সৃস্টির সেরা মানুষ তার অতি ক্ষুদ্র জ্ঞানের সীমাবদ্ধতায় এ সুবিশাল মহাবিশ্বের অসীম অজানার কণাতম রহস্যও ভেদ করতে না পারার চরম ব্যর্থতায় স্রস্টাকেই অস্বীকার করার স্পর্ধা দেখায়!!!
- ‘দোস্ত, কি করছিস?’
-‘এইতো, ধানমন্ডিতে। শর্মীর সাথে শর্মা হাউসে শর্মা খাই। ’
-‘দোস্ত, তোর ব্লাড গ্রুপ ‘বি পজেটিভ’ না?’
-‘হ্যাঁ। কেন?’
-‘দোস্ত আমার দুলাভাই বাইক অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। একটু তাড়াতাড়ি ট্রমায় চলে আয় প্লিজ।
ধানমন্ডি থেকেতো খুব একটা দূরে না। ’
- ‘ওরে বাবা। তুই তো জানিসই আমি ইনজেকশন কতটা ভয় পাই আর তাছাড়া আমি বরাবরই আন্ডারওয়েট। তাই আমি ব্লাড দিতে গেলেও ডাক্তাররা কখনোই আমার ব্লাড নিতে চায়না। তুই চিন্তা করিস না।
আমার এক ফ্রেন্ড আছে যার ব্লাড গ্রুপ ‘বি পজেটিভ’; আমি এক্ষুনি ওকে ফোন দিয়ে তোর নাম্বার দিচ্ছি যেন তোর সাথে যোগাযোগ করে। ’
ফাহাদের দুটো ব্যাপারে বন্ধু মহলে বেশ সুনাম (নাকি দুর্নাম) ছিল, এক. মেয়ে পটানো আর দুই. চাপা ছাড়া! তাই ফাহাদের চাপার উপর ভরসা না করে আমি বুয়েট বাঁধনের সহ-সভাপতি বন্ধু রাশেদের সাথে দেখা করবার জন্য আমার সাইকেলের গতি দ্রুত বাড়িয়ে দিলাম। সে যাত্রায় বুয়েটের দুই ছোট ভাইয়ের কল্যাণে দুলাভাইকে বাঁচাতে পেরেছিলাম।
সেদিনের পর ফাহাদের সাথে অনেকদিন কোন যোগাযোগ হয়নি। এমনকি টুম্পার সাথে ওর বিয়ের দাওয়াত পেলেও শর্মীর প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে সেই বিয়েতেও যাওয়া হয়নি।
সেদিনের সেই ফোনালাপটি প্রায় ভুলতেই বসেছিলাম যদি না গত মঙ্গলবার হঠাৎ করেই অপরিচিত নাম্বার থেকে আমার কাছে কল আসতো।
- ‘শাফিন কেমন আছিস? আমি ফাহাদ। ’
-‘আরে ফাহাদ! এতদিন পর! কেমন আছিস? টুম্পা কেমন আছে?’
-‘ভালো নাই দোস্ত! টুম্পা অফিস থেকে আসার সময় গতকাল গাড়ি অ্যাক্সিডেন্ট করেছে। এখন ইউনাইটেডে আছে। তোর ব্লাড গ্রুপ ‘এ পজেটিভ’ না?’
- ‘হুম’
- ‘তুইতো সুবাস্তু নজর ভ্যালীতে থাকিস।
তোর বাসা থেকে একদম কাছে। টুম্পার ব্লাড গ্রুপও ‘এ পজেটিভ’, একটু কষ্ট করে চলে আয় না। ’
-‘অবশ্যই আসবো। কিন্তু দোস্ত, আমিতো গত মাসেই এক দূর সম্পর্কের আত্মীয়কে রক্ত দিয়েছি। তুইতো জানিসই, চার মাস পর পর রক্ত দিতে হয়।
’
বন্ধু মহলে চাপাবাজ হিসেবে সুনাম কিংবা দুর্নাম কোনটাই আমার কখনোই ছিলনা এবং আমি নিজেও বিশ্বাস করতাম, মিথ্যা বলবার ক্ষেত্রে আমার মত আনাড়ি দ্বিতীয়টি আর নেই। সেই আমিই যখন বন্ধু ফাহাদকে অবলীলায় এ ভয়ংকর মিথ্যেটি বলে ফেললাম, তখন নিজের কাছেই নিজেকে খুব অদ্ভুত আর অপরিচিত লাগছিল।
-০-
"ছোট গল্প আর বড় গল্পের পর এবার অণু গল্প! রস-আলো'য় প্রায় সময়ই রুশ ছোট গল্পগুলো পড়তাম আর ভাবতাম, এত অদ্ভূত সুন্দর ছোট গল্প কিভাবে লেখা সম্ভব!!! যাই হোক, এ অণু গল্পটি একদম হুট করেই কোনরকম পূর্ব-প্রস্তুতি ছাড়াই আধা ঘন্টাতেই লিখে ফেললাম !"
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।