কিছুকাল আগের কথা!
এক দেশে একটা ব্লগ ছিলো।
ব্লগে এক বাঘ ছিলো! তার ভয়ে কারও উল্টা-পাল্টা লেখার উপায় ছিলো না! লিখলেই কোক্ক করে গলা ধরতেন! আজকে একে পচানো, কাল ওকে ঝাড়ি! উনার ভয়ে সবাই সোজা হয়ে গেসিলো। কোন গালি নাই, কোন উস্ঠা মারা মারি নাই! ইভেন কোন ক্যাচালও নাই!
একটু পর পর "কুদ্দুইচ্চা'র ব্যান চাই" বলে চিৎকার বা "কুলসুমের ছাইয়া নিক খুলে দেও" বলে চেচামিচিও নাই! মডুগন দেখে .. ব্লগে সবাই সোজা, তাদের আর কাজ-কাম নাই!
চাকরী যায় যায় অবস্হা!
বাঘ হিসাবে কাজ ছাড়াও উনি আবার হসপিটালে কাজ করতেন! ওখানেও ঝাড়ি চলতো সমানে! ওনার ভয়ে সব রোগী ঠিক কইরা ওষুধ খেতো, প্রেসক্রিপশনের প্রত্যেকটা অক্ষর অক্ষর রোগীরা মাইনা চলত! ফলে হাসপাতালগুলানও রোগী শুন্য হয়ে যাচ্ছিল! রোগী নাই তো ওষুধ কোম্পানীগুলান লাটে উঠে উঠে অবস্থা!
উনার আরও ইতিহাস আছে। কথিত আছে, ডাঃ আলিম চৌধুরী লেডিস হোস্টেলের সামনে কোন রোমিও সাহস পাইতো না খাড়ানোর! কখন আবার বাঘে আইসা ঝাড়ু/ঝাড়ি মারে! ফলে চা-সিগারেটওয়ালা মামুগনের ব্যাবসায় মাইর খাইয়া অলমোস্ট পথের ফকির হয়ে ঢোল-তবলা বাহিনীতে যোগ দিতেছিলো! গোপন সু্ত্রে খবর পাইছি, কেউ কেউ মলম পার্টিরও দ্বারস্থ হইছেলো চাকরীর জন্য!
যাইহোক, অবস্থা যখন চরম খারাপ তখন মডুরা, সব ওষুধ কোঃ গুলানের বস রা আর অবসিষ্ট চা'আলারা আসলো আমার দরবারে! আমি আবার তখন খুবই বিজি ছিলাম বাংলা সিনেমার নাইকাদের অভিনয় দেখতে (নর্তন-কুর্দন না কলাম! )! কোন কতা-বার্তা নাই পুরা গুরুপ আইসা হুরমুর কইরা সোজা আমার পায়ে আইসা পড়ছে।
কয় "রাজামশাই, আমগো বাঘের হাত থেইকা বাচান ! আমাগো চাক্রি যাইতাসে, ব্যবসা যাইতাসে!! ইভেন চাওয়ালা সমিতির সবাই মলম পাট্টি, ঢোলওয়ালা সমিতিতে যোগ দিতাসে! আপনে বাচান, রাজামশাই!"
আমি বল্লাম 'আমি হোদল মানুষ! ভাগ্যের ফেরে আমি আজ হোদল রাজা।
এইসব ঘিরিংগি, কিরিন্চির মইদ্দ্যে আমারে ফালাইও না! আমি নাই এর মইদ্দে! আমারে মাফ কর! এইসবে ধরা পড়লে বাঘ আফায় আমারেও সাইজ কইরা দিবো! আমারে বিপদে ফালাইয়ো না! পিলিজ মাফ!"
তো আপনারা বেক্সিমকোর সোলাইমান এফ রমান সাবরে তো চেনেই! পা যে ধরছে আর তো ছাড়ে না। আমার আবার লুডু খেলতে গিয়া ঐ পায়ের রগে টান পরছেলো। বাচার জন্য কইলাম " আরে বলদগন, তোগো জায়গায় হইলে কবেই আমি টারজানকে খবর দিতাম! কিন্তু আমি কিছু কইতাম পারুম না বাঘের এগেনস্টে! নো বুদ্দি পসেবেল!" ইংলিসে বলে দিলাম!
বেকুবরা আবার জিগায় "জাহাপনা রাজামশাই! টারজানের মুবাইল নাম্বার কত?"
আমি গেলাম খেইপা! ...। মুবাইল নাম্বার দিলে টারজানে যখন জিগাবো 'নাম্বার কই পাইছেন? " তখন? আমি মুখে তালা দিলাম
কইলাম 'আবে হালায়, ঢোল পাট্টিরে খবর দে না কিল্লাই?'
(আমার আবার বেশী রাগ উঠলে বা ভয় পাইলে পুরান ঢাকা আর নোয়াখাইল্লা ভাষার সংমিস্রন ঘটে যায়!)
খানিক পর শুনি যথারীতি ড্রামের দ্রিম দ্রিম শব্দ!
আরো খানিক পর "আআআআ... আআআআআউ!" করতে করতে টারজান সাবে আইসা হাজির! আমি বড় কইরা সালাম দিলাম। কইলাম "স্যার, চা দিতে কমু না ঠান্ডা?"
উনি কয় "হোদলা! ঘটনা কি? কে কার পিঠে এতো জোরে ব্যান্ড বাজায়? সারা রাইত ঘুমাইয়া টায়ার্ড, তুমাগো উৎপাতে সকালবেলা খাইয়া একটু ভাতঘুম দেওয়ারও উপায় নাই! বিয়া কার? "
আমি বলি "স্যার আমি তো কিছু শুনি নাই!আমি বইসা বইসা অন্জু ঘুষের নাচ দেখতে ছিলাম! সাউন্ড কি একটু বেশি হইছে?"
টারজান তো ক্ষেপে আগুন।
বলে " আমার লগে পোকবাজি? হোদল রাজ্যের রাজা কে? কোন খবর রাখ না! দিমু নাকি চাকরী খায়া? নাকি দিমু ডিমোশন দিয়া?"
না পাইরা আমি মিনমিন করে বললাম ' মডুরা, ওষুধআলারা আর লেডিস হোস্টেলের সামনের বিষিস্ট চা ব্যবসাহীরা আসছিলো। বলতেছিলো বাঘের উৎপাত ব্লগে, হসপিটালে, ইভেন লেডিস হোস্টেলের সামনে! আমি বলছি "বাঘরে বুঝাইয়া বললেই হপে....."
টারজান সাব আমারে বলেন "এতো বড় সাহস? আমার জংগলে তাফাল্লিং? দাড়া, সাইজ কর্ড়তাসি বাগরে! বাঘরে দেকছোত, ক? লাস্ট কুথায় দেখছোস, ঠিক কইরা ক?"
আমি একটু জিরা মেরে বললাম "বাঘ আপনারে সাইজ করে দিবানে,স্যার। এ কিন্তু সেরাম বাঘ! শেষ দেকছিলাম সামুর ব্লগে! আমার পোস্টে দুইখান মাইনাচ দেসে! আমার কতা কইয়েন না কলাম!!"
টারজান সাব ধমক দিয়ে বললেন " চুপ! হোদলা!"
তারপর "আআআআআআআউ!.. আ....উঃ.....!!" করেতে করতে বিদায় হলেন!
দিনটা আমার পরিষ্কার মনে আছে। ২২শে জুলাই। হোদলরাজার শহীদ দিবসের দুই দিন পর!
যাই হোক কয়েক দিন পর থেকেই দেখি সব চেন্জড।
ব্লগে কপি-পেস্ট বেড়ে গেলো, সাথে গালি! ক্যাচালের পর ক্যাচাল! মডুরা সমানে এরে জেনারেল বানা্য তো ওরে ব্যান মুবারক জানায়! মানে একদম অর্জিনাল ফর্মে !
হসপিটালগুলান রোগীতে ভরা! ওষুধ কোঃ গুলান লালে লাল! নজরানা হিসাবে আমাকে ৫ কেজ বিয়ার দিয়ে গেলো! মানে জিনজার বিয়ার আর কি! আর ঢাকা মেডিক্যালে চায়ের মামুরা এক একজনে তিন/চাইরটা কইরা পিএ রাকছে ব্যবসা সামলানোর জন্য! আমারেও পার্ট টাইম চাকরীর অফার দেসে!
বাঘ সাইজ!! খুশী হয়া ধন্যবাদ দিতে টারজানের মুবাইলে ফুন দিলাম!
ওপাশ থেকে মিনমিনা গলায় কে যেন বলল "তার জান বলছি!"
আমি আমার বাজখাই গলায় জিগাইলাম '' কে তুই বেটা আবুল? কত বড় বুকের পাটা তোর, টারজান উস্তাদের মুবাইল ধরছ? উনার কুন গারলফেরেনড হইলে? বেটা ফাউল? দিমু একখান চটকানা? গালসি বরাবর? এক্কারে জান খায়া ফালামু, ব্যাটা ফাজিল!"
ওপাশ থেকে ফিসফিস করে বললো " রাজামশাই, আমিই আসলে টারজান ওরফে তার জান ওরফে তার জান উদ্দিন! বাঘরে সাইজ কর্তে আইসা আমিই শহিদ হয়া গেছি! সেই ২২শে জুলাইতে।
নতুন কইরা আকিকা আর এফিডেবিট কইরা বাঘে আমার নাম রাইখা দেসে তার জান উদ্দিন আর নিজের নাম রাখছে ববি ওরফে বড় বিলাই!"
আমি আর কি করবো? বললাম " শুভ বিবাহ বার্ষিকী মিঃ তার জান আর বড় বিলাই আপু!"
** এখানে সব চরিত্রই কাল্পনিক গল্পের! কাহারও সহিত সামান্য মিল থাকিলে তাহা কাক ও তালের ঘটনার মত! এবং লেখক কুন ভাবে দায়ী নহেন! দায়ী হবেন ব্লগের মডুগন, ওষুধ কোঃ গুলান আর চা ব্যবসাহী সমিতি!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।