো প্রয়োজন। আসুন আমরা সবাই বদলে যাই সত্যের আলোয়।

তারকা দম্পতি তিন্নি-হিল্লোলের বিরুদ্ধে এতদিনকার রকমারি অভিযোগের সঙ্গে নতুন করে যোগ হলো আরও একটি। অভিযোগ উঠেছে, তিন্নি-হিল্লোল দম্পতির নানারকম আপত্তিকর আচরণে একরকম জিম্মি জীবনযাপন করছেন উত্তরা তিন নম্বর সেক্টরের সাত নম্বর রোডের নাভানা পার্ক এপার্টমেন্টের বাসিন্দারা। এ এপার্টমেন্টে গেল সাড়ে তিন বছর ধরে ভাড়া থাকছেন তিন্নি-হিল্লোল দম্পতি।

শুধু এপার্টমেন্টের বাসিন্দারাই নন, একই কারণে ভুক্তভোগী আশপাশের এপার্টমেন্টের বাসিন্দারাও। তিন্নি-হিল্লোল ও তাদের বন্ধুবান্ধবদের অসদাচরণের শিকার হয়ে অতিষ্ঠ উক্ত ফ্ল্যাট মালিক সমিতি একাধিকবার তাদের হুঁশিয়ার করেও কোন লাভ হয়নি। অতঃপর গেল ছয় মাস ধরে বার বার বাসা ছাড়ার নোটিশ দিয়েও ব্যর্থ হয়েছেন ওই এপার্টমেনেরট অন্য বাসিন্দারা। জানা যায়, তিন্নি-হিল্লোল বিয়ের পরপরই এ এপার্টমেন্টের ষষ্ঠতলার ৫-এ ফ্ল্যাটে ভাড়াটিয়া হিসেবে সংসার শুরু করেন। ফ্ল্যাটের মালিক আমেরিকায় থাকেন।

যার ফলে অন্য মালিকরাও এ ব্যাপারে সরাসরি কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। আর এসব পরিপ্রেক্ষিতে কোন কূলকিনারা না করতে পেরে গেল ০২-০৬-২০১০ইং তারিখে উক্ত এপার্টমেন্টের আট মালিক এক হয়ে উত্তরা মডেল থানায় একটি জিডি করেন। অন্য দু’জন মালিক আমেরিকায় অবস্থানের কারণে জিডিতে স্বাক্ষর দিতে পারেননি। জিডিতে ফ্ল্যাট মালিকরা লিখিতভাবে তিন্নি-হিল্লোলের নামে বিশদ অভিযোগ তুলে ধরেন। জিডিতে অভিযোগ করা হয়, তিন্নি-হিল্লোল দম্পতি এ ফ্ল্যাট ভাড়া নেয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময় তাদের বাসার গৃহপরিচারিকাকে নানা রকম শারীরিক নির্যাতন করে আসছেন।

মারধরের সময় গৃহপরিচারিকার চিৎকারে আশপাশের লোকজন, এমনকি পথচারীরা পর্যন্ত এপার্টমেন্টের সামনে ভিড় করেন। লিখিত অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ রয়েছে, তিন্নি-হিল্লোল দম্পতি প্রায়ই অধিক রাতে মদ্যপ অবস্থায় এপার্টমেন্টে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা কর্তব্যরত দারোয়ান এবং সুপারভাইজরকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে, নিয়মবহির্ভূতভাবে লিফট চালাতে বাধ্য করেন। এ সময় লিফট ছাড়তে আপত্তি জানালে তাদের এলোপাতাড়ি মারধর করে। ওই অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, গত ০১-০৬-২০১০ তারিখ বেলা প্রায় ১১টার সময় তিন্নি আদনান আদী নামে এক বহিরাগতকে (তিন্নির বয়ফ্রেন্ড) সঙ্গে নিয়ে এপার্টমেন্টে প্রবেশ করে।

এ সময় দায়িত্বরত দারোয়ান আলমগীর, বিল্ডিং সুপারভাইজর সুজন ও ১-এ ফ্ল্যাটের বাবুর্চি হালিমকে তিন্নি জিজ্ঞাসা করে, আমার বয়ফ্রেন্ড এখানে আসা-যাওয়ার ব্যাপারে তোরা নাকি বাধা সৃষ্টি করিস? একথা বলেই তিন্নি ও তার বয়ফ্রেন্ড আদনান গার্ড, সুপারভাইজর, বাবুর্চিকে এলোপাতাড়ি লাথি, কিল, ঘুসি ও জুতাপেটা করে। এ সময় তিন্নি চিৎকার করে বলে, এই বিল্ডিংয়ের কোন মালিক বের হলে কিংবা আমার বয়ফ্রেন্ডদের আসা-যাওয়ায় বাধা দিলে তাদেরকেও এভাবে জুতাপেটা করা হবে। ওই লিখিত অভিযোগপত্রে ফ্ল্যাট মালিকরা আরও অভিযোগ করেন, তিন্নি-হিল্লোলের ফ্ল্যাটে প্রায়ই বিভিন্ন ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চলে, যা নিয়ে আমাদের পড়শিরাও বলাবলি করে। আটজন ফ্ল্যাট মালিকের স্বাক্ষর সংবলিত এ অভিযোগপত্রে তিন্নি-হিল্লোলের ফ্ল্যাটে ঘটে যাওয়া আরও অনেক ঘটনা উল্লেখ করা হয়। একই সঙ্গে বহিরাগত সন্ত্রাসীদের হুমকি-ধমকির কথাও উল্লেখ করা হয়।

ফ্ল্যাট মালিক ও অন্য ভাড়াটিয়াদের নিরাপত্তাহীনতার কথাও বলা হয়। এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফ্ল্যাট মালিক মানবজমিনকে বলেন, সন্ত্রাসীদের হুমকির ভয় তো আছেই, তবে সবচেয়ে বড় ক্ষতিটা হচ্ছে আমাদের সামাজিক অবস্থান। কারণ, আমাদের আশপাশের সবাই এ বাড়িটাকে একটা বালাখানা হিসেবে ভাবছে। সবাই আমাদের নিয়ে মুখ টিপে হাসছে, আড়ালে মসকরা করছে। এই দু’টি মানুষের কর্মকাণ্ডের জন্য আমরা আমাদের সন্তান-সন্ততি নিয়ে আর বাস করতে পারছি না।

সমাজে মুখ দেখাতে পারছি না। এ বিষয়টি সমাধানের জন্য পুলিশ এসেও কিছু করতে পারছে না। কারণ, পুলিশ এবং আমাদেরকে তিন্নি-হিল্লোল একরকম জিম্মি করে রেখেছে সাড়ে তিন বছর ধরে। হিল্লোল হুমকি দিয়ে বলে, আমার মা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি করে। আর তিন্নি বলে, পারলে কিছু করো, আমার বাবা সচিব।

তিনি জানান, হিল্লোল-তিন্নি গত মাসে কথা দিয়েছিল আজকের (দশ আগস্ট) মধ্যে তারা বাসা ছেড়ে দিচ্ছে। বাসা ছাড়ার কথা থাকলেও তেমন কোন আলামত এখন (৯ আগস্ট দুপুর) পর্যন্ত আমরা লক্ষ্য করছি না। এদিকে এ বিষয়ে মতামত জানতে তিন্নি ও হিল্লোলকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে পাওয়া যায়নি। জানা যায়, তিন্নি এক সপ্তাহের জন্য এখন সেন্টমার্টিনে অবস্থান করছেন। আর হিল্লোলের অবস্থান জানা যায়নি।

এদিকে উত্তরা মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর পারভেজ মানবজমিনকে জানান, জিডি করার পর আমরা একবার তিন্নি-হিল্লোল দম্পতিকে বাসা ছেড়ে দেয়ার অনুরোধ করে আসি। প্রয়োজনে আবার যাবো। এ ব্যাপারে বাদীপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারেন। একটা জিডি’র বিপরীতে আমাদের আসলে অনুরোধের বেশি কিছু করার নেই। অন্যদিকে নাভানা পার্ক এপার্টমেন্টের ফ্ল্যাট মালিক ওয়েলফেয়ার সমিতি সূত্রে জানা যায়, আজকের মধ্যে তিন্নি-হিল্লোল বাসা না ছেড়ে দিলে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে।

একইভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে সামাজিকভাবে। সুত্রঃ মানবজমিন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।