আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাম মুছে কি অপরাধ মুছা যায় ?



১। নটরডেম কলেজ দেশের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ । দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহনকারী ও আত্মদানকারী অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কলেজের ছাত্র ছিল । নটরডেম কলেজ থেকে একটু দূরে ফকিরাপুল থেকে শুরু করে মগবাজার পর্যন্ত ছিল রাজাকারদের আস্তানা ও জল্লাদখানা । নিজামী,মুজাহিদ,রাজাকার প্রধান গোলাম আযমের জল্লাদখানাগুলো এই এলাকাতেই অবস্থিত ।

স্বাধীনতার পক্ষের সাধারন জনগন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা ও আশ্রয়দানকারী মানুষের প্রতি তারা ছিল খুবই নিষ্টুর । সারা ঢাকা শহরে বসবাসকারী মুক্তিকামী মানূষ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তাকারীদের ধরে ধরে এ এলাকাতেই জবাই করা হতো । আর মুক্তিযোদ্ধাদের ধরতে পারলে তুলে দেয়া হতো পাক আর্মির হাতে, তাদের নিয়ে যাওয়া হতো ক্যান্টনমেন্টে । এমনই দুজন মুক্তিকামী সাধারনমানুষ হলেন ডাঃ আজহারুল হক ও ডাঃ হুমায়ুন কবীর । ১৫ই নভেম্বর ১৯৭১ তাদের হাতিরপুলস্থ বাসা থেকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় ।

এরপর হত্যা করে নটরডেম কলেজের দক্ষিন-পুর্বে পুলের (যে পুলটি এখন আর নেই ) নীচে ফেলে দেয়া হয় । ১৬ ই নভেম্বর ১৯৭১ তাদের লাশ পাওয়া যায় । তাদের স্মৃতি রক্ষার্থে একটি নাম ফলক স্থাপন করা হয় তার পাশেই নটরডেম কলেজের দেয়াল সংলগ্ন । সৃতিফলকটিতে ঘাতকের নাম ছিল । কে বা কারা অত্যন্ত দক্ষ হাতে ঘাতকের নামটি মুছে ফেলে ।

ব্যস্ততম এলাকা মতিঝিল যাওয়ার পথে ঘাতকের নামটি যেন কেঊ পড়ে না ফেলে তার জন্যই কি এ ব্যবস্থা !!! ২। পুরোনো পত্রিকার একটি খবরের খুঁজে সেদিন গিয়েছিলাম ন্যাশনাল আর্কাইভে , আঁগারগাঁওয়ে । হঠাত করে ১৯৭১ সালে প্রকাশিত ঘাতক রাজাকার বাহিনীর মুখপাত্র দৈনিক সংগ্রাম পত্রিকাটা পড়ে দেখতে ইচ্ছে হল । তখনই সদস্যফরম পুরন করে ভিতরে গিয়ে দেখি ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সংখ্যাগুলো নেই । অথচ অন্য পত্রিকাগুলোর ঐ সময়ের সংখ্যাগুলো ঠিকই আছে ।

এর কারন কী ,কে সরিয়েছে ,এটা কি কোন অপরাধের পর্যায়ে পড়ে ? বাংলাদেশ দন্ডবিধির কোন এক ধারায় আছে যে , অপরাধের আলামত ধ্বংস করাও অপরাধ । এসব কি সেই ধারার মধ্যে পড়ে ?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।