আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জি-২০ সম্মেলন ঘিরে টরন্টোতে যা দেখলাম

good

এ যেন আরেক ঢাকা! পার্থক্য শুধুই দূরত্বের। জি-২০ সম্মেলনকে কেন্দ্র করে টরন্টোতে যা ঘটে গেল তা রীতিমত অবিশ্বাস্যকর। কানাডায় তা এতদিন অকল্পনীয় ছিল বটে। বিলিয়ন ডলারেরও বেশী মোটা দাগের নিরাপত্তা ব্যুহ ভেঙে ‘ব্ল্যাক ব্লক’ নামের একদল উচ্ছৃংখল বিক্ষোভকারী পু লিশের গাড়ীতে আগুন দিয়েছে, রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়েছে, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের দরজা-জানালা ভেঙে ফেলেছে। আর এসব কিছু ঘটেছে টরন্টো ডাউন টাউনে, শত শত নয় হাজার হাজার দাংগা পুলিশের একদম সামনে।

হতচকিত পুলিশের সম্বিত ফিরতে বেশ সময় লেগেছে। কানাডার জনপ্রিয় কফি শপ টিম হর্টন্‌স, স্টারবাকে লুটতরাজ হয়েছে, এছো (ESSO) নামের একটি গ্যাস স্টেশন দখলও করে রেখেছিল জি-২০ বিরোধী বিক্ষুব্ধ জনতা কয়েক ঘন্টা। নতুন করে ইতিহাস গড়ল টরন্টো। ফেয়ারমন্ট রয়্যাল ইয়র্ক হোটেলের ভিতরে যখন বিশ্বের প্রভাবশালী দেশের নেতাদেরকে প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন হারপার আপ্যায়নে ব্যস্ত, আর বাইরের রাজপথে টরন্টো তান্ডবের ইতিহাস গড়ছিল! শেষ পর্যন্ত অন্টারিও’র প্রিমিয়ার ডাল্টন ম্যাকগুয়েন্টি পর্যন্ত বলতে বাধ্য হয়েছেন, টরন্টোতে আর কোন সামিট নয়, নেভার! ২৬ জুন শনিবার। টরন্টোর দুপুর, ঢাকার গভীর রাত।

মিছিল চলছে দু’জায়গায়ই। এক শহরে সরকারবিরোধী, হরতাল সফল করার জন্য বিক্ষোভ অন্য দেশে ধনী দেশসমূহের ব্যয় বহুল ফ্রুটলেস সম্মেলনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। দুই জায়গায়ই পুলিশ পেটাচ্ছে, নির্দয় প্রহারে মাটিতে লুটিয়ে পড়ছে বিক্ষোভকারীরা, মাথা ফেটে রক্ত পড়ছে পৃথিবীর পূর্ব ও পশ্চিমের দুই শহরেই। যারা মূল হোতা তারা নয়, শান্তিপ্রিয় মিছিলকারী অথবা পথচারীদের পিঠের উপর পড়ছে পুলিশের নির্দয় লাঠি। আমরা যারা টরন্টো ডাউন টাউনে দৈনিক অফিস করি তাদের কাছে পরিচিত এই শহরটি একেবারেই কেমন যেন অচেনা হয়ে গেয়েছিল সেই সপ্তাহ।

শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে উঠেছিল চিরচেনা সবচেয়ে ব্যস্ত এলাকা ইউনিয়ন স্টেশনের আশপাশ। কুইন্সপার্ক, ইউনিভার্সিটি এভিনিউ -এ বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল সম্মেলনের তিন চারদিন আগ থেকেই। একটু একটু করে জমতে শুরু করে দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে। কানাডার মানুষদের সব দাবী যেন এতদিন জমা হয়েছিল! জি-২০ একসাথে সবগুলোকে বিস্ফোরিত করে দিয়েছে। একেকদিন একেক গ্রুপ।

পরিবেশবাদীরা বলছে, ধরিত্রী বাঁচাও। কুকুরের গলায়ও প্ল্যাকার্ড ঝুলানো দেখলাম। বিশুদ্ধ পানির জন্য আন্দোলন, পরিবেশ বাঁচানোর আন্দোলন। অন্যদিন এলো গে-লেসবিয়ান কমিউনিটি। দাবী ডিসক্রিমিনেশন করা যাবেনা।

রঙ বেরঙের প্ল্যাকার্ড, ড্রামের তালে তালে নাচ, নানান ধাঁচের টুপি। হরেক গ্রুপের হরেক দাবী, যেন এক মহা উৎসব। হাউজিং ইজ আওয়ার রাইট, বিলিয়ন ডলার ইজ নট ফর পুলিশ, ইট ইজ ফর হাউজ, কৃত্রিম হ্রদের জন্য খরচ করোনা, প্রাইম মিনিস্টার হারপার ইত্যাদি। মিছিল এমনই এক উন্মাদনা, যা শরীরে দোলা দিয়ে যায়। একদিন ভাবছিলাম ‘ঢুকে পড়ি’।

আহ্‌, কত বছর হয়ে গেল মিছিল করিনা!সেই স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন, খালেদা জিয়ার প্রথম শাসন আমলে আন্দোলন, তারপর থেকেই বিদেশে। রাস্তার আন্দোলন চাঙ্গায় তুলে শুরু হয়েছে জীবিকার আন্দোলন, সকালে ঘর থেকে বেরুনো আর দিন শেষে ঘরে ঢোকার আন্দোলন, যার আর বুঝি শেষ নাই। শনি ও রবিবার ছিল জি-২০ সামিট। জি-৮ হয়েছে আগের দুইদিন বৃহস্পতি ও শুক্রবার। টরন্টো থেকে বেশ দূরে হান্টস্‌ভিলে ৮ দেশের প্রভাবশালী নেতারা মিলিত হয়েছিলেন।

বিক্ষোভ ওখানেও হয়েছে, তবে প্রত্যাশার চেয়ে উপস্থিতি ছিল অনেক কম। পুলিশই নাকি বেশী ছিল পরিমানে। মিছিলকারীরা ভদ্রভাবে দাবী তুলে বিদায় নিয়েছে। এত এক্সপেন্সিভ সম্মেলন করে তৃতীয় বিশ্বের সাথে মশকরা করোনা, কাজের কাজ করো হে বিশ্বের নেতারা! ডেজিগনেটেড এরিয়া পার হয়নি তারা। তটস্থ সটান পুলিশকে বেশী ঝামেলা পোহাতে হয়নি।

এই হান্টসভিলেই জি-২০ সম্মেলনও হওয়ার কথা ছিল। হারপারের ইচ্ছায়ই তা টরন্টোতে নেয়া হয়। উদ্দেশ্য টরন্টো সিটির এডভার্টাইজমেন্ট, বানিজ্যিক রাজধানীর গুরুত্ব বিশ্ববাসীকে তুলে ধরা, মাল্টিকালচারিজমের বিউটি তুলে ধরতে বেশী সাংবাদিকের উপস্থিতি নিশ্চিত করা। কিন্তু সে উদ্দেশ্যবুমেরাং হয়ে গেল। টরন্টোর কুৎসিত রুপ সেদিন বিশ্ববাসী দেখল।

প্রথমবারের মত সামিট হল কানাডায়। তাই একটু বেশীই নিরাপত্তা। কানাডার ইতিহাসে সবচেয়ে ব্যয়বহুল এক দশমিক এক বিলিয়ন ডলারের কঠিন নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তুলেছিল কানাডার রয়্যাল পুলিশ। অন্টারিও’র সব বড় বড় শহর যেমন, হ্যামিল্টন, ওয়াটারলু, অটোয়া ইত্যাদি থেকে দক্ষ পুলিশ এনে আইএসইউ (Integrated Security Unit) গঠন করা হয়েছিল। প্রায় ৪০ হাজারের মত সুসজ্জিত আধুনিক যন্ত্রপাতি ও ভারী অস্ত্র-শস্ত্র সজ্জিতঅভিজ্ঞ পুলিশ নিয়ে গঠন করা হয়েছিল নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা।

ডাউন টাউনের কেন্দ্রবিন্দুগুলোতে নিরাপত্তা বেস্টনী দিয়ে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছিল। যাকে তাকে তল্লাশী করতে মাত্র এক সপ্তাহের জন্য ব্যাপক ক্ষমতা দেয়ার বিতর্কিত বিলও গোপনে পাশ করা হয়েছিল। যা নিয়ে এখনো রীতিমত বিতর্কচলছে। কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে মেশিনগান নিয়ে পুলিশ সার্বক্ষণিক স্থির দাঁড়িয়ে থাকত। কানাডায় পুলিশের এরকম দৃশ্য একেবারেই অপরিচিত।

এক প্রকার ভীতিই ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র। দুইদিন আগের ৫ রেক্টার স্কেলের ভূমিকম্পেও টরন্টোরিয়ানরা মনে করেছিল এটা বুঝি সন্ত্রাসীদের ভারী কোন হামলা! ভারী মেশিনগান, মাথায় হেলমেট, লম্বাবুট , হাতে লাঠি, মুখে বাঁশি, মুখ ভারী করা এমন পুলিশ বাহিনী কানাডিয়ানরা কখনো দেখেনি। তবে পুলিশ প্রধাণ আগে থেকেই জনগণকে নিশ্চিত করেছিলেন এই বলে, কোন ধরণের সহিংসতা বা সন্ত্রাসী বা আল-কায়েদার হামলার কোন আশংকা তারা করছেন না। তবে সামনের কয়েকদিনে শহরে প্রচন্ড রকমের বিক্ষোভের আশংকা পুলিশ জনতাকে নিশ্চিত করেছে। হাইওয়েতে সতর্কতা মূলক সাইন থাকত, সিগনিফিক্যান্ট ডিলের জন্য প্রস্তুত থাকতে, প্রয়োজনে এই রোডগুলোতে ড্রাইভ না করতে ।

অফিসগুলোতে বলা হয়েছিল ওই দিনসবে ছুটি নেয়ায় শ্রেয়। মংগল, বুধ, বৃহস্পতিবার ভালোই চলছিল। খন্ড খন্ড মিছিল, পুলিশের সাহায্য নিয়ে মিছিলকারীদের রাস্তা পার, সবকিছুই নিয়ম-মাফিক ছক বাধা পথেই এগুচ্ছিল। এমন কয়েকজন পুলিশকেও দেখলাম যারা মিছিলকারীদের মাথার টুপি নিজেরা পড়ে বেশ মশকরায় লিপ্ত। বিপত্তি ঘটে গেল শনিবার।

এ যেন সত্যি শনির দশা! হাজার হাজার মানুষ টরন্টোর রাস্তায়। যেদেশে মাত্র একশো জন মানুষ রাস্তায় দাবী-দাওয়ার প্ল্যাকার্ড বুকে ঝুলে দাঁড়িয়ে থাকলে নিউজ হয়, সেখানে কিনা হাজার হাজার মানুষ! মিছিলে মিছিলে প্রকম্পিত টরন্টোডাউন টাউন। কৌতুহলী মানুষের প্রচন্ড ভীড়। জিজ্ঞাসা কি চায় এই সব বিক্ষোভকারীরা? প্রত্যেকটা রাস্তায় গিজ গিজ করছে পুলিশ। কানাডার সবচেয়ে বৃহত্তম ও ব্যস্ত এলাকা ইউনিয়ন স্টেশন।

এর চতুর্দিকে কয়েক ফুট উঁচু করে বেড়া দেয়া হয়েছে। পুরান ঢাকার মত পুরান টরন্টোর সরু রাস্তাগুলোকে ব্যরিকেড দিয়ে আরো অর্ধেক করা হয়েছে। পথচারীদের তল্লাশী চলছে থেমে থেমে। সিকিউরিটি জোনের ৫ মিটারের মধ্যে কেউ এলেই পুলিশ তাকে তল্লাশী বা প্রয়োজনে গ্রেফতারের ক্ষমতা রাখে এই সপ্তাহে! কিন্তু হঠাৎ করেই ‘ব্লাক ব্লক’ নামের এক গ্রুপ পুলিশ সব আয়োজন তছনছ করে দেয়। আগে এই গ্রুপের নাম তেমন কেউ শোনেনি।

এদের কাজই নাকি বিশ্বের যেখানে যেখানে জি-২০ ও জি-৮ সম্মেলন হয় সেখানে গিয়ে বাধা প্রদানকরা, নাশকতামূলক কাজের মাধ্যমে ভীতি ছড়ানো। দ্রুততম সময়ে অভিনব উপায়ে পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে সফলভাবে নাশকতামূলক কাজের বাস্তবায়নকরল ব্ল্যাক ব্লক। মাত্র শ’খানেকের এই গ্রুপ বিশাল মিছিল থেকে কালো মুখোশ পড়ে মুহুর্তের মধ্যে ঢুকে খোদ পুলিশের বেস্টনীতে। কারো বুঝে উঠার আগেই পুলিশের দুইটি গাড়ীতে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। হতভম্বিত পুলিশ।

ব্ল্যাকব্লক এবার হামলা চালায় বানিজ্যিক কেন্দ্র টরন্টোর ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে। কালো মুখোশ পরে হাতে বিস্ফোরক দ্রব্যের পাত্র নিয়ে দৌড়াচ্ছেএদিক ওদিক। এরকম ছবিই টিভি ফুটেজ দেখাচ্ছিল বারেবার। কাজ শেষেই সরে পড়ছিল এই পেশাদারী সন্ত্রাসী গ্রুপ। পোশাক পাল্টে মুহুর্তেই আবার মিছিলকারীদের সাথে একাট্টা হয়ে যাওয়ার ছবি দেখাল টিভির বিভিন্ন চ্যানেল।

জনপ্রিয় কফি স্টেশনগুলোতেও তারা লুটতরাজ চালায়। দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নামে। পুলিশ এবার একশনে, একদম যেন ঢাকার মারদাঙ্গাপুলিশ! পেটাতে থাকে হাতের কাছে যাকে পায় তাকেই। দিন রাত মিলে সেদিন গ্রেফতার করে ১৭৫ জন। নেতাদের বাসা বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ।

অনেক প্রফেসর, স্টুডেন্টদেরকে রাতে ঘুমাতে দেয়নি। ইউনিভার্সিটিগুলোতে চলছিল সামার ভ্যাকেশন। হল ফাঁকা থাকলেও প্রাইভেট ডরমিটরীতে অবরোধ করে পুলিশ গ্রেফতার করে অনেককে। পরদিন ২৭ জুন রোববার। মিছিলে মিছিলে সয়লাব টরন্টোর রাজপথ।

সাথে দাবি যোগ হয়েছে শনিবারের বর্বরতা। ভিন্নরুপে এবারো পুলিশ। আগেরদিনের প্রতিশোধ। বিক্ষোভকারীদের বলতে গেলে রাস্তায় দাঁড়াতেই দেয়নি। হ্যান্ডমাইকে ঘোষণা আসে।

হাত উঁচু করে সবাই চুপ করে দাঁড়িয়ে থাকুন, এই সংক্ষিত এলাকার মধ্যে যারা আছেন কেউ এক পা নড়বেন না। ইউ অল আর আন্ডার এরেস্ট। বৃষ্টির মধ্যে বিক্ষোভকারীরা ঘন্টা দুয়েক ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে। সাংবাদিকরাও পুলিশের এমন আচমকা ডিটেনশন থেকে রেহাই পায়নি। কাউকে হ্যাঁচকা টানে রাস্তায় ফেলে দেয়।

এক মেয়েকে দেখলাম গড়িয়ে পরছে রাস্তায়। চীৎকার করে বলছে আমি পিচ এক্টিভিস্ট। পুলিশের লাঠির বারি খেয়ে মাথা থেকে ফিনকি বেয়ে রক্ত বেরুচ্ছে। গ্রেফতারের সংখ্যা বেড়ে নয়শ’তে গিয়ে দাঁড়ায়। মিডিয়াগুলো লাইভ কভারেজ দিতে থাকে।

ব্রেকিং নিউজ চলছিল একটু পর পরই। কিন্তু সিএনএন চুপচাপ। শুনলাম সিএনএন নাকি বলছে, ঘটনা একেবারেই সামান্য! জি-২০ বিরোধী আগের বিক্ষোভগুলোর তুলনায় এটা খুবই নগন্য! কানাডিয়ানদের অভিযোগ, সাউথের কাজিন প্রতিবেশীরা নাকি এমনই বৈষম্য আচরণ করে নর্থের সাথে। যাহোক, পরদিন অফিসে গিয়ে অতি আগ্রহ নিয়ে পত্রিকার পাতায় চোখ বুলালাম। সরকারের সমালোচনায় সব পত্রিকা একাট্টা।

নির্দয় প্রহারের ঘটনায় সবাই নিন্দায় মুখর। পুলিশের বাড়াবাড়িতে পুলিশে পুলিশিং করতে প্রাক্তণ পুলিশদের দিয়ে তদন্ত কমিটি গঠণ হল। পুরো স্ট্র্যাটেজি নিয়ে রিভিউ কমিটি। কমিটি প্রধান অলোক মুখার্জী জনগণকে বললেন, অভিযোগ ফাইল করতে। পুলিশ প্রধাণকে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পুলিশ পাহাড়ায় যেতে হল যে দৃশ্য কানাডায় সচরাচর হয়না।

রাস্তায় চলছিল জনতার ‘শেম শেম’ ধ্বনি। কয়েকদিন ধরে পত্রিকার পাতা জুড়ে থাকল পুলিশ কর্তৃক বর্বরতা ও নিষ্ঠুরতার রগরগা বিবরণ। ডিটেনশনে কেমনভাবে তাদেরকে কয়েক ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে খাবার ও পানি ছাড়া, গাদা করে একজায়গায় কত জনকে এক সাথে রাখা হয়েছে, অজানা উদ্দেশ্যে তাদেরকে নিয়ে পুলিশের কয়েক ঘন্টার একটানা লং ড্রাইভ অথচ বলছিল বাসায় পৌঁছানোর কথা, মহিলা ডিটেইনীদের পুরুষদের বাথরুম ব্যবহার করতে বাধ্য করা ইত্যাদির বিবরণ পত্রিকাগুলোর পাতা জুড়ে। আমার অফিসের সামনের স্ট্রীটেই পুলিশের গাড়ি পার্কিং এর স্থান। বেশ বড় জায়গা।

প্রতিদিন অনেক পুলিশ জড়ো হয়। সোমবারে অফিসে গিয়ে হাঁটতে হাঁটতে গেলাম তাদের প্রতিক্রিয়া দেখতে। দেখলাম মুখোশ ও ক্যামেরা সংযুক্ত টুপি পড়ে পুলিশেরা একসাথে ছবি তুলছে। এরকম ড্রেসের সুযোগ ভবিষ্যতে হয়তো আর নাও আসতে পারে। গেল সপ্তাহের রাজপথের নানান অংগভংগি নিজেরা করে বেশ মজা করছে তারা।

দু’হাঁটু নীচু ও দু’হাত কান বরাবর রেখে ঘোড়ার মত চিঁহি চিহি শব্দ করছে। আমি এগিয়ে গেলাম আরোসামনে চেরী লুপ বীচের সন্নিকটে। এক মা তার ছেলেকে সাহায্য করছে বালি নিয়ে খেলতে। শান্ত চেরী বীচের ওপাড়ে পানি ছোঁয়া সারিবদ্ধ গাছগুলোবর্ষাকালে ঠিক আমার প্রিয় ইছামতীর তীড়ের গাছগুলোর মত মনোরম দেখাচ্ছে। দুপুর বেলার ঝকঝকে অসীম আকাশের সীমানা যেন টরোন্টোর এক লেক ঘেঁষা চেরী গাছের নীচেই শেষ হয়ে গেছে


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.