জয় হোক কবিতার। জয় হোক তারুণ্যের।
সরসিজ আলীম
আজ ২২ শ্রাবণ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে স্মরণ করছি। কাঁটাবনস্থ কনকর্ড এম্পোরিয়াম শপিং কমপ্লেক্সের বর্ষার বইমেলার ৫ম দিন অতিবাহিত হলো।
এ প্রাঙ্গণে পাঠকের আনাগোনা বাড়ছে। সিরিয়াস পাঠক আসছে। বেশ ভারি ভারি বই কিনছেন বিদগ্ধজন। মা-বাবারা তার শিশুটিকে নিয়ে মেলায় আসছেন। শিশুটিকে বই কিনে দিচ্ছেন।
বেচা-বিক্রিতে খুশি স্টলের কর্মীরা। কিন্তু মেলায় কবিতা প্রেমিকের যেনো দেখা নেই। আমরা জানি আমাদের দেশের প্রকাশনার অন্যান্য সকল শাখার সমান সংখ্যায় কবিতার বই বের হয় প্রতিবছর। কবিতা কর্মীর সংখ্যা অসংখ্য। তার সমান সংখ্যায় হয়তো কবিতা প্রেমিক নেই।
থাকলেও রবীন্দ্র-নজরুল অবধি সীমাবদ্ধ। কিছু পাঠক জীবনানন্দ, শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, নিমলেন্দু গণকে পাঠ ক’রে থাকবে। এর বাইরে নতুনদের প্রতি তেমন কোন আগ্রহ নেই। ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে অনেক তরুণ আসেন বইমেলার মঞ্চে কবিতা পাঠের আশা ক’রে। তাদের বই দেখার প্রতিও কোন আগ্রহ দেখি না।
অনেক সাধারণ পাঠক আছে স্টলে ঘুরে ঘুরে বই দেখেন, হয়তো সুযোগ ক’রে কিনে ফেলবেন একদিন। কিন্তু কাঁধে ব্যাগঅলাদের মধ্যে এ প্রবণতা দেখা যায় না। একটা কথা ব’লে অনেকে হাসাহাসি করে যে, কবিরা কবিতা কম পড়ে, কারণ অন্যের প্রভাব পড়তে পারে তার লেখায়। এ কথাটা নবীণ বা নবিশীদের জন্য হয়তো সত্য হ’তেও পারে। আমার অভিজ্ঞতা হলো, লেখালেখি শুরু করার আগেই অনেক অনেক কবিতা, অনেক বড় বড় লেখক পড়া হ’য়ে গেছে।
তখন জানতামই না লেখালেখি করবো। লেখালেখির শুরুতে আধুনিক কবিতা বুঝতে, লেখক চেনার জন্য নবীনদের লেখা খুব আগ্রহ নিয়ে পড়েছি। প’ড়ে যাচ্ছি। ব্লগের কল্যাণে অনেক নবীণের কবিতা পড়তে হয়। আবার বাঁকা মন্তব্যের কারণে গালিও কম খেতে হয়নি।
তবু প’ড়ে যাচ্ছি, তবু মন্তব্য ক’রে যাচ্ছি, তবুও গালি খেয়ে যাচ্ছি।
রাষ্ট্রিয় ব্যবস্থাটায় নিপীড়নমূলক। এ ব্যবস্থার প্রতি ঘৃণা থাকবে একজন তরুণের। যে তরুণ প্রেমিকার হাত ধরবার আগেই মিছিলে মিছিলে হাত উত্তোলিত করবে। বা মিছিলে মিছিলে প্রেমিক-প্রেমিকা হাত ধরাধরি করে হাঁটবে।
সে প্রেমিক কবিতাকেও ভালোবাসতে শিখবে। ভালোবাসতে জানবে। সেই তরুণটি মিছিলেও হয়তো যায়, কবিতা ভালোবাসে না। প্রেমিকার ধর্ষক হ’য়ে যায়। প্রেমিকাকে দেহ ব্যাবসায় নামতে বাধ্য করে।
কবিতার স্নিগ্ধতা ক্লেদাক্ত হয়। কবিতার স্পর্ধা পদদলিত ক’রে তরুণ রাজপ্রাসাদের চারপাশে কাক-শকুন হ’য়ে ঘোরে। ২২ শ্রাবণ ৬ষ্ঠ দিনের বইমেলাতে কবিতার জয় হোক। কবিতা প্রেমিকের পদভারে মুখরিত হোক মেলা প্রাঙ্গণ।
আজকের অনুষ্ঠানমালায় থাকছে রবীন্দ্রনাথের লেখা থেকে পাঠ।
রবীন্দ্রনাথের কবিতা আবৃত্তি। রবীন্দ্র সংগীত তো থাকছেই। কবি শামসুর রাহমান মঞ্চে সবাইকে আমন্ত্রণ। আর বিশেষ আয়োজনে আমরা থাকবো লেখক, কবি, সাংবাদিক, ফেসবুকের বন্ধু ও ব্লগারদের নিয়ে তুমুল আড্ডাতে। চলে আসুন।
ভালো থাকুন। জয় হোক কবিতার। জয় হোক তারুণ্যের।
মেলা শুরু হয়েছে ০১ আগস্ট, চলবে ১০ আগস্ট ২০১০ অবধি। সকাল ১১:০০টায় শুরু হয়ে রাত ৮:০০ নাগাদ চলছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।