ক্তরাজ্যে বসবাসকারী প্রায় দশ লাখ অবৈধ ইমিগ্রান্টের বিরুদ্ধে বড় ধরনের অভিযান চালানোর ঘোষণা দিয়েছেন সে দেশের ইমিগ্রেশন মন্ত্রী ডেমিয়েন গ্রিন। এসব ইমিগ্রান্টের একটি বড় অংশ বাংলাদেশী। ডেমিয়েন গ্রিনের ঘোষণার ফলে লন্ডন মেয়রের পক্ষ থেকে সাধারণ ক্ষমার দাবি কার্যত বাতিল হয়ে গেছে। ইমিগ্রেশন মন্ত্রী একই সঙ্গে শেম মেরিজ-এর বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থানের কথা জানিয়েছেন। পার্লামেন্টের হোম অফিস সিলেক্ট কমিটির এমপিদেরকে ইমিগ্রেশন মন্ত্রী জানিয়েছেন, এখন থেকে ইমিগ্রান্টদের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের চিরচেনা অবস্থান আর থাকবে না।
এতদিন ব্রিটেনে ইমিগ্রান্টরা নির্বিঘ্নে তাদের কার্যক্রম চালাত। সদ্য ক্ষমতায় আসা টোরি-লিবডেম সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, সরকার অবৈধ ইমিগ্রান্টদের বিরুদ্ধে একটি বার্তা পৌঁছে দিতে চায় যে, ব্রিটেন আর তাদের প্রতি সহনশীল নীতি অনুসরণ করবে না। শেম মেরিজ, ভুয়া কলেজ এবং অবৈধভাবে যারা কাজ করছে তাদের ধরতে আগামী কয়েক মাসের জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। ব্রিটেনের জনপ্রিয় পত্রিকা দি সানডে টেলিগ্রাফ ইমিগ্রেশন মন্ত্রীর বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। মন্ত্রী জানিয়েছেন, অবৈধ কার্যকলাপের বিরুদ্ধে অভিযান হবে প্রকাশ্য।
সম্প্রতি দি সানডে টাইমস-এর খবরে জানা গেছে, কোনো আশ্রয়প্রার্থীর আবেদন নাকচ হলে তার অবস্থান জানার জন্য সার্বক্ষণিক ইলেক্ট্রনিক ট্যাগ লাগানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এদিকে গ্লোবাল ভিসা ডট কম নামক একটি ওয়েব পোর্টাল ইমিগ্রেশন মন্ত্রী ডেমিয়েন গ্রিনের উদ্ধৃতি দিয়ে বলছে, ব্রিটেনে ক্রমবর্ধমান বিদেশি কর্মীর প্রবেশ ব্রিটিশদেরকে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে সমস্যায় ফেলেছে। মন্ত্রী দাবি করেছেন, বেনিফিট প্রাপ্তির সহজলভ্যতা জনসাধারণকে নিম্নমজুরির কাজে নিরুত্সাহিত করছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে বেকারভাতা ও আবাসন সুবিধা বাবদ যা পায় নিম্ন আয়ের কাজে তাও আয় করা যায় না।
এদিকে যুক্তরাজ্যে কলেজের সংখ্যা বেড়েই চলছে।
ইমিগ্রেশনের ব্যাপারে সরকারের কঠোর অবস্থান জানান দেয়া সত্ত্বেও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের আয় বাড়ানোর জন্য বিদেশি ছাত্রদের আকৃষ্ট করতে নিত্যনতুন কৌশল নিচ্ছে। ব্রিটেনের জনপ্রিয় দৈনিক দি গার্ডিয়ান বলছে, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু ইংল্যান্ডে ছাত্র আনার চেষ্টাই করছে না, বরং প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের শিক্ষা কার্যক্রম বিদেশে চালানোর জন্য সেখানে স্থানীয় পর্যায়ে শাখা খোলারও চেষ্টা করছে। পত্রিকাটি গ্রিনউইচ কমিউনিটি কলেজের অধ্যক্ষের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, কলেজটি এখন ব্রিটেনের বাইরে তাদের শিক্ষা কার্যক্রম চালানোর কথা সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে।
অ্যাসোসিয়েশন অব কলেজের সদ্য নিযুক্ত ইন্টারন্যাশনাল ডিরেক্টর জন মাউন্টফোর্ডের বরাত দিয়ে পত্রিকাটি লিখেছে, প্রতিষ্ঠানগুলোর পার্টনারদের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী অংশীদারিত্ব বাড়ানোর জন্য প্রচেষ্টা জোরদার করা হয়েছে। উল্লেখ্য, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পার্টনার বলতে বাংলাদেশে মূলত এজেন্টদেরকে বোঝানো হয়ে থাকে।
জন মাউন্টফোর্ডের মতে, প্রতি বছর আনুমানিক ৫০ হাজার বিদেশি ব্রিটেনে বিভিন্ন মেয়াদের কোর্স করে থাকে।
এদিকে হোম অ্যাফেয়ার্স সিলেক্ট কমিটির চেয়ারম্যান কিথ ভাজ এমপি কঠোর নিয়ন্ত্রণমূলক ইমিগ্রেশন নীতি বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের এ মাসের শেষদিকে ভারত সফরে দ্বিপাক্ষিক ইস্যুতে ব্রিটেনের কঠোর ইমিগ্রেশন নীতি বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, সদ্য ঘোষিত ইমিগ্রেশন নীতি বাস্তবায়নের আগে পার্লামেন্টে তা যাচাই-বাছাই করা উচিত।
ব্রিটেনে ইমিগ্রান্ট প্রবেশের ক্ষেত্রে সংখ্যা নির্ধারণী নতুন নীতি গত ১৯ জুলাই থেকে অস্থায়ীভাবে কার্যকর করা হয়েছে।
গত দু’সপ্তাহ ধরে ব্রিটেন জুড়ে ব্যাপক ধরপাকড়ের খবর বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে। ইউকে বর্ডার এজেন্সিচালিত এ অভিযানে পাকড়াও হয়েছে আইন অমান্য করে ব্রিটেনে বসবাসকারী বাংলাদেশী, পাকিস্তানি, ভারতীয় এবং চীনাসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের লোকজন। এসব কর্মীকে কাজ দেয়ার অপরাধে এরই মধ্যে বিশাল অংকের জরিমানার নোটিশ দেয়া হয়েছে চাকরিদাতাদের।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।