গণভবনে বিরল বিয়ে
ঢাকা, ৯ জুন, ফোকাস বাংলা নিউজ: বিরল এক ঘটনার জন্ম দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নিমতলীর ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে স্বজন হারানো রুনা-রতœা ও আসমাকে আপন কন্যার মর্যাদায় বিয়ে দিয়েছেন তিনি। গণভবনের নবনির্মিত ব্যাংকোয়েট হলে বুধবার রাত ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক তদারকিতে রুনা-জামিল, রতœা-সুমন এবং আসমা-আলমগীরের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হয়। গণভবনে এটিই প্রথম কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান।
বিয়ে পড়ানোর জন্য পুরান ঢাকার হোসনী দালান ইমামবাড়া থেকে দু'জন মৌলভী আনা হয়।
এরা হলেন- সৈয়দ রেজা হোসেন ও নকী ইমাম। রুনা-জামিলের বিয়ের দেনমোহর ১ লাখ ১৪ হাজার টাকা, রতœা-সুমনের ৩ লাখ টাকা এবং আসমা-আলমগীরের দেনমোহর ২ লাখ টাকা ধরা হয়েছে। তিন কনের উকিল বাবা হয়েছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল আজিজ, হাজী মো. সেলিম ও সাংসদ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন।
রাত পৌনে আটটার দিকে বধূবেশে গণভবনে প্রবেশ করে রুনা, রতœা ও আসমা। এর কিছু সময় পর ৩ বর জামিল, সুমন এবং আলমগীর নীল-সবুজ পাগড়ী পড়ে গণভবনে আসে।
গণভবনে আসার পর তাদের বর জামিল, সুমন ও আলমগীরকে ঐতিহ্য অনুযায়ী শরবত খাওয়ানো হয়।
পুরান ঢাকা থেকে ৮০টি গাড়িতে করে আসেন বরযাত্রীরা। এ সময় প্রধানমন্ত্রী অতিথিদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। বরযাত্রী হয়ে আসেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ও সাবেক সাংসদ হাজী মো. সেলিম। ফিতা কেটে গণভবনে প্রবেশ করেন তারা।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে তিন কনেকে বিয়ের গহনা পরিয়ে দেন। প্রত্যেককে আট ভরি করে গহনা দেওয়া হয়। তাদেরকে ধানমণ্ডির পারসোনা বিউটি পারলার থেকে সাজিয়ে আনা হয়। তিন কনে পরেছেন একই রকমের লাল জরির বেনারসি শাড়ি।
গত ৩ জুন বৃহস্পতিবার অগ্নিকান্ডের দিন ছিল রুনার বাগদান আর ২২ জুন তার বোন রতœার বিয়ে হওয়ার কথা ছিল।
কিন্তু পুরান ঢাকার নিমতলীতে সংঘটিত স্মরণকালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে মা-বাবাসহ নিকটাত্মীয়দের হারান দুই বোন রুনা ও রতœা। অপরদিকে মা, নানি আর ভাতিজিকে হারিয়ে একা হয়ে পড়েন আসমা। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে বাবা এবং ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে মৃত্যুর সাথে লড়ছেন আসমার বোন। অগ্নিকান্ডের পরদিন শুক্রবার বিয়ের দিন ধার্য্য ছিল আসমার।
ওই দুর্ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিঃস্ব এই দুই বোনের বিয়ের দায়িত্ব নেন।
পরে বুধবার আসমার দুর্ভাগ্যের কথা জানতে পেরে তারও বিয়ের ব্যবস্থা করেন তিনি।
রাজধানীর নিমতলীতে গত বৃহস্পতিবার রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে দুই বোন রতœা-রুনার পরিবারের সদস্যসহ ১১৯ জন লোক প্রাণ হারায়।
এর আগে বুধবার জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আজ আমার তিন মেয়েকে বিয়ে দিবো। একজন মা হিসেবে কন্যাদের বিদায় দিতে গিয়ে যা যা করার আমি সবই করেছি। ওদের শাড়ি-গহনার ব্যবস্থা হয়েছে।
এখন বাকি ক্রোকারিজ ও ফার্নিচার। তারও ব্যবস্থা হবে। এছাড়াও এক জামাই বেকার আছে। জামাইয়ের জন্য বেসিক ব্যাংকে চাকরির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। বিয়ের পর তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।