একজন সাধারণ মানুষ যে সব সময় সাধারনই থাকতে চায়
একটি কাল্পনিক ঘটনা বলি। ঘটনাটি কাল্পনিক ভাববেন। এটা ব্যক্তি জীবনে খুব ধর্ম প্রাণ একটি মানুষের গল্প। যুদ্ধাপরাধী ইস্যুটা যখন সবে মাত্র জমে উঠতে শুরু করছে সেই সময় এই লোকটি তার কয়েক বন্ধু নিয়ে দেশের বাড়িতে ঈদ করতে গিয়ে ভাবল সারা দেশেই যখন এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানো চেষ্টা চলছে তবে তারা পিছিয়ে থাকবে কেন। সচেতনতা বাড়ানো উদ্যোগ হিসাবে সে তার বন্ধুদের নিয়ে প্রথম যে কাজটি করলো, তাদের গ্রামের ১০০ বছরের পুরোনো একটি ঈদ গাহ আছে যেখানে আশে পাশে প্রায় ৫টি ইউনিয়নের মানুষ মিলে ঈদের নামাজ পড়ে তার চারপাশে “যুদ্ধপরাধীদের বিচার চাই” একটি ব্যানার করে চাঁদ রাতে লাগিয়ে দিলো সকলের সামনেই।
সে চাকুরীজীবি হওয়ার আগ পর্যন্ত যতদিন গ্রামের বাড়িতে থাকতো কখনই এখানে এর বিরোধী অবস্থানের কোন রকম লক্ষন দেখেনি। তাই এ বিষয়ে পরবর্তী তাদের ভাবনার চেয়েও বেশি বিপাকে পড়তে হবে ভাবিনি। সকলা বেলা নামাজে এসে দেখলো ব্যানারগুলো খুলে ফেলা হয়েছে। সে সরাসরি কোন আক্রমনের সামনে সেই সময়ে পড়লোনা। তবে বিভিন্ন মাধ্যমে হতে বুঝতে পারলাম বিষয়টি জটিল হয়ে গেছে।
সে চাকুরির জন্য গ্রামের বাড়িতে না থাকার সুবাদে এই পুরো রাগটাই পড়ল তাদের গ্রামে থাকা আত্মীয় স্বজনদের উপর। যুদ্ধাপরাধ বিরোধী চক্রটি তাদের গ্রামের বাড়িতে থাকা আত্মীয় স্বজনদের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কাজে হেয় প্রতিপন্ন এবং হয়রানী করা শুরু করল এমনকি তাদের এই কাজের সাথে দুই রাজনৈতিক ঘরনার মনোভাবাপন্ন কারো আত্মীয় স্বজনরাও রক্ষা পেল না। মূল আক্রমণটা আসল আরো ৬ মাস পরে। তাদের এলাকায় থেকে প্রায় ৫ থেকে ৬ মাইল দুরে দুই মতাদর্শের দুই রাজনৈতিক দল একই দিনে একই জায়গায় তাদের নিয়মিত একটা সভার আয়োজন করে বসল। বাধ্য হয়ে পুলিশ যেখানে ১৪৪ ধারা জারি করল।
যতদুর শুনেছি সভায় দুইপক্ষ সেদিন মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে মারমুখি হয়েছিল যা পরবর্তীতে আমাদের রাজনীতির চিরচেনা সেই রূপ নিয়ে একে অপেরর বিরুদ্ধে মামলাতে জরায় এবং এখানে এপক্ষ মামলায় তাদের নামও ঢুকিয়ে দিল। এবং তার যে ভাইটি দেশে থাকে রাজনীতির নাম শুনলেই নাক ছিটকায় সেও বাদ গেলনা। এর পরের ঘটনাগুলো খুব করুন যা প্রকাশ করে আমি কারো মন ভারি করতে চাই না। এবার বলুন এই লোকটি কখন ধর্মীয় বিষয়ে কোন পোষ্ট করে রাজাকার গালিটি শুনে তবে তার প্রতি কি পরিমানে অবিচার করা হবে। এটা শুধু তার ক্ষেত্রে নয় আমার মনে হয় বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য।
বলা বাহুল্য এই লোকটি আওয়ামী মনোভাবাপন্ন এবং তার সাথে যারা ছিল তাদের মাঝে জাতীয়তাবদী ঘরনার লোকও ছিল।
ব্লগে ইদানিং এই বিষয়টি আমি যথেষ্ট পরিমানে লক্ষ করি। ইসলাম বা ধর্মীয় বিষয় ভিত্তিক কোন পোষ্ট আসলে, যেগুলোতে যুদ্ধাপরাধ বিরোধী পক্ষপাতের ছিটে ফোটাও খুজে পাওয়া যায় না সেগুলোকে অনেক ক্ষেত্রেই জোর করে যুদ্ধাপরাধ বিরোধী লেবাস পড়িয়ে দেওয়ার একটা চেষ্টা করা হয়। বিষয়টি আদোও কি ঠিক? এদেশের অধিকাংশ মানুষই ধর্মপ্রাণ সুত্র ধরে যদি ইসলাম বা মুসলিম বলতেই যুদ্ধাপরাধ বিরোধী বোঝায় তবে তো কখনই এদেশের অন্য কোন দল ক্ষমতায় যাওয়ার কথা নয়। তাকি আদোও হয়েছে? হয়নি কারণ এদেশের মানুষ যথেষ্ট পরিমানেই বুঝে কে ধর্মে অপ ব্যাখা করে ধর্মকে নিয়ে রাজনীতি করে।
ধর্মীয় মুলা ঝুলিয়ে এই সাধারণ মানুষ যেমন ৭১ কাবু করা যায়নি তেমনি কোনদিনই যাবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।