বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে গেছে। গ্রামেগঞ্জে, রাস্তাঘাটে, বাসগাড়িতে, ট্রাকে, প্রাইভেট কারে, বাসাবাড়িতে, ওভারব্রিজে- সর্বত্রই বাংলাদেশের পতাকার পাশাপাশি, বিশ্বকাপ খেলুড়ে অন্যান্য দেশের পতাকার পাশাপাশি সগর্বে উড়ছে আর্জেন্টিনার সবুজ-সাদা পতাকা। একটি দুটি নয়। হাজার হাজার, লাখ লাখ। এর কারণ কি! অনেকেই বলেন- মারাদোনা।
আর্জেন্টিনার ফুটবলের কিংবদন্তি। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে তিনি যে জাদু দেখিয়েছেন তার রেশ এখনও বাংলাদেশীদের মনের গভীরে দাগ কেটে আছে। ওই বিশ্বকাপের আগে গ্রামের অনেক মানুষই জানতেন না ফুটবলের বিশ্বকাপ হয়। কিন্তু ধীরে ধীরে টেলিভিশন চ্যানেলের বিস্তারের মাধ্যমে আর সরাসরি খেলা দেখানোর প্রবণতা বৃদ্ধির কারণে মানুষ চিনতে শুরু করে বিশ্বকে মাতানো ফুটবলারদের সম্পর্কে। তাছাড়া ওই সময় মারাদোনাকে নিয়ে অজপাড়াগায়ে পর্যন্ত পৌঁছে যায় ভিউকার্ড, পোস্টার।
তাতে নানা ভঙ্গিতে মারাদোনার ছবি। ফুটবল খেলার প্রচারের সেই বিস্তারের যুগে বাংলাদেশের মানুষ প্রথমেই চিনতে শেখেন মারাদোনাকে। সে জন্যই তার প্রতি অন্যরকম ভালবাসা, ভাল লাগা বাড়তে থাকে। তিনি হয়ে ওঠেন শ্রদ্ধার পাত্র। তাই তার নামেই এবার আর্জেন্টিনার সমর্থক তুলনামূলক বিচারে দ্বিগুণ।
কিন্তু সে খবর মারাদোনা যদি জানতেন...! তিনি যদি জানতেন আমিনবাজারে পতাকার রাজধানীর কথা!
মারাদোনার পাশে এবার আছেন ঝাঁঝালো ফুটবলার মেসি। তাদেরকে ঘিরে বিশ্ববাসী ফের স্বপ্ন দেখছে এবার কাপটা আর্জেন্টিনার ঘরে যাক। ১৯৯০ বিশ্বকাপে মারাদোনা কাপ হাতছাড়া হওয়ার পর যেভাবে কেঁদেছেন তাতে আবেগপ্রবণ বাংলাদেশী সহ সাধারণ মানুষের মাঝে তার জন্য একটি ভালবাসার সফটকর্নার সৃষ্টি হয়েছে। তারা চাইছেন এবার ক্যাপটেন হিসেবে নয় কোচ হিসেবে কাপটা উঠুক মারাদোনার হাতে। তার চোখে ১৯৯০তে যে কান্না তারা দেখেছিলেন তা হাসি হয়ে ফুটুক।
একথা মারাদোনা যদি জানতেন! এ কথা মেসি যদি জানতেন!
মারাদোনার ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আপত্তি অনেকের। কিন্তু সেটা তার একান্তই ব্যক্তিগত। তিনি কি করলেন বা কি না করলেন সেটা এক জিনিস, আর ফুটবল আরেক জিনিস। যখন বাংলাদেশের ভক্তরা তার দিকে তাকান তখন তারা একজন ফুটবলার মারাদোনার দিকে তাকান। একজন ফুটবলার মারাদোনার কাছে তাদের চাওয়া-পাওয়া।
সে কথা মারাদোনা যদি জানতেন!
বাংলাদেশে আর্জেন্টিনার যে পতাকা টানানো হয়েছে তাতে মেসির একটি প্রতিকৃতি আঁকা রয়েছে। এর অর্থ তারা মেসির প্রতি ভীষণ দুর্বল হয়ে পড়েছেন। মেসি ইউরোপে লীগ খেলায় যে দাপট দেখিয়েছেন তা বিশ্বকাপের মাঠে দেখাতে পারবেন বলে আশাবাদী বাংলাদেশের মানুষ। আর যদি তিনি ইউরোপের খেলাটা খেলতে পারেন তাহলে কাপ এবার আর্জেন্টিনার- এমন আশা আর্জেন্টাইনভক্তদের। সে কথা মেসি যদি জানতেন!
আর্জেন্টিনার প্রথম খেলা আজ।
এদিন আর্জেন্টিনা যদি একটিও গোল করতে পারে তাহলে সে সময় ঢাকা শহরে তো বটেই পুরো বাংলাদেশে একটি বিস্ফোরণ ঘটবে। না, বোমা নয়। হর্ষধ্বনির বিস্ফোরণ। হয়তো কেঁপে উঠবে পুরো ঢাকা শহর। এ কথা মারাদোনা যদি জানতেন! যদি জানতেন মেসি!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।