আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মনে পড়ে বন্ধুদের………

জীবনের জন্যই এই সব কথামালা

আজ বিকেল থেকেই আকাশের মন ভালো নেই, অঝোড়ে বৃষ্টি ঝড়ছে । ঠান্ডাজনিত সমস্যা থাকার পরও বৃষ্টিতে ভিজতে হল । কাহিল শরীরের হয়তো অকেজো হবে কয়েকদিনের জন্য, তবুও বৃষ্টির এই ধারায় নিজেকে জড়াতেই হল । বৃষ্টির এই অত্যাচারের পরও কিছু গুন আছে, অন্তঃত আমার কাছে । বৃষ্টি এলেই কেন জানি শৈশব স্মরণে আসে ।

চরম বাস্তবতার মাঝে ও নিজেকে খুজে পাই অফুরান আনন্দে । তেমনটা আজো হল, বৃষ্টিতে ভিজে যখন বাসাই ফিরছি তখনই কিছু স্মৃতি হানা দিতে লাগলো মনে। আমি নিজে আন্দোলিত হলাম বারবার…… তাই কিছু স্মৃতিময় অংশ শেয়ার করা; #তখন খুব সম্ভবত সপ্তম শ্রেণীতে পড়ি, ইংরেজি ২য় পত্রে translation নেয়া একটি নিয়মিত বিষয় । স্যাররা কিছু কমন বাক্য ব্যবহার করতেন এক্ষেত্রে । যেমনঃ ডাক্তার আসিবার পূর্বেই রোগী মারা গেল, চকচক করলেই সোনা হয়না ইত্যাদি ।

একদিন ক্লাশে বাবু রতন স্যার দিনা নামক আমাদের এক সহপাঠীকে “সে যে গেল, এমনভাবে গেলো আর ফিরে এলোনা” বাক্যটির translation করতে বললে দিনার ঝটপট উত্তর “ He goes to go এমনভাবে go আর ফিরে এলোনা” । উত্তর ভুল পরের বিষয় দিনার ঝটপট উত্তরে তো আমরা অনেকে টাশকি খেয়ে গেলাম । #ঘটনাটি অষ্টম শ্রেণী থাকাকালের । সাধারণ বিজ্ঞান বিষয়টি কার কাছে কেমন লাগতো জানিনা কিন্তু আমরা বন্ধুরা যে খুব বেশি মজা পেতাম না নিশ্চিত । তো পড়া না পারা ছিল নিত্যদিনের বিষয় ।

তো আমাদের দিলীপ স্যার জেদী ভাব ধারণ করলেন পড়া আদায়ে । পড়া যদি সম্পুর্ণ মুখস্ত না বলতে পারো তো রোদে গিয়ে আকাশ পানে তাকাও । এক বৃষ্টির দিনে যারা পড়া না পারার দলে তারা মহা খুশি, কারণ আজ বাইরে যেতে হবেনা । কিন্তু দিলীপ বাবু সবাইকে নিরাশ করে ক্লাশে এলেন তিন তিনটি ঝালি বেত নিয়ে । যারা প্রশ্নের উত্তর সম্পূর্ণ দিতে পারছেনা তাদের প্রাথমিক শাস্তি লো বেঞ্চিতে দাঁড়ানো ।

স্যার যাওয়ার সময় বেত্রাঘাত করবেন । প্রশ্নোত্তরের একপর্যায়ে স্যার আমাদের বর্বরা আলামিন (সে অন্য কাহিনি, অন্যদিন বলা হবে নিশ্চয়) কে বললেন ‘মরিচীকা কি?’ আমাদের আলামিন বন্ধুটি অনেক ভেবে চিন্তে যা উত্তর দিলো তা এরকম “মরিচীকা এক ধরনের ফল, মরিচ গাছ টাইপ কোন গাছে এই ধরনের ফল পাওয়া যায় । এর স্বাদ তেতো”। এই উত্তরের পর আলামিনকে অন্য অনেকের সাথে বেত্রাঘাত সইতে হলো । স্যার যখন ক্লাশ শেষে বেরিয়ে যাচ্ছেন তখন আলামিন ঘটালো আরেক কান্ড ।

স্যার ক্লাশের দরজা পেরোতেই আলামিন কার যেন কান্নার বিষয় নিয়ে অট্টহাসি ঝুড়ে দিলো । তো আসিক নামে আরেকজন যখন বলল, স্যার এতক্ষন তোকে মারলো আর তুই কিনা হাসছিস? আলামিনের তাৎক্ষনিক উত্তর “চোরের ডরে কি বৌ ছেড়ে দেবো নাকি?” আর এই কথা ও গেলো স্যারের কানে । কি আর করা আলামিনকে দ্বিতীয়বার বেত্রাঘাত সইতেই হল । #এটি কলেজ পর্বের ঘটনা আর এই ঘটনার মুল বিষয় বাংলা সিনেমার এক জনপ্রিয় গান – “সবার জীবনে প্রেম আসে” । আমাদের অনেকের মন্তব্য হল গানের কথা ঠিক নয় ।

তো শ্রাবণ আমাদের স্বপক্ষে যে যুক্তিটি দেখালো তা আমার কাছে এখনো বুদ্ধিজীবি টাইপ মনে হয়। তার কথা অনুসারে, বিধাতা পৃথিবীতে জনসংখ্যা অনুসারে প্রেম নির্ধারণ করেছেন। কিন্তু পৃথিবীতে এসে অনেক স্বার্থপর একের অধিক প্রেম করছে, আর সে একের অধিক যে প্রেম গুলো করছে প্রতিটা অন্যের অধিকার বঞ্চিত করছে । ফলে আমাদের মত অনেক কে প্রেম হীন থাকতে হচ্ছে । আমরা তো তার যুক্তিকে প্রণাম জানাতে বাধ্য হলাম ।

# আমাদের এলাকায় এক ছেলে প্রায়ই ঝগড়া বাধায় । এ নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। তো সবারই প্রায় মিলে যাওয়া মতটি হল, তার ব্রেইনে ভালো কিছু নেই । আর আমাদের মাসুমের অকাট্য যুক্তি, ছেলেটির কোন ব্রেইনই নেই । তার কথা অনুসারে বিধাতা যখন সবাইকে সৃষ্টির পর ব্রেইন বিতরণ করছিলেন তখন সে ঘুমিয়ে ছিল, ফলে সে তার প্রাপ্য ব্রেইনটি পাইনি ।

অদ্ভুত যুক্তি……… আসছে বন্ধু দিবস । বন্ধু দিবসের প্রাক্কালে সবাইকে স্মরণ করছি । বন্ধুরা, আমাদের হয়তো যোগাযোগ নেই দীর্ঘদিন…….. কিন্তু তোমরা আছো সবসময় মনঘরে । । (এই পোস্টটি পড়ে যাদের বিরক্তির উদ্রেক হয়েছে, তাদের কাছে দঃখিত বলা ছাড়া কিছুই করতে পারছিনা) চলবে……….


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।