কখনো কি পড়বে মনে
অফিসে বসে আছি। মিটিং হওয়ার কথা ছিল। বসের ইমেইল-রানিং লেট। হঠাৎ করেই অনেক বছর আগের কিছু কথা মনে পড়ে গেল। আরিচা থেকে ফেরিতে করে দৌলতদিয়া যাচ্ছি।
তখন ঐ পথেই খুলনা যাওয়া যেত। অনেক রাত। বরষার আকাশ। মেঘ আর জোসনা লুকোচুরি খেলছে। এসময়টাতে শীত আসি আসি করছে।
অস্বাভাবিক একটা নিরবতা। বেশিরভাগ মানুষ শাল গায়ে ঘোরাফেরা করছে। আমি ডেকে দাড়িয়ে। উঠতে উঠতে একবারে উপরের ডেকে উঠে এলাম। সারি সারি বাসগুলো এমন করে দাড়িয়ে আছে-উপর থেকে আমার মনে হচ্ছিল বিশাল বিশাল ইটের একটা দেয়াল।
আমার শীত লাগছিল না। তবুও আমি পায়চারি করছিলাম। হঠাৎ মনে হল ডেকের ঠিক পাশে একটা একটা বাচ্চা শুয়ে আছে। আমার মাথা খারাপ হওয়ার জোগাড়। বাচ্চাটা একটুখানি গড়ালেই রেলিংয়ের কাছে চলে আসবে।
আমি বাচ্চাটার কাছে গিয়ে দাড়ালাম। ডেকের টিমটিমে আলো যেন বাচ্চাটার উষ্নতা দিতে চাইছে। আমার মনে হল আমি দাড়িয়ে আছি অনন্ত কাল ধরে। একবার মনে হলে বাচ্চাটা কি মরে আছে। তাহলেত ছোয়া যাবে না।
আমার উচিত কোন ষ্টাফকে খুজে বের করা। হয়ত কোন পুলিশ থাকলে ডেকে আনা। আবার মনে হল - না না- তা কেন হবে। কিন্তু আমি নড়তেও পারছিলাম না। হঠাৎ পাশ থেকে একটা দরজা দুম করে খুলে গেল।
আমি একটু পিছিয়ে গেলাম। একটু চমকেও গেলাম মনে হয়। মনে হলে একজন নারীকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দেয়া হলো। নারীটি তার আচল ঠিক করছে আর বলছে - আরো পাচ ট্যাহা দেন। আরো পাচ....বলতে বলতে বাচ্চাটির কাছে চলে এল।
বাচচাটিকে এমন করে কোলে তুলে নিল যেন হারিয়ে যাওয়া এই জিনিসটা সে অনেক খোজার পর পেল। বাচ্চাটাকে তুলে নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বলল-কইরবেন, কুড়ি ট্যাহা.........
"ঠোঁটের দুধারে হাসি জমে গেছে! কোন শব্দ নেই।
এতোসব অনুভব; এর কোন প্রয়োজন আছে?"
আমার বস। রিপোর্টের কথা বললই না। আজকে খুবই খুশি।
কারন ওর কুকুরের এমআরআই করিয়েছে। যে রোগটার কথা ভাবছিল-সেটা ধরা পড়েনি। এমআরআই করতে কুত্তা-হাসপাতাল নিয়েছে চারশ ডলার.........।
"আমি শুধু শ্বেতজোনাকির
করবীনিষীক্ত লাশ বুকে নিয়ে একা শুয়ে থাকি
ঘোর বৃষ্টিপাতে, তার দেহ থেকে জীবিত পাখার
রঙের ধারার মধ্যে উঠে যায়। "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।