আমি আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করছি। গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার জন্য লড়াই করছি। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। বন্ধ করে দেয়া দৈনিক আমার দেশের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান গতকাল সুপ্রিম কোর্টে হাজিরা শেষে সংবাদকর্মীদের এসব কথা বলেন। এছাড়া তিনি তার সহকর্মীদের বলেছেন, আমাকে নিয়ে কী করবে।
মেরে ফেলবে। আই অ্যাম রেডি টু ডাই। আদালত অবমাননা মামলায় গতকাল সকালে তাকে কারাগার থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে হাজির করা হয়।
এ সময় তার হাতে বাংলাদেশের সংবিধান, ‘সংবিধান ও গণতন্ত্র’ নামে বই ছিল। সকাল ৯টা ৫ মিনিটে তাকে হাজির করা হলে প্রায় ১৫ মিনিট তিনি তার পত্রিকার সহকর্মী ও আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন।
আইনজীবীদের মধ্যে এ সময় ছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন প্রমুখ। আইনজীবীরা আদালত অবমাননা মামলায় মাহমুদুর রহমানকে ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিলে তিনি বলেন, আমি ক্ষমা চাইবো না। সকাল ৯টা ২০ মিনিটে প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ ফজলুল করিমের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানি শুরু হয়। এ সময় মাহমুদুর রহমান ছাড়াও পত্রিকাটির সাবেক প্রকাশক হাসমত আলী ও তিন সাংবাদিক হাজির ছিলেন। তাদের আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আদালতকে জানান, এ মামলায় মাহমুদুর রহমান শোকজের জবাব দেবেন।
বাকি চার আসামি নিঃশর্ত ক্ষমা চাইবেন। এ জন্য সময়ের প্রয়োজন। তিনি চার সপ্তাহ সময় দেয়ার জন্য আবেদন জানান। আপিল বিভাগ ১২ই আগস্ট পর্যন্ত সময় দেয়। ওইদিন পরবর্তী শুনানি হবে।
ওইদিন মাহমুদুর রহমানসহ অন্য আসামিদের হাজির হতে হবে। শুনানিকালে মাহমুদুর রহমানের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার ইমরান সিদ্দিকী, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, এডভোকেট সালেহউদ্দিন প্রমুখ। শুনানি শেষে ৯টা ৩০ মিনিটের দিকে মাহমুদুর রহমান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষে যান। সেখানে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক সাংবাদিকদের বলেন, চার আসামি ক্ষমা চাইবেন। মাহমুদুর রহমান ক্ষমা চাইতে রাজি হননি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে এ প্রথম কাউকে কারাগার থেকে সুপ্রিম কোর্টে হাজির করা হলো। ডিজিটাল বাংলাদেশে এটা হচ্ছে ইতিহাস। আইনজীবীদের সঙ্গে পরামর্শকালে মাহমুদুর রহমান জানান, তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। ১০টা ৫ মিনিটের দিকে মাহমুদুর রহমানকে প্রিজন ভ্যানে করে সুপ্রিম কোর্ট থেকে নিয়ে যাওয়া হয়। আদালত অবমাননা মামলায় গত ২রা জুন মাহমুদুর রহমানসহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেছিল আপিল বিভাগ।
একই সঙ্গে তাদেরকে হাজিরেরও নির্দেশ দিয়েছিল। মাহমুদুর রহমান ছাড়া এ মামলার অন্য চার আসামি হলেন আমার দেশের সাবেক প্রকাশক হাসমত আলী, বার্তা সম্পাদক মুজতাহিদ ফারুকী, উপ-সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ ও বিশেষ প্রতিনিধি অলিউলৱাহ নোমান। ‘চেম্বার জাজ মানেই রাষ্ট্রপক্ষে স্টে’ এমন শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের জন্য রিয়াজউদ্দিন খান ও মাঈনুল হাসান এ আদালত অবমাননা মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।