আজ ৬ ই আগস্ট ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকা আসছেন। এই সফরের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে বাংলাদেশের সাথে ১০০ কোটি ডলারের বা প্রায় ৭০০০ হাজার কোটি টাকার একটি ঋণ চুক্তি করা । বাংলাদেশ ঋণ নিয়মিতই নিয়ে থাকে । কিন্তু ভারত থেকে এই প্রথম । আমরা জানি যে ভারত ঋণ প্রদান করার মত এমন কোন উন্নত দেশ নয় ।
তবুও আমরা এই ঋণ পাচ্ছি । বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের বারাতে আমরা যা জানতে পারলাম তাতে এই ঋণের কোন সুফল বাংলাদেশ পাবে বলে মনে হয় না ।
এই পর্যন্ত এই ঋণ সম্পর্কে যা জানতে পারলাম তা হল -
১। ১০০ কোটি ডলারের ঋণ পাবে বাংলাদেশ ।
২।
ঋণ দেবে ভারতের একটি বেসরকারি ব্যাংক ।
৩। ঋণের সুদের হার ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ ।
৪। কমিটমেন্ট ফি (সুদের পাশাপাশি ঋণের জন্য দেয়া বাড়তি অর্থ) ধরা হয়েছে শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ।
যা ২৫ বছরে পরিশোধ করতে হবে।
৫। ঋণের অর্থ ব্যয় হবে ১৪ টি প্রকল্পে ।
৬। সবগুলো প্রকল্পই আবকাঠাম উন্নয়ন সংক্রান্ত ।
৭। বাংলাদেশ কে কোন নগদ অর্থ প্রদাণ করা হবে না । যন্ত্রপাতি কিনা দেয়া হবে ।
৮। ভারত ট্রানজিট পেলে যে যে সড়ক ব্যাবহার করবে তার উন্নয়নে এই অর্থ ব্যয় করা হবে ।
এখন আমারা কথা হল-
- ট্রানজিট -এর প্রয়োজন ভারতের , বাংলাদেশের নয় । বরং ট্রানজিট দেওয়ার ফলে বাংলাদেশ অযাচিত ভাবে ভারতের বেশ কয়েক টি বিদ্রোহী গ্রুপের টার্গেটে পরিনত হবে এবং এই ধরনের পরিস্থিতি সামাল দেয়ার ক্ষমতা বা প্রস্তুতি বাংলাদেশের নেই । এমনকি ভারত ও বাংলাদেশ কে এই ধরনের পরস্থিতি সামাল দেবার ক্ষেত্রে কোন সাহায্য করার কথা বলেনি । বাংলাদেশ সরকারও এই ধরনের কোন বিষয় আলোচনায় তুলে নি ।
তাই স্বাভাবিক ভাবেই গরজ টা ভারতেরই হওয়া কথা ।
তাদের গরজেই রাস্তাঘাট তাদের উপযোগী করার জন্য খরচ করার কথা ।
কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে, বাংলাদেশ তাদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে এই কাজ করবে । অর্থাৎ এই ঋণ বাংলাদেশের মানুষের ঘামে ভেজা অর্থে পরিশোধ করে হবে তা সুদ সহ ।
এতে কাদের সুবিধা হবে তা বুঝা যাচ্ছে না ।
বাংলাদেশের আয় যে ক্ষেত্র গুলো থেকে তার সিংহ ভাগ ই আসে গার্মেন্টস সেক্টর , বৈদেশিক আয় , কৃষি , এবং নানান ক্ষুদ্র শিল্প থেকে ।
এই প্রত্যেক টি ক্ষেত্রই বাংলাদেশের গরিব মানুশের কর্মস্থল । অর্থাৎ বাংলাদেশের গরিব মানুষের আয় ই বাংলাদেশের আয় ।
আমদের দেশে যে সব দেশি ও বিদেশি কম্পানী ব্যাবসা করে তারা ও সবাই কর ফাকি দেয় এবং ঋণ খেলাপী করে ।
সুতরাং দেশের গবিবরাই সরকার কে অর্থ যোগায় আর ধনীরা নানা ভাবে দেশকে ফাকিঁই দিয়ে যাচ্ছে এবং ঠকিয়েই যাচ্ছে ।
এই গরিবদের অনেক প্রয়োজনেই সরকার অর্থ নেই বলে খরচ করে না ।
আর তাদের টাকায় কেন ভারতের জন্য রাস্তা করা হবে তা বুঝতে পারছি না।
-এই ভারত সিমান্তে প্রতিদিন বাংলাদেশের মানুষদের মারছে বিনা কারনে।
- বাংলাদেশের গার্মেন্টেস শিল্পের সবচেয়ে বড় প্রতিদন্ধী ভারত । এই ক্ষেত্রে ভারত কতটা হিংসা পরায়ন তা গার্মেন্টস মালিকদের জিজ্ঞেস করলেই জানা যাবে ।
- বিদেশে শ্রমিকদের বিভিন্ন ভাবে মিডল ইষ্ট থেকে উতখাত করার পেছনে ভারত কি কি করছে তা ও মিডিয়া ও অন্যান্য ভাবে আমরা জানি।
- বাংলাদেশের কৃষি পণ্যের প্রধান আতংক ভারতের পন্য ।
- টিপাইমুখ বাঁধের ক্ষতিও বাংলাদেশকে বহন করতে হবে ভয়াবহ আকারে ।
-ভারতের অনৈতিক পানি শাসনের কারনে বাংলাদেশের হাজার কয়েক নদী মরে বাংলাদেশ কে মরুকরনের দিকে এগিয়ে দিচ্ছে । যেখানে বাংলাদেশের অভ্যন্তিরীন বানিজ্যে যোগাযগের মূল মাধ্যম ই ছিল নদী সেখানে আজ অধিকাংশ নদীই বিলিন শুধু ভারতের কারনে আর যে কয় টি আছে সে গুলোও মৃত প্রায় ।
বাংলাদেশের এত ক্ষতি করার পর ও আমদের সরকার কোন কৃতজ্ঞতা থেকে এই ঋণের বোঝা বাংলাদেশের জনগনের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে তা আমি বুঝি না ।
আমরা জনগণ কেন এত বেহায়া ?
নাকি সরকার আমাদের নয় তাদের উপকারে ব্যাস্ত তা বুঝতে ও জানতে চাই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।