CONNECTION FAILED
কয়েকদিন ধরেই নীলার সাথে আমার খুব ঝামেলা হচ্ছে , কেন ? বলতে পারতেছি না ! আগে তো এমন হতো না , ইদানিং ওর সাথে সব কিছুতেই এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে যা আগে কখনও হতো না ! নাহ , মাথা ধরেছে প্রচন্ড , সাথে চোখও ব্যথা করছে ।
ডিংডং
- কি ব্যাপার আজ এতো দেরী কেন ?
- কোথায় দেরী তোমাকেতো দুপুরে বললামই আজ আসতে দেরী হতে পারে , তারপরও তো তাড়াতাড়ি এলাম ।
- কখন বললে ? দেখো এই সব ফালতু কথা বলবা না আমার সাথে বুঝছ ?
আমার কানে ওর গলার স্বরটা খুব বেশি জোরালো মনে হলো , অথচ আমি এতো জোরে কখনও কথা বলি না , ব্যাপারটা আসলে ভাবিয়ে তুললো আমাকে , আমি চুপ করে থাকলাম ।
- তুমি খেয়ে নাও , আমি খেয়েছি ।
এই ব্যাপারটা আগে কখনও ঘটেনি , ইদানিং ঘটছে , আমার খুব খারাপ লাগলো এভাবে একা একা খেতে ।
..............
আমি হাঁটছি , অনেক সুন্দর একটা পথে , আমার খুব পছন্দের একটা পথ এটা , আগে মাঝে মাঝেই আসা হতো , এখন ব্যস্ততায় খুব আসা হয় না । আজ অনেকদিন পর এলাম , ভালই লাগছে । এই পথে আমার আর নীলার আমাদের দুজনের সমস্ত স্মৃতি একে একে সাজানো । আমার যখন ইচ্ছে করে স্মৃতিতে ডুব দিতে তখন আমি এই পথে আসি , এক একটা দরজা খুলে আমি উপভোগ করি । আমাদের সেই প্রথম দেখা , সেই প্রথম ছোঁয়া ! তারপর একে অপরের অপেক্ষায় কেটে যাওয়া বিনিদ্র কতশত রাত ।
কতবার নীলার খেয়ালী অভিমান ভাঙ্গতে আমি কত পাগলামি যে করেছি তার সবকিছুই নীলা সাজিয়ে রেখেছে পরম যত্নে । নীলার এই ব্যাপারটা আমার কাছে খুব ভালো লাগে । ও আগে থেকেই খুব গোছানো মেয়ে । যদি গুছিয়ে রাখতে না পারে তাহলে যেনো ওর ঘুম হারাম হয়ে যায় , এলোমেলো এই আমি যে কতবার তার মিষ্টি কন্ঠের ঝাড়ি খেয়েছি মনে হলেই কেমন যেনো একটা মুচকি হাসি চলে আসে ।
কিন্তু ইদানিং যেনো কেমন হয়ে গেছে ? কেন এমন হলো ? আচ্ছা যাই হোক , আমি মাথা থেকে দুশ্চিন্তা ঝেড়ে ফেলে স্মৃতির পথে ঘুরতে থাকি ।
হঠাৎ একটা অচেনা দরজার সামনে দাঁড়ালাম মনে হলো ! আমার কপালে ভাঁজ স্পস্ট হয়ে উঠলো । এটা আমার সবসময়ই হয় , নীলা এই ব্যাপারটায় বেশ মজা পায় । কিন্তু দরজাটা খুলছে না কেন ? মনে হচ্ছে সেখানে আমার প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ ! আমার রাগ উঠলো , হাতের শিরাগুলো কাঁপতে লাগলো ,
-কি ?নীলার স্মৃতির রাস্তায় আমার প্রবেশাধিকার নেই ?
জিদে প্রচন্ড ধাক্কায় দরজাটা ভেঙ্গে ফেলি , আমি ঢুকে পরি অনেক কৌতুহল নিয়ে ,আমার কাছে পুরোপুরিই অপরিচিত এই রাস্তা । কিছুদুর এলোমেলো হাঁটাহাঁটি করতে থাকি , তেমন কিছু চোখে পরছে না , তাহলে নীলা এই দরজাটা আমার জন্য আটকে রেখেছিলো কেন ?
কে জানে আমি হয়তো ফিরেই যেতাম ! কিন্তু যখনই এই চিন্তা মাথায় আসলো আমার পা আরো দ্রুতগতিতে সামনে এগিয়ে নিয়ে গেলো ।
একি! ওহ, মাই গড !! এই লোকটি কে ? নীলার সাথে ঘুরছে ,ফোনে কথা বলছে ! হাত ধরে তাকিয়ে আছে !! কে এই লোক ? এতো বড় সাহস ? আমি আরো সামনে হেঁটে যাই , ওহ! এই দৃশ্য দেখার জন্য কি আমি আজো বেঁচে আছি ? নীলা ওর সাথে
ঘুমিয়ে আছে একেবারে একান্ত করে !!! আমার প্রচন্ড কান্না আসতে লাগলো , কেন কেন ? এমন দেখলাম কেন ? আমি প্রচন্ড
যন্ত্রনায় কুঁকড়ে গেলাম ।
পুরো আকাশ আমার উপর ভেঙ্গে পরেছে ।
হঠাৎ মাথা চারা দিয়ে উঠলো , ধীরে ধীরে আমি শক্ত হলাম , আমার মাথায় প্রচন্ড খুন চেপে গেছে , একটা কিছু করতে হবে । যেকোন কিছু !
আমি এগিয়ে যাই , ওদের সেই মিলন মুহুর্তে । হঠাৎই ঘুম ভেঙ্গে নীলা আমাকে দেখে যেন ভয়ে চিৎকার দিয়ে উঠতে চাইলো । আমি খুব নিষ্ঠুর হাতে ওর মুখ চেপে ধরি ।
ও দ্রুতই ভয়ে অজ্ঞান হয়ে যায় , আমিও এটাই চাইছিলাম ।
এবার লোকটিকে দেখি , প্রচন্ড ঘৃণায় বমি আসে আমার , এই লোকটি আমার ভালোবাসাকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নিয়ে ভোগ করছে , আমি ওর হাত দুটো দেখি , পাশবিক আনন্দের সাথে তার হাত দুটো ভেঙ্গে দেই , সে চিৎকার করে ওঠে , আমি ভ্রুক্ষেপ করি না এরপর তার মাথাটা ধরে আমি ঘাড় মটকানোর চেষ্টা করি , এর
মধ্যে যেন নীলার জ্ঞান ফিরে আসে , সে এসে আমাকে বাধা দেয় , এক ধস্তাধস্তির ভিতর হঠাৎই আমি যেনো জ্ঞান হারাতে শুরু করি , আমার মনে হচ্ছে যা করার দ্রুত করতে হবে । আমি শেষ হিসেবে ওই লোকটির ঘাড়টা ঘুরিয়ে দেই , সাথে সাথেই আমি হারিয়ে ফেলি নিজেকে ।
.............
- এই , শুনছ ? উঠো অফিসে যাবা না ? দেরী হচ্ছেতো ?
- হুম , কি ? কয়টা বাজে ?
- আজ এতো ঘুমাচ্ছ কেন ? উঠে পর ।
- একটু এদিকে আসতো ।
আহ! আসই না ।
আমি হাত ধরে টান দেই , আমার বুকে এসে পরে , আমি নীলার গভীর চোখে তাকিয়ে বলি ,
- আজ যাবো না , সারাদিন তোমার সাথে থাকবো ।
খুশীর ঢেউ খেলে যায় ওর মুখে ,
- সত্যি !!!
হঠাৎ নীলার একটা ফোন আসে ,
- হ্যালো কে বলছেন ?
নীলা প্রচন্ড রেগে ওঠে ,
- আপনি কে ? আমার সাথে এভাবে কথা বলছেন কেন ? কি আজব ! আপনার এতো সাহস ?
আমি কৌতুহলী হয়ে বলি
- কে ?
- দেখোত , কে ? আমার সাথে উল্টা পাল্টা কথা বলছে ।
আনমনে আমার একটা বিজয়ীর হাসি আসে, আমি ফোনটা নিয়ে ঝাড়ি দিতে থাকি ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।