এক ঝাঁক বিনোদনপ্রেমিীদের বৈকালিক আ্ড্ডা যখন চোখে পড়ল তখন পশ্চিম আকাশে সূর্য অস্ত যা্চেছ। সুরমা নদীর প্রবাহমান পানিতে তখন সূর্যাস্ত উপভোগ করছেন সুন্দরের পূজারী এক ঝাক তরুণ-তরূনী। ক্বীন ব্রিজের নিচে একমাত্র সুরমার তীর ছাড়া এমন দৃশ্য সিলেট নগরীর আর কোথাও পাওয়া যায় না। নগরবাসী আজ কর্ম ব্যাস্ত এই যান্ত্রি নগরীতে তাদের ব্যস্ততার ফাকে একটু নির্মল নি:শ্বাসের জায়গা পান না কোথাও। ধীরে ধীরে সংকুচিত হযে আসছে নগরবাসীর নির্মল নি:শ্বসের জায়গাগুলো।
অথচ এই সিলেটে একমসয় ছিল বড় বড় দিঘি, একাধিক পার্ক এবং বিশাল বিশাল উদ্যান। কিন্তু কালের বিবর্তনে হারিয়ে গেছে নগরবাসীর চিত্ত বিনোদন ও অবসর যাপনের স্থান সমূহ। যার ফলে সিলেট নগরী এখন ইট কাঁচের খাচায় পরিণত হতে চলেছে।
একটি সময় ছিল যখন নগরবাসী তাদের শত কর্মব্যস্ততার মাঝেও নির্মম নি:শ্বাস নিতে পারতেন, অবসরে প্রকৃতির সাথে একাত্ম হতে পারতেন। কেননা তখন সিলেটবাসীর জন্য ছিল তেমনি অসংখ্য পরিবেশ।
নগরীর মজুমদারীর মজুমদার বাড়ীর দিঘিতে সারাদিনের ব্যস্ততা শেষে ক্লান্ত শরীরে বৈকালিক আড্ডায় আসতেন অনেকে। বুক ভরে শ্বাস নিতেন। কেউ কেউ আসতেন শীবগঞ্জের রাজবাড়ীর দিঘিতে। তাছাড়া রামের দিঘি, লাল দিঘি, ধোপা দিঘি, নগরীর মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় মাছু দিঘি, কাষ্টঘরে অবস্থিত কাষ্টঘর দিঘি, সুপানিঘাটে অবস্থিত সুপানিঘাট দিঘি, টিলাঘরে অবস্থিত এমসি কলেজ দিঘি, কাজল শাহে অবস্থিত কজলশাহ দিঘি, চালিবন্দরে অবস্থিত চালিবন্দর শ্মশানঘাট দিঘি, ক্বীন ব্রিজের উত্তর পাশে অবস্থিত বাঁকা দিঘি, জল্লার পারের জল্রার হা্ওর, আখালিয়ার তেরি হাওর, ওসমানী উদ্যান এবং জালাবাদ উদ্যান ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম। কিন্তু অবাক করার মত বিষয় হচ্ছে এই দিঘির শহরে আজ একটি দিঘির অস্তিত্বই নেই।
ইতহাসের ধূসর অতীতে সাগর থেকে ভেসে ওঠা সাগররিকা আজ একটি যান্ত্রিক নগরীতে পরিণত হয়েছে। কল-কারখানার বজ্র, গাড়ির ধোয়া বতাসের সাথে মিশে পরিবেশকে করছে বিষাক্ত। নগরবাসী আজ বিশুদ্ধ প্রাকৃতিক পরিবেশ কোথাও খুঁজে পাচ্ছেন না। অথচ এই সিলেটের প্রাকৃতিক সৈন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সিলেটকে সম্বোধন করেছিলেন সুন্দরী শ্রীভূমি বলে। তাই আজ সিলেটবাসীর একান্ত প্রত্যাশা এই সুন্দরী শ্রীভূমির হারানো সৈন্দর্য যেন আবার ফিরে আসে এবং ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো যেন কালের স্রোতে হারিয়ে না যায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।