আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজ আমি পর্তুগালের সাপোর্টার থাকবো (মাইন্ড কইরেন না)

এভাবে আর চলতে দেয়া যায়না...

একদিক দিয়ে দেখলে ম্যাচটা শুধুই আনুষ্ঠানিকতার। ব্রাজিল আর পর্তুগাল—দুই দলেরই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত। পর্তুগালের যেটুকু অনিশ্চয়তা, সেটি শুধুই কাগুজে হিসাব। ‘গ্রুপ অব ডেথ’-এর সবচেয়ে প্রার্থিত ম্যাচটি তাই হয়ে গেছে আনুষ্ঠানিকতা পালনের। শুধুই আনুষ্ঠানিকতা? মোটেও নয়।

ব্রাজিল আর পর্তুগাল মুখোমুখি হচ্ছে বলেই ম্যাচটি দুই দলের খেলোয়াড়দের জন্যই অহংবোধের লড়াই। দুই দেশের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ইতিহাস জড়িয়ে আছে শেকড়ের মতো। ব্রাজিল তো একটা দীর্ঘ সময় ধরে পর্তুগিজ উপনিবেশ ছিল। পর্তুগিজ ভাষা আর সংস্কৃতিকেও দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি আপন করে নিয়েছে। ঔপনিবেশিক শক্তি হিসেবে শুধু ধনসম্পদই লুটে নিয়ে যায়নি পর্তুগাল, ব্রাজিলের সাংস্কৃতিক উপাদান মিশেছে তারও বাতাসে।

সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো, ফুটবলের ধরন-ধারণে এই দুই দেশের অদ্ভুত মিল। এ কারণেই পর্তুগালকে বলা হয় ‘ইউরোপের ব্রাজিল’। গুরুত্বহীন হয়ে পড়া এই ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্ব সম্ভবত একটাই—এ ম্যাচটাই ঠিক করে দেবে ‘জি’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হবে কে। তাই অহংবোধের লড়াইয়ে যোগ হচ্ছে বাড়তি মাত্রা। কার্লোস দুঙ্গা তাই ডিয়েগো ম্যারাডোনার পথে হাঁটবেন না।

ব্রাজিলের এই দলের প্রথম একাদশে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন থাকছে না। আগের ম্যাচে লাল কার্ড দেখার কারণে কাকা এই ম্যাচ খেলতে পারছেন না। ফলে হুলিও ব্যাপটিস্টা আজ সুযোগ পাচ্ছেন নিজেকে প্রমাণের। প্রথম দুই ম্যাচে দুই গোল করা এলানো গত ম্যাচে মাঠ ছেড়েছেন স্ট্রেচারে শুয়ে। এই ম্যাচে তাঁকে নামানোর ঝুঁকি নিচ্ছে না ব্রাজিল।

এলানোর বদলে সুযোগ পেতে পারেন দানি আলভেজ, যদিও আলভেজ ডিফেন্ডার এবং এলানো মিডফিল্ডার। পরিবর্তনটা স্বাভাবিকভাবেই পাল্টাবে দুঙ্গার ছকও। ব্রাজিল যে এই ম্যাচে মরণপণ ঝাঁপিয়ে লড়াই করবে, সেটি অধিনায়ক লুসিও পরিষ্কার করে দিয়েছেন, ‘ব্রাজিল দলে আমরা যারা খেলি, তাদের দায়িত্বই হলো প্রতিটা ম্যাচ জেতা। ব্রাজিলের এই জার্সির সম্মান আর ব্রাজিলের সাধারণ মানুষের গৌরব রক্ষার জন্য আমরা খেলি। প্রতিপক্ষ নিয়ে মাথা ঘামাই না।

’ আগের ম্যাচে উত্তর কোরিয়াকে গোলবন্যায় ভাসিয়ে দেওয়া পর্তুগালও দলে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনবে না। পর্তুগালকে এই ম্যাচের জন্য তাতিয়ে তুলছে দুই দলের সর্বশেষ লড়াইয়ে তাদের নাকানিচুবানি খাওয়ার স্মৃতিও। ২০০৮ সালের নভেম্বরের ওই প্রীতি ম্যাচে পর্তুগালকে অপ্রীতিকর এক অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছিল ব্রাজিল। ৬-২ গোলে ওই ম্যাচে হেরে যাওয়ার স্মৃতি যে ভোলেননি, থিয়াগো মেন্ডেজ সেটাই জানিয়ে দিলেন, ‘আমাদের জন্য সেটি ছিল বিশাল এক পরাজয়। এখন আমাদের সামনে সুযোগ এসেছে জেতার।

’ তবে কি সরাসরি প্রতিশোধের হুমকিই দিলেন গত ম্যাচে জোড়া গোল করা পর্তুগিজ মিডফিল্ডার? ‘না, এটাকে প্রতিশোধ বলা যাবে না। আমরা দুই দলই আসলে অসাধারণ। দুই দলই চাইবে ম্যাচটা জিতে পরের রাউন্ডে যেতে। এটাকে প্রতিশোধ না দেখে এভাবেই দেখা উচিত,’ থিয়াগোর উত্তর। তবে চাইলেও ৬-২-এর স্মৃতি মুছে ফেলা যাচ্ছে না।

কোচ কার্লোস কুইরোজকে সেটি আরও বেশি মাথায় রাখতে হচ্ছে কৌশলগত কারণে, ‘এই ম্যাচে আমাদের অবশ্যই ব্রাজিলকে বেশি গোলের সুযোগ দেওয়া যাবে না। ’ তা তো বটেই। ব্রাজিলের কাছে পর্তুগাল যদি ৫-০ গোলে হেরে যায়, আর উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে আইভরিকোস্ট যদি সমান ব্যবধানে জেতে, ঘানার সঙ্গী হয়ে আরেকটি আফ্রিকান দল যাবে দ্বিতীয় রাউন্ডে। আইভরিকোস্টের সামনে পাহাড় ডিঙানোর চ্যালেঞ্জ। দ্রগবা-কালুদের কথা শুনে মনে হচ্ছে, উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি তাঁরা নিয়েছেন সম্মানজনক প্রস্থানের ম্যাচ হিসেবেই।

এএফপি, রয়টার্স। http://www.mstechnologybd.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।