নিরপেক্ষ আমি
বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার যুগেও কেউ হলফ করে কারো আয়ু বলে দিতে পারে না। কারণ মৃত্যুর প্রাথমিক রহস্য এখনো চিকিৎসকদের ধারণার বাইরে। আয়ু বিষয়টি পুরোটাই ভবিতব্যের ওপর ছেড়ে না দিয়ে কিছু মার্কিন গবেষক এই নিয়ে গবেষণা করে যাচ্ছেন। তাদের সাম্প্রতিক খোঁজ ওঠে এলো 'সায়েন্স' বিজ্ঞান পত্রিকায়।
আমেরিকার বোস্টন ইউনিভার্সিটির কিছু গবেষক জানাচ্ছেন, নাড়ির নিদান বলে না দিতে পারলেও কোনো ব্যক্তি পৃথিবীর আলো-হাওয়াকে একশ বছর দেখে যেতে পারবে কিনা, তা মোটামুটি বলে দেওয়া যায়।
সে কথা ওই মানুষটির জিনই বলে দেয় বলে তাদের দাবি। আয়ু নির্ধারণকারী ওই জিনের কার্যকারিতা নিয়েই বোস্টন ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানীরা ব্যাপক গবেষণা চালিয়েছেন। তারা খুঁজে পেয়েছেন ঠিক কিভাবে কাজ করে যায় ওই জিনটি। ১৮৯০ থেকে ১৯১০ সালের মধ্যে জন্ম নেওয়া ১ হাজার ৫৫ ব্যক্তির জিন বিশ্লেষণ করেন এই সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে পেঁৗছেছেন। তারা ওই সময়ের জন্মানোর সঙ্গে পরবর্তী সময়ে জন্ম নেওয়া ১ হাজার ২৬৭ জনের জিনের তুলনা করেছেন।
দেখা গেছে, শতায়ুদের সবার জিনের একই মিল পাওয়া গেছে। সর্বক্ষেত্রেই আয়ু জিনের সমরূপ দেখতে পাওয়া গেছে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, বয়সজনিত রোগের জন্য যে জিন দায়ী তার কার্যকারিতা আদপে দমিয়ে রাখে ওই আয়ু নির্ধারক জিন। গবেষক দলের মুখ্য বিজ্ঞানী ড. টমাস পার্ল বলছেন, 'এখন যদি কেউ বলেন, বয়স হলেই রোগ-ব্যাধি বাসা বাঁধে শরীরে। তা নিয়ে কে বাঁচতে চাইবে।
আমি বলব, এটা সত্যি নয়। শতায়ুদের ক্ষেত্রে দেখা গেছে, আয়ু নির্ধারক জিন কার্যকর থাকলে রোগ-ব্যাধির আশঙ্কা কমে যায়। ' ১৯৯৫ সালে শুরু এই গবেষণায় প্রথমবার শুধু ককেশীয়দের ওপর চালানো হয়েছে। এরপর মঙ্গোলয়েডদের ওপর বিশেষত জাপানিদের ওপর চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। কারণ জাপানেও শতবর্ষী লোকের সংখ্যা বেশি।
মজার ব্যাপার হলেও সত্যি, আমেরিকায় শতায়ু মানুষের অধিকাংশই মহিলা। এই হার ৮৫ শতাংশ। বাকিরা পুরুষ।
ধূমপান, মাত্রাতিরিক্ত মদ্যপান আর বেশি খাওয়ার পরেও যদি কেউ শতায়ুর কামনা করেন তা একটু বাড়াবাড়ি হয়ে যাবে। গবেষকদের দাবি, বেশিদিন বাঁচার ক্ষেত্রে জীবনযাপন পদ্ধতি একটু-আধটু নিয়ন্ত্রণ করাটা জরুরি।
দেখা গেছে, শতায়ুরা বেশিরভাগই নেশাগ্রস্ত নন। তারা প্রথম জীবনে নিয়মিত শরীরচর্চা করেছেন বলেও গবেষণায় উঠে এসেছে। তবে এত কিছু করার পরেই গবেষকরা কিন্তু কি পদ্ধতিতে আয়ু পরিমাপ করা যেতে পারে তার হদিস দেননি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।