সাধারন মানুষ
মুসা ইব্রাহিমকে নিয়ে প্রথম আলো যেভাবে উঠে পরে লেগেিছল এবং এখেনা েলেগ অােছ তাতে মনে হচ্ছে প্রথম আলো-ই একমাত্র মুসা ইব্রাহিমের হিতাকাংখি। আজ এই বিশাল বিজয়ের জন্য প্রথম আলো দাবীদার। হায় কি বিচিত্র দেশ!!!
অথচ আমরা অনেকেই জানি, এই মুসা ইব্রাহিমকে প্রথম আলো একটি চাকরি পর্যন্ত দেয়নি। তারা বলছে, সে তাদের প্রদায়ক ছিল। সেটাতো ৪ বছর আগের কথা।
একটি পত্রিকায় কয়েকশ কিংবা হাজার প্রদায়ক থাকতে পারে। কিন্তু তারাতো কোন পত্রিকার নিয়মিত কিংবা বেতনভিত্তিক স্টাফ না। আপনারাতো স্ট^ীকার করেন না, এই প্রদায়করাই লেখালেখি করে আপনাদের পত্রিকার মান বাড়িয়েছেন। ফলে আজ আপনারা মতিউর রহমান, আনিসুল হক হয়েছেন। কিন্তু সে প্রদায়ক বা কন্ট্রিবিউটরদের খোঁজ কি রাখেন?
আমরা জানি, প্রথম আলোতে মুসা ইব্রাহিম প্রদায়ক হিসেবে লেখালেখি শুরু করেছিল সেই ৪/৫ বছর আগে।
দীর্ঘদিন সুনামের সাথে লেখালেখি করার ৪ বছর পর তার ইচ্ছে ছিল- স্থায়ী চাকরিটা প্রথম আলোতে যদি হয়।
কিন্তু ভাগ্যের কি নির্মম পরিহাস! প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান বা আনিসুল হক কেউ তাকে সে সময়ে চাকরি দেয়নি।
যখন নয়া দিগন্ত পত্রিকা প্রকাশিত হয় তখন একেবারে বাঁচার তাগিদেই মুসা সেখানে জয়েন করেছিল একটি পাতার দায়িত্ব নিয়ে সাব এডিটর পদে।
নয়াদিগন্ত পত্রিকায় জয়েন করার আগে সে মতিউর রহমানের সাথে সাাত করে অনুনয় করে বলেছিল, ‘আমার নয়া দিগন্তে অফার আছে। কিন্তু আমি যেতে চাচ্ছিনা।
’ সেই সময়ে মতিউর রহমান তাকে নীতিবাক্য শুনিয়ে বলেছিল-‘কোন কিছুতে মোহগ্রস্থ হয়ে থেক না। ’ এরপর অনন্যোপায় হয়ে সেই সময় মুসা ইব্রাহিমসহ অনেক নয়া দিগন্তে জয়েন করেছিল।
এর পরের ঘটনা হলো- যায়যায়দিন যখন আসার কথা শোনা গেলে, তখন মুসা ইব্রাহিম উন্নত ক্যারিয়ারের কথা ভেবে সেখানে জয়েন করল। এরপর কিছুদিন যেতে না যেতেই ২০০৭ সালে যখন যাযায়দিন থেকে বিশাল সংখ্যক কর্মী ছাটাই হলো-তখন মুসাও বাদ পড়লো।
এরপর মুসা ইব্রাহিম মরিয়া হয়ে লাগলো কীভাবে প্রথম আলোতে চান্স পাওয়া যায়।
এই সময়ে সে প্রথম আলোর আশপাশে ঘোরাঘুরি করত বেশি বেশি। তার পরিচিতরা সবাই তখন এই পত্রিকায়। সবাই-র প্রিয় পাত্র ছিল সদা হাস্যোজ্বল এই মুসা ইব্রাহিম।
দীর্ঘদিন সে চাকরি না পেয়ে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে লেখালেখি অব্যহত রাখছিল। সে সময়ে তাকে দেখলে খুব খারাপই লাগত।
বেচারি বৌকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় যেত একটা হোন্ডাতে করে। স্ত্রী তখন সহকারী জজ হয়ে গেছেন।
এরও অনেক দিন পর ডেইলি স্টারে সে জয়েন করল একজন সাধারন সাব এডিটর হিসেবে।
অথচ ততোদিনে তার সমকরা অনেকেই বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছে বিভিন্ন পত্রিকায়। অনেকেরই পদবী তখন তার থেকেও অনেকে ওপরে, বেতন ভাতার কথাতো বলাই বাহুল্য।
এতকিছুর পরও কিন্তু তার পাহাড় অভিযান থেমে থাকেনি মুসার। বলা যায়-ব্যাক্তিগত উদ্যোগে, প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে সে এভারেস্ট জয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছিল। আজ তার সে সপন পুরন হয়েছে। এরজন্য প্রথম আলোর ভুমিকা কি?
বরং এই পর্যন্ত এসে সে তার ক্যারিয়ারকে ধ্বংস করেছে। ক্যারিয়ারের অনেক অবনতি হয়েছে।
কিন্তু টার্গেট থেকে সে বিচ্যুত হয়নি।
পত্রিকায় আনিসুল হক লিখেছেন-তাকে টাকা যোগার করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা জানি, শুধুমাত্র টাকার কারনেই তার অভিযান থেমে ছিল। চেষ্ঠা যা ছিল-তার একান্তর নিজের।
গতকাল (২৪ মে, ২০১০) প্রথম আলোতে সুমনা শারমিনের লেখায় জানলাম-মুসার স্ত্রী বলেছেন, এই সাফল্য সম¢ব হয়েছে মুসার প্রবাসী বোন ও মতি ভাইয়ের জন্য।
একথা কি সঠিক? অন্তত: মুসা ইব্রাহিমের বৌ একথা বলতে পারেন বলে মনে হয় না। এখানে মতিউর রহমানের কি ভুমিকা? পাঠকের কাছে এ প্রশ্ন রেখে দিলাম।
আজ এভারেস্ট বিজয়ের পর আনিসুল হক ছুটে গেছেন নেপালে। কিন্তু আপনারা কি পারতেন না, এই ছেলেটিকে একটা চাকরি দিতে। সেতো যথেষ্ঠ যোগ্য ছিল।
আইটি সাংবাদিকতা করতো। যোগ্যতা না থাকলে কেউ আইটি সাংবাদিকতা করে না। আজ যদি তার পারিবারিক অবস্থা তেমন ভাল না হতো কিংবা তার সুযোগ্য স্ত্রী না থাকতো তবেতো এই ছেলে অভাবের তাড়নায় হারিয়ে যেতো। আজ এত বড় বিজয়ের পর বলছেন-সে আপনাদের প্রদায়ক ছিল। প্রদায়ক মানে কি? সাধারন জনগন এটা তেমন না বুঝলেও সাংবাদিকরা তো বুঝেন।
মোটকথা, মুসা ইব্রাহিম যখন চাকরি চান প্রথম আলোতে তখন হয়তো তার যোগ্যতা ছিলনা। এখন সে এভারেস্ট জয় করে প্রমান করেছে তার যোগ্যতা আছে। ঐ সময় মুসা ইব্রাহিম ঘুরতেন মতিউর রহমান, আনিসুল হকদের পেছনে পেছনে। আজ মতিউর, আনিসুল হকরা ঘুরছেন মুসার পেছনে। এই হলো প্রথম আলোর রাজনীতি।
আর এই রাজনীতি করেই প্রথম আলো আজ এই পর্যায়ে পৌছেছেন।
বড়ো কষ্ট হয়। প্রথম আলোর মতিউর রহমান, আনিসুল হকদের কাছে এ রকম ভন্ডামি আমরা আশা করিনা। মুসা ইব্রাহিমের এতবড় সাফল্যে আপনারাও যে তাকে হতাশার মধ্যে রেখেছিলেন সেই কথাগুলোই আজ বেশি বেশি বলে জাতির কাছে মা চান। আপনাদের ভন্ডামি এবার বন্ধ করুন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।