আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মাঝ পথে থেমে যাওয়া একজন ইন্জিনিয়ারের জীবন। সকলের সহযোগিতাই এনে দিতে পারে অনাহারে মৃত্যুর প্রহোর গুনতে থাকা জীবনে কিছুটা স্বস্তি। (সর্বশেষ আপডেট)

কিছুই কমুনা.....

সর্বশেষ আপডেট: কামাল সাহেবের বড় ভাইয়ের সাথে কিছুক্ষণ আগে টেলিফোনে কথা হল। ওনাকে ২০ তারিখ (শুক্রবার) ঢাকায় আমন্ত্রণ জানিয়েছি। কিভাবে তার পরিবারকে সাহায্য সহযোগিতা করা যায় এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করব আমরা। তারপর সাহায্যের ধরণ এবং বাজেট নিধারণ করা হবে। পোষ্ট স্টিকি আপাতত না করলোও চলবে।

আপডেট জানানো হবে। আশা রাখি সবাই পাশে থাকবেন। :::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::: অন্য দশ দিনের মতই অফিস থেকে বাবা ফিরলেন। কিন্তু অন্য দশ দিনের মত হাসি মুখে নয়, কিছুটা গম্ভির দেখাচ্ছে বাবাকে। আমার হাতে একটি খাম তুলে দিয়ে বল্লেন... " খামের ভিতর একটি চিঠি আছে, এটা পড়, আর দেখ কি করতে পারিস"।

চিঠিটা পড়তে শুরু করলাম... শ্রদ্ধেয় স্যার, আসসালামু আলাইকুম। আমি মোহাম্মদ কামাল হোসেন (জুনিয়র ইন্জিনিয়ার) ইউনিয়ন এল. পি. গ্যাস লিঃ, মংলা, বসুদ্ধরা গ্রুপ। স্যার, আমার জীবনের শুরু এবং শেষ এই বসুদ্ধরা গ্রুপই। সুস্থ থাকলে আর সকলের মত আমিও আমার গ্রুপকে কিছু দিতে পারতাম। কিন্তু আজ আমি এক অন্য রকম মানুষ।

এক মুহূর্তের দূর্ঘটনায় আমাকে যা দিয়েছে তার ফলেই আজ আমি সম্পূর্ণ পঙ্গু হয়ে অতি কষ্টে আর যন্ত্রণার মধ্যে মৃত্যুর প্রহর গুনছি। স্যার আমি একেবারেই শেষ হয়ে গেছি, শুধুই শরীরের অবনতি। আমার মা ছিল গত ১-৩-২০০৯ তাই এ মারা গেছে। আব্বার বয়সও নব্বইয়ের কাছাকাছি। ভাই-ভাবীরা আছে সবাই যার যার মত আলাদা।

তাদের সংসার চলে না। এখন আমি তাদের পারিবারিক দন্ধ আর বৈরিতার শিকার। আমাকে সাহার্য্য করার মত আর কেউ নেই। মূলত আমি সকলের কাছে একটা ভারী বোঝা হয়ে গেছি। স্যার অফিসে যারা আমার অভিভাবক ছিলেন, শুধু আপনারি আমি খবর জেনেছি।

স্যার আমার সব লজ্জা ত্যাগ করে, আপনার কাছে আমার বিণীতভাবে চাওয়া, ব্যক্তিগতভাবে আপনি , আপনার পরিবার এবং আপনার বর্তমান কর্মস্থল (অফিস) থেকে প্রতি বছর পবিত্র হজ্জ এবং রমজান মাসকে সামনে রেখে যে টাকা পয়সা দান এবং আর্থিক সাহার্য্য দিয়ে থাকেন, আপনার কাছে বিণীত প্রর্থনা করছি, জীবন রক্ষার তাগিদে পারিবারিক, অফিস, ব্যক্তিগত গহবিল থেকে আমাকে সাহার্য্য প্রদানের জন্য। আমাকে সাহর্য্য পাঠাবার ঠিকানা ( মোঃ আফসার আলী, সঞ্চয় হিসাব নং-৫২০৬ জনতা ব্যাংক, বাজার শাখা, পাবনা)। আপনার দেয়া সাহার্য্য আমার জীবনের জন্য একটু হলেও সস্তি বয়ে আনবে। আমি দোয়া করি আল্লাহ যেন আপনাকে সুস্থ রাখেন। ইতি, আপনার স্নেহের মোঃ কামাল হোসেন।

(চিঠির অরিজিনাল কপি এইখানে) খামের ভেতর চারটা ছবিও পেলাম... এটা কামাল সাহেবের ১২ বছর আগের ছবি। একজন টগবগে তরুন সদ্য ইন্জিনিয়ারিং পাশ করে কর্মজীবনে পা দিল। বুক জুড়ে অনেক আশা, সামনে তার শুখী সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ। আর এই হল কামাল সাহেবের বর্তমান অবস্থা। কর্মস্থলে তার মাথায় উপর থেকে ভারী কিছু পড়েছিল।

এতে তার পেছনের হাঁড় ভেঙে যায়। তার পর থেকে শুধুই শারিরীক অবনতি। খোজ নিয়ে জানতে পারি দূর্ঘটনার পর প্রায় ২ বছর বসুন্ধরা গ্রুপ তাকে কিছু টাকা দিয়েছিল। সাধারণত কোন প্রাইভেট কোম্পানি দীর্ঘ সময় ধরে কারো খরচ বহন করে না। তাই ওনাকে সাহায্য করার মত আপাতত কেউ নেই।

কামাল সাহেবের বড় ভাইয়ের সাথে ফোনে যোগাযোগ হয়। কামাল সাহেব বর্তমানে শারীরিক ভাবে পুরোপুরি অক্ষম। কোন কিছু করে চলতে পারবে, এমন অবস্থা তার নেই। তিনি এখন সকলের কাছে বোঝা হয়ে আছেন। ভাইয়া ভাবির কাছে থাকলেও অনেকটা অবহেলার শিকার আর সীমাহীন অন্তর্জালায় জর্জরিত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

বাবা তাঁর সাধ্য অনুযায়ী কিছু টাকা দিলেন। আমি আমার ইউনিভার্সিটির সব বন্ধুদের বিষয়টা জানালাম। কামাল সাহেবের অবস্থা অন্য আট দশজন রোগির মত না। তিনি সম্পূর্ণরুপে অক্ষম। কিছু করে চলতে পারবেন এমনও না।

তাছাড়া চিকিৎসা করে তার শারীরিক অবস্থা খুব বেশি উন্নতি করা সম্ভব বলে মনে হয় না। তার দরকার সাহায্য, বেচে থাকার জন্য। কয়েকবার সবাইকে নেয়ে বসলাম। কি করা যায়..? সিদ্ধান্ত নিলাম কিছু টাকা কালেক্ট করবো এবং এই টাকা দিয়ে এমন কিছু করার ব্যবস্থা করবো যেন তিনি দীর্ঘ দিন এর ফল ভোগ করতে পারেন। যেমন- তিনি তার ভাইয়া ভাবির সাথে আছেন, এবং তাদের অবস্থাও শোচনীয়।

তাই, এক্ষত্রে তাদের পরিবারকে উপার্যনের একটা ব্যবস্থা করে দেয়া যেতে পারে। এতে কামাল সাহেবও এই উপার্যনের ভাগিদার হবেন এবং বাকী জীবনটা অন্তত কিছুটা হলেও স্বস্তিতে কাটাতে পারবেন। কৈশোর পার করেছেন ইন্জিনিয়ারিং পড়ায়। তারপর যৌবনে পা দিতে না দিতেই চলে যান সরাসরি জীবনের শেষ প্রান্তে। হারিয়ে যান বন্ধু বান্ধব আত্নীয় স্বজন সবার মাঝ থেকে।

চলে যান সবার দৃষ্টিসীমানার বাহিরে। অবসর চাপিয়ে দেয়া হয় জীবন থেকে। বুকে লালন করা স্বপ্ন চলে যায় শত আলোক বর্ষ দূরে। পিতা মাতার কাছে যিনি ছিলেন ভরসার পাত্র, এখন তিনি শুধুই বোঝা। পাড়াপ্রতিবেশীর কাছে নয়, নিজের কাছেও তিনি বোঝা হয়ে আছেন।

অনুসূচনা অন্তর্জালায় জীবন বাতি নিভু নিভু প্রায়। তিনি একজন ইন্জিনিয়ার। দু সপ্তাহ সময় নিয়েছি। এর মধ্যেই কিছু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি সবাই। এ বিষয়ে কিছু আইডিয়া দরকার।

আর সবার সহযোগিতা চাই। আমাদের সকলের সহযোগিতায় ই পারে অনাহারে মৃত্যুর প্রহোর গুনতে থাকা একজন ইন্জিরিয়ারের জীবনে কিছুটা স্বস্তি এনে দিতে। খালেদ ইমরান- 01670064207 ইমতিয়াজ শাকিল- 01731805222

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।