আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই পাগল পাগল মেয়েটির আচরণে পুলিশ অসহায় হয়ে পড়ছে।

সকালের মিষ্টি রোদ পেরিয়ে আমি এখন মধ্যগগনে,
নাম তার ফেরদৌসী। বয়স উনিশের কোঠায়। থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট আর গায়ে সবুজ রঙের টি-শার্ট। দেখে মনে হয় শান্তশিষ্ট সুবোধ বালিকা। তবে নিরীহ ও মায়াময় চেহারা হলেও মাঝে-মধ্যেই রেগে যায়।

আবার কখনও শূন্যে চোখ মেলে অপলক তাকিয়ে থাকে। গতকাল রোববার দুপুর ২টায় রাজধানীর গুলিস্তান জিরো পয়েন্ট এলাকা থেকে 'পাগলামি' করার কারণে মেয়েটিকে আটক করে পুলিশ। জিরো পয়েন্টে দাঁড়িয়ে এক পথচারীর ব্যাগ তল্লাশি করছিল মেয়েটি। ভয়ে লোকটি যখন ঠায় দাঁড়িয়ে, তখনই মেয়েটি হেসে উঠল। এ সময় আশপাশের পথচারীরা দেখলেও বিষয়টি এড়িয়ে যান।

তবে চোখ এড়ায়নি ট্রাফিক পুলিশের। তারা গিয়ে আটক করেন ফেরদৌসীকে। ট্রাফিক পুলিশকে ফেরদৌসী জানায়, আমি আইনের লোক। ট্রাফিক পুলিশ বুঝে যান মেয়েটি 'মানসিক ভারসাম্যহীন'। সঙ্গে সঙ্গে তাকে পাঠানো হয় শাহবাগ থানায়।

আর থানায় যাওয়ার পর থেকেই তার পাগলামি বাড়তে থাকে। দুপুর ২টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত মেয়েটির আচরণে পুলিশ অসহায় হয়ে পড়ছে, একই সঙ্গে অতিষ্ঠ। থানায় ঢোকার পর প্রথমেই পুলিশের সঙ্গে একদফা বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে সে। থানার অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম তার কাছে পরিচয় জানতে চাইলে বলে ওঠে 'আমি তেহারি খাব। ' দোকান থেকে তার জন্য তেহারি আনা হয়।

তেহারি খাওয়ার পর বলে, আমি সেভেন-আপ খাব। আনা হয় সেভেন-আপ। খাওয়া শেষ হলে তার কাছে জানতে চাওয়া হয় বিস্তারিত পরিচয়। ফেরদৌসী পুলিশকে জানায়, তার বাবার নাম শওকত আলী, বাগেরহাটের খানপুরে তাদের বাড়ি। বাবা-মা তাকে পায়ে শিকল পরিয়ে রেখেছিল বলে পুলিশকে জানিয়েছে।

ফেরদৌসী কীভাবে ঢাকায় এসেছে আর কেনইবা এ রকম আচরণ করছে_ জানতে চাইলে ক্ষেপে গিয়ে ফেরদৌসি হেসে ফেলে। আর বলে ওঠে 'আমি কিছুই বলব না। ' এ অবস্থায় তাকে তেজগাঁওয়ের ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় শাহবাগ থানা পুলিশ। শাহবাগ থানার ওসি রেজাউল করিম জানান, ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে গিয়ে ডিউটি অফিসারের সামনে রাখা মোবাইল ফোন সেট দেখার কথা বলে আছাড় মেরে ভেঙে ফেলে ফেরদৌসী। পাশাপাশি শাহবাগ থানার যে এসআই তাকে নিয়ে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে গিয়েছিলেন তাকে মারধর করে।

এরপর তাকে আবারও ফিরিয়ে আনা হয় শাহবাগ থানায়। সেখানে মেয়েটিকে দেখতে ভিড় জমে যায়। ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের ডিউটি অফিসার আফরোজা আইরিন কলি সমকালকে বলেন, সেন্টারে যাওয়ার পর তাকে একটি রুমে রাখার চেষ্টা করা হয়। রুমে ঢুকেই দরজায় ধাক্কাধাক্কি করতে থাকে মেয়েটি। তারপর তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।

এদিকে শাহবাগ থানার ওসি গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে বলেন, মেয়েটিকে শান্ত করার চেষ্টা চলছে। বুঝিয়ে-শুনিয়ে রাতেই (গতকাল) তাকে সাপোর্ট সেন্টারে পাঠানো হবে। কারণ থানায় কয়েদিদের সঙ্গে এ রকম অপ্রকৃতিস্থ মেয়েকে রাখা সম্ভব নয়। ওসি বলেন, অনেক বেশি মানসিক যন্ত্রণার কারণেই মেয়েটি এমন পাগল পাগল আচরণ করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করার ব্যবস্থা নিতে হবে।

http://www.shamokal.com/
 


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।